চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট) কর্তৃপক্ষকে ক্যাম্পাস বন্ধ না করে সন্ত্রাস বন্ধ করার আহবান জানিয়েছেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এবং চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন। আজ বুধবার (১৫ জুন ২০২২ইং) সকালে চুয়েট ভিসি অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলমকে মুঠোফোনে ক্যাম্পাস বন্ধে গভীর উদ্বেগ জানিয়ে উপরোক্ত অনুরোধ জানান সুজন।
এসময় তিনি বলেন চুয়েট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি শহরের কাছাকাছি প্রকৃতির অনিন্দ্য সুন্দর পরিবেশে অবস্থিত। এ বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের কারিগর তৈরীর কারখানা। সারাদেশের হাজার হাজার মেধাবী শিক্ষার্থী এখানে পড়াশুনা করে। যারা লেখাপড়া শেষ করে দেশ-বিদেশে অত্যন্ত সফলতার সাথে তাদের জ্ঞানের উন্মেষণ করে যাচ্ছে। অত্যন্ত দুঃখজনক হলেও সত্যি যে মেধা তৈরীর এ কারখানাকে কলুষিত করছে ছাত্র নামধারী কতিপয় সন্ত্রাসী। যারা কিছুদিন পর পর নিজেদের আধিপত্য বিস্তারের লড়াইয়ে অবতীর্ণ হয়ে শিক্ষার পরিবেশকে কলুষিত করছে। গতকালও দুই পক্ষের সংঘর্ষের পর শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ দিয়ে ক্যাম্পাস বন্ধ ঘোষণা করে চুয়েট কর্তৃপক্ষ। যারা ক্যাম্পাসে দলবাজির নামে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ না করে ক্যাম্পাস বন্ধ করা কোনভাবেই কাম্য নয়। মুষ্টিমেয় কয়েকজন সন্ত্রাসীর জন্য হাজার হাজার শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবন ক্ষতিগ্রস্ত করার সিদ্ধান্ত মোটেও গ্রহণযোগ্য নয়। ছাত্রদের হল ত্যাগ নয়, বরং সন্ত্রাসীদের হল ত্যাগে বাধ্য করতে হবে বলে মত প্রকাশ করেন তিনি। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের দায়িত্ব পালন করে আসা সাবেক ছাত্রনেতা সুজন আরো বলেন তিনি নিজেও ছাত্র সংগঠনের সর্বোচ্চ পর্যায়ে আসীন ছিলেন। স্বৈরাচারসহ বিভিন্ন গণতান্ত্রিক আন্দোলন সংগ্রামে সরাসরি জড়িত ছিলেন। ছাত্র সংগঠনের নেতৃত্ব দিতে গিয়ে বিভিন্ন ধরণের বিরূপ পরিস্থিতি মোকাবেলা করেছেন কিন্তু কোন সময় এ ধরণের সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে জড়িত ছিলেন না। যারা নিজেদের স্বার্থ হাসিলের চেষ্ঠায় সংগঠনকে ব্যবহার করে, সস্ত্রাসী কর্মকান্ড করে তারা কখনোই ছাত্র সমাজের প্রতিনিধিত্ব করতে পারে না। এ ঘটনার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের দৃষ্টি আকর্ষন করেন তিনি। এছাড়া প্রকৃত দোষীদের খুঁজে বের করে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় ভিসির প্রতি অনুরোধ জানান সুজন। তিনি আরো বলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তথ্য প্রযুক্তি খাতে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য কোটি কোটি টাকা খরচ করছে। শতকোটি টাকারও বেশি ব্যয়ে চুয়েটে নির্মিত হচ্ছে দেশের বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের প্রথম বিজনেস ইনকিউবেটর। যা বাস্তবায়ন হলে দেশের তথ্য প্রযুক্তির ক্ষেত্রে নতুন দিগন্তের উন্মোচন হবে। ডিজিটাল বাংলাদেশ হিসেবে অগ্রযাত্রার ক্ষেত্রে নতুন মাইলফলক সৃষ্টি হবে। এ অবস্থায় লেখাপড়াকে গুরুত্ব না দিয়ে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড করে শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন বিপন্ন করার অধিকার কারো নেই। এমনিতে করোনাকালীন সময়ে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান করোনার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে ধারাবাহিকভাবে ক্লাস এবং পরীক্ষা কার্যক্রম শুরু করেছে। সে মূহুর্তে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের মধ্য দিয়ে যারা সরকারের শিক্ষা কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত করতে চায় তাদের কোন পরিচয় নেই, তারা সরাসরি সন্ত্রাসী। আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে মারামারি, সশস্ত্র অবস্থান, গোলাগুলি, শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের বাস আটকে রাখা কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। অবিলম্বে এসব সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে শিক্ষাঙ্গন থেকে বিতাড়িত করার অনুরোধ জানান সুজন। চুয়েট ভিসি অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রফিকুল আলম উপরোক্ত বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার আশ্বাস দেন। শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন যাতে কোনভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সে বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সদা সচেষ্ঠ থাকবে বলে সুজনকে অবহিত করেন চুয়েট ভিসি।#
পূর্ববর্তী সংবাদ