--- বিজ্ঞাপন ---

তুরস্কের ড্রোন প্রযুক্তিতে নতুন সংযোজন ‘আকসঙ্গুর’ ড্রোন

0

গত ২০২১ সালে ২০শে অক্টোবর বুধবার তুরস্কের নৌবাহিনীর কাছে আনুষ্ঠানিভাবে একটি ‘আকসঙ্গুর’ মাল্টিরোল এণ্ড কমব্যাট ড্রোন (ইউএভি) হস্তান্তর করে। আর এর মাধ্যমে মুলত তুর্কী এ্যারোস্পেস ইন্ডাস্ট্রিজ (টিআইএ) এর তৈরি নতুন উচ্চ প্রযুক্তির ‘আকসঙ্গুর’ হেভী কমব্যাট ড্রোন (ইউএভি) তার নতুন যাত্রা শুরু করল। বর্তমানে বিশ্বের বুকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইসরাইলের পাশাপাশি তুরস্ক তার নিজস্ব প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনী সক্ষমাকে কাজে লাগিয়ে বেশকিছু নতুন সিরিজের হেভী কমব্যাট ড্রোন সার্ভিসে এনে বিশ্বকে চমকে দিয়েছে।

তুরস্কের একেবারে নতুন প্রযুক্তির ‘আকসঙ্গুর’ হেভী কমব্যাট ড্রোন (ইউএভি) নিয়ে এক দশক আগেই কাজ শুরু করলেও তুর্কী এ্যারোস্পেস ইন্ডাস্ট্রিজ (টিআইএ) এর প্রথম সফল ফ্লাইট টেস্ট সম্পন্ন করে ২০১৯ সালের ২০শে মার্চ। তবে মাত্র দুই বছরে ৬০ এর কাছাকাছি ফ্লাইট টেস্ট পরীক্ষা ও গবেষণা শেষে চূড়ান্তভাবে তুরস্কের নৌবাহিনীর হাতে তুলে দেয়া হলো। তাছাড়া ২০২০ সাল পর্যন্ত মোট ৬টি প্রটোটাইপ কপি তৈরি করা হলেও সকল পরীক্ষা সম্পন্ন করে আপাতত একটি ‘আকসঙ্গুর’ মাল্টিরোল এণ্ড কমব্যাট ড্রোন (ইউএভি) এই প্রথম বার সার্ভিসে এসেছে।

‘আকসুঙ্গুর’ ড্রোন (ইউএভি) হচ্ছে একটি মিডিয়াম-আল্টিটিউট লং-ইনডিউরেন্স (এমএএলই) ড্রোন। যা যুদ্ধক্ষেত্রে কমব্যাট মিশনের পাশাপাশি মাল্টিরোল হিসেবে ইন্টালিজেন্স, সার্ভেলাইন্স এণ্ড রিকর্নিয়েন্স অপারেশনের জন্য বিশেষভাবে ডিজাইন করা হয়েছে। এটিকে মুলত স্যাটালাইট কমিউনিকেশন সিস্টেমের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করা হয়। গোপন কমাণ্ড সেন্টার থেকে একজন অপারেটর এটিকে নিয়ন্ত্রন করেন। তবে কোন কারণে কমাণ্ড সেন্টারের সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন বিচ্ছিন্ন হয়ে গেলে এটি তার নিজস্ব উচ্চ প্রযুক্তির কম্পিউটার সিস্টেমের নির্দেশে কমব্যাট মিশন শেষে করে নির্ধারিত বেসে ফিরে আসতে পারবে।

চলতি ২০২১ সালের ১৭ই সেপ্টেম্বর তুর্কী এ্যারোস্পেস ইন্ডাস্ট্রিজ (টিআইএ) তাদের ‘আকসুঙ্গুর’ কমব্যাট ড্রোন (ইউএভি) ১২টি স্মার্ট মাইক্রো মিউনেশন (এমএএম-এল বোম্বস) নিয়ে আকাশে টানা ২৮ ঘন্টা পরীক্ষামুলক উড্ডয়ন সম্পন্ন করে। এই সময়ে ড্রোনটি আকাশে ২০ হাজার ফিট উচ্চতায় ২৫০ কেজি পেলোড নিয়ে মিশন শেষ করে। তাছাড়া গত ২রা সেপ্টম্বর ‘আকসুঙ্গুর’ ড্রোন তার ৫৯ তম ফ্লাইট টেস্ট মিশনে একটানা ৪৯ ঘন্টা আকাশে উড্ডয়ণ করে আগের সকল রেকর্ড ভেঙ্গে দিয়ে এক নতুন ইতিহাস রচনা করে।

তুরস্কের তৈরি আকসুঙ্গুর মাল্টিরোল ড্রোনের (ইউএভি) এর দৈর্ঘ্য ১২ মিটার এবং উইনস্প্যান ২৮ মিটার এবং উচ্চতা ৩ মিটার। সম্পূর্ণ খালি অবস্থায় এর ওজন ১,৮০০ কেজি এবং ম্যাক্সিমাম টেক অফ ওয়েট ৩,৩০০ কেজি। শক্তি যোগানোর জন্য এটিতে ২টি টিইআই ৪ সিলিণ্ডারের পিডি-১৭০ লিকুইড কুলড টার্বোচার্জ (১৭০-২২০ হর্স পাওয়ার) ইঞ্জিন ব্যবহার করা হয়েছে। এর ক্রইজ স্পিড ২৫০ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টা এবং এর রেঞ্জ প্রায় ৬,৫০০ কিলোমিটার। এটি আকাশে একটানা ৬০ ঘন্টা পর্যন্ত উড্ডয়ন করতে পারে এবং এটিকে ভূমি থেকে সর্বোচ্চ ৪০ হাজার ফিট উচ্চতায় শত্রু পক্ষের অবস্থানে নজরদারি বা হামলা চালানোর উপযোগী করে ডিজাইন করা হয়েছে।

‘আকসুঙ্গুর’ মাল্টিরোল কমব্যাট (এমএএলই) ড্রোন মোট ৭৫০ কেজি ওজনের অস্ত্র ও মিসাইল নিয়ে কমব্যাট মিশন পরিচালনা করতে পারে। এটি তার ৬টি হার্ড পয়েন্টে রকেটসানের তৈরি সিরিট মিসাইল বহণ করে। তাছাড়া এটি এন্টি সাবমেরিন ওয়ারফার রকেট এবং মেরিটাইম স্টাইকের জন্য ছোট আকারের টর্পেডো বহণ করে। বোম্বস হিসেবে এটিতে স্মার্ট মাইক্রো মিউনেশন এমএএম-এল, এমএএম-সি এর পাশাপাশি তাবির-৮১ এবং তাবির-৮২ লেজার গাইডেন্স কিটস ইন্সটল করা যায়। তাছাড়া প্রিসিয়ন গাইডেন্স কিটস হিসেবে এইচজিকে-৮২/৩ মিউনেশন বহণ করতে সক্ষম। আর ‘আকসঙ্গুর’ মাল্টিরোল ড্রোনে প্রথম বার তাবির সিরিজের লেজার গাইডেন্স কিট ইনস্টল করা হয়েছে।#

আপনার মতামত দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.