--- বিজ্ঞাপন ---

আমেরিকা ১৩৩টি আব্রামস মেইন ব‍্যাটল ট‍্যাংক সৌদিআরবকে হস্তান্তর করেছে

0

সৌদি আরব সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে ১৩৩টি এম১এ২এস আব্রামস মেইন ব‍্যাটল ট‍্যাংকের ডেলিভারি পেয়েছে। সৌদি আরব মুলত ২০১৭ সালে ট্রাম্প প্রশাসনের আমলে নতুন করে ১৩৩টি এম১এ২এস আব্রামস মেইন ব‍্যাটল ট‍্যাংক এবং ২০টি এম৮৮এ১/এ২ হারকিউলেস আর্মোরেড রিকভারি ভিহেকেল কেনার চুক্তি সম্পন্ন করেছিল। আর এই চুক্তির আওতায় সৌদি আরবের মোট ব‍্যয় হয়েছে ১.১৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। তাছাড়া সৌদি আরব খুব সম্ভবত প্রতিটি অত্যাধুনিক এম১এ২এস আব্রামস মেইন ব‍্যাটল ট‍্যাংকের জন্য ৮-৯ মিলিয়ন ডলার ব্যয় করেছে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জেনারেল ডায়নামিক্স ল্যাণ্ড সিস্টেমের ডিজাইনকৃত বিশ্বের সেরা এম১এ২এস আব্রামস মেইন ব‍্যাটল ট‍্যাংকটি লিমা আর্মি ট্যাংক প্লান্টে ম্যানুফ্যাকচারিং করা হয়। নতুন মডেলের আব্রাহাম মেইন ব‍্যাটেল ট‍্যাংকের ডেলিভারি পাওয়ার আগে সৌদি আরবের সেনাবাহিনীর ট্যাংক বহরে মোট ৪৪২ টি আব্রাহাম ট‍্যাংক ছিল। যদিও বিগত ২০১৫ সাল থেকে চলমান ইয়েমেন যুদ্ধে সৌদি আরবের ২০টি এই জাতীয় ট্যাংক ধ্বংস হয়ে যায়।

সে হিসেবে বর্তমানে সৌদি আরবের ট্যাংক বহরে মোট ৫৫৫টি এম১এ২এস আব্রামস মেইন ব‍্যাটল ট‍্যাংক রয়েছে। তাছাড়া দেশটি তার আগে থেকে সার্ভিসে থাকা ৪২২টি এম১এ১ আব্রামস মেইন ব্যাটল ট্যাংকগুলোকে বিলিয়ন ডলার ব্যয় করে নতুন মডেলের এম১এ২এস ক্যাটাগরিতে আপগ্রেড করে নিয়েছে।

সারা বিশ্বে বর্তমানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনী এম১ আব্রামস সিরিজের ৮,৮৪৮টি মেইন ব্যাটল ট্যাংক অপারেট করে। তারপর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ব্যবহারকারী দেশ হিসেবে মিশরের সেনাবাহিনী ১,৩৬০টি এম১ আব্রামস সিরিজের মেইন ব্যাটল ট্যাংক অপারেট করে। এখনে প্রকাশ থাকে যে, মিশর কিন্তু আমেরিকা থেকে লাইসেন্স নিয়ে তার নিজ দেশেই এই ট্যাংক ম্যানুফ্যাকচারিং করে এবং সবগুলো আব্রামস ট্যাংক এখনো পর্যন্ত সার্ভিসে রয়েছে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি এম১এ২এস সিরিজের মেইন ব্যাটল ট্যাংকের উৎপাদন শুরু হয় ১৯৯৯ সালে। ৪ জন ক্রু দ্বারা চালিত এই ট্যাংকের দৈর্ঘ্য ৩২.৪ ফুট, প্রস্থ ১২ ফুট এবং উচ্চতা ৮ফুট। ৬৩ টন ওজনের এম১এ২এস আব্রামস মেইন ব্যাটল ট্যাংকের সর্বোচ্চ গতি প্রতি ঘণ্টায় ৬৮ কিলোমিটার এবং এর রেঞ্জ ৪২৫ কিলোমিটার। শক্তি যোগানোর জন্য এটিতে একটি ১,৫০০ হর্স পাওয়ারের হানিওয়েল এটিজি-১৫০০ মাল্টি-ফুয়েল গ্যাস টারবাইন ইঞ্জিন ব্যবহার করা হয়েছে। এটি একসাথে ১,৯০৯ লিটার জ্বালানী বহন করে এবং গযাস টার্বাইন ইঞ্জিন হওয়ায় এটি ডিজেল, পেট্রোল, গ্যাসোলিন, কেরোসিন, অকটেনসহ রাস্তার যে কোন ধরণের জ্বালানী ব্যবহার করার উপযোগী করে ডিজাইন করা হয়েছে।

অত্যন্ত শক্তিশালী এই ট্যাংকের প্রধান অস্ত্র হিসেবে ১২০ এমএম এম২৫৬এ১ স্মুথবোর মেইন গান ব্যবহার করা হয়েছে। যা কিনা অত্যন্ত কার্যকরভাবে ৪ কিলোমিটার দুরুত্ব পর্যন্ত গোলা ফায়ার করতে সক্ষম। তাছাড়া সেকেন্ডারি অস্ত্র হিসেবে একটি ০.৫০ ক্যালিবারের ১২.৭ এমএম এম২এইচবি হেভি মেশিনগান রয়েছে। তাছাড়া জেনারেল পারপজ বা প্রাথমিক অস্ত্র হিসেবে ১টি ৭.৬২ এমএম এম২৪০ কক্সিল লাইট মেশিনগান এবং ১টি মাউণ্টেড ৭.৬২ এমএম মেশিনগান (১০,৪০০ রাউণ্ড বুলেট) ইন্সটল করা হয়েছে। এর বডিতে শক্তিশালী কম্পোজিট আর্মোর থাকায় এটিকে সাধারণ মানের কোন আরপিজি-৭ রকেট লাঞ্চার বা এটিজিএম দিয়ে বড় ধরণের ক্ষতি করাটা এক কথায় অসম্ভব। তাছাড়া এটিতে উন্নত এ্যালিসন ডিডিএ এক্স-১১০০-৩বি সিরিজের টান্সমিশন ব্যবহার করা হয়েছে।

বর্তমানে সারা বিশ্বে সার্ভিসে থাকা ৩য় ও ৪র্থ প্রজন্মের মেইন ব্যাটল ট্যাংকের মধ্যে এম১ আব্রামস সিরিজের ট্যাংকের যুদ্ধক্ষেত্রে ব্যবহারের অভিজ্ঞতা এবং দক্ষতা সবচেয়ে বেশি বলেই বিবেচনা করা হয়। এটি ১৯৮০ সালে সার্ভিসে আসলেও ১৯৯১ সালে ইরাকের কুয়েত আগ্রাসন (পার্সিয়ান গলফ ওয়ার), আফগানিস্থান ওয়ার, ইরাক ওয়ার, ইজিপ্টিয়ান সিভিল ওয়ার, ইয়েমেন সিভিল ওয়ারে ব্যবহার করা হয়েছে। অবশ্য ইয়েমেন যুদ্ধে সৌদি বাহিনীর ২০টি এই জাতীয় শক্তিশালী ট্যাংক ধ্বংস করেছে ইয়েমেনের হুথী বিদ্রোহীরা। যদিও এখনো পর্যন্ত সরাসরি রাশিয়ার মতো শক্তিশালী দেশের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হয়নি। তবে অতি সাম্প্রতিক সময়ে ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক আগ্রাসনের মোকাবেলায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পোল্যাণ্ডশ পূর্ব ইউরোপের বেশকিছু দেশে কয়েক শতাধিক এই জাতীয় ট্যাংক মোতায়েন করেছে।#

আপনার মতামত দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.