--- বিজ্ঞাপন ---

জর্ডান বিমান বাহিনীর জন্য জেট ফাইটার তৈরি করছে আমেরিকা

0

আমেরিকার বাইডেন প্রশাসন এবং কংগ্রেসে অনুমোদনের পর মার্কিন এভিয়েশন জায়ান্ট লকহীড মার্টিন কর্পোরেশন জর্ডান বিমান বাহিনীর জন্য ৮টি নতুন এফ-১৬ ব্লক-৭০ সিরিজের এডভান্স সিঙ্গেল ইঞ্জিন ফাইটার জেট তৈরি শুরু করতে যাচ্ছে। জর্ডানের জন্য নতুন এই ৮টি এফ-১৬ ব্লক-৭০ যুদ্ধবিমান সাউথ ক্যারোলিনার গ্রীনভিলের লকহীড মার্টিনের ম্যানুফ্যাকচারিং প্লান্টে তৈরি করা হবে। নিদিষ্ট মেয়াদে পার্টস সাপ্লাই, লজিস্টিক সাপোর্ট, ওয়েপন্স প্যাকেজ (এআইএম-১২০ এডভান্স বিভিআর মিসাইলসহ) এর চুক্তিমূল্য খুব সম্ভবত ২.১ বিলিয়ন ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে।

বর্তমানে মার্কিন লকহীড মার্কিন কর্পোরেশনের তৈরি চতুর্থ প্রজন্মের একেবারে সর্বশেষ সিরিজের এফ-১৬ ভাইপার ব্লক-৭০/৭২ এর সার্ভিস লাইফ টাইম ধরা হয়েছে ২০৭২ সাল পর্যন্ত। অর্থ্যাৎ এপিজি-৮৩ এইএসএ রাডার সমৃদ্ধ এফ-১৬ ব্লক ৭২ জেট ফাইটার আগামী চার দশক পর্যন্ত আকাশে রাজত্ব করে যেতে পারে তাতে সন্দেহের কোন অবকাশ থাকে না।

এদিকে আবার এফ-১৬ ব্লক-৬০ সিরিজের যুদ্ধবিমান কিন্তু বিশেষভাবে তৈরি করা হয় মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতের জন্য। এই ব্লক-৬০ তে আমিরাতের মোট বিনিয়োগ ৩.০০ বিলিয়ন ডলার এবং মার্কিন বিমান বাহিনী যে এফ-১৬ জেট ফাইটার রয়েছে তার চেয়ে আরো অত্যাধুনিক প্রযুক্তিতে তৈরি করা হয় এফ-১৬ ব্লক-৬০ এর জেট ফাইটারগুলো। আর এই প্রডাকশন লাইনে তৈরিকৃত এফ-১৬ এর পুরোটাই ব্যাবহার করে সংযুক্ত আরব আমিরাত।

তাছাড়া প্রাট এণ্ড হুইটনী এফ-১০০-পিডাব্লিউ-২২৯ কিংবা জেনারেল ইলেক্ট্রিক এফ-১১০-জিই-১২৯ আফটার টার্বোফ্যান ইঞ্জিন সমৃদ্ধ সর্বশেষ সিরিজের এফ-১৬ ব্লক ৭২ এর পার ইউনিট কস্ট আনুমানিক ১২০ মিলিয়ন ডলার (মিসাইল, ওয়েপন্স, ট্রেনিং, মেইনটেনেন্স প্যাকেজসহ) পর্যন্ত হতে পারে। বর্তমান যুগের আধুনিক এফ-১৬ এর অন্যতম অস্ত্র হলো মার্কিন রেইথন কোম্পানির ১৬০ কিলোমিটার রেঞ্জের এআইএম-১২০সি/ডি (বিভিআর) এডভান্স মিডিয়াম রেঞ্জ এয়ার টু এয়ার মিসাইল (এএমআরএএএম) এবং তার পাশাপাশি রয়েছে এ আই এম-৯ সাইডউইণ্ডার ও এআইএম-৭ স্প্যারো। আবার গ্রাউণ্ড এ্যাটাক ফ্যাসালিটির জন্য এজিএম-৮৮/১৫০ এয়ার টু সারফেস মিসাইল এবং এন্টিশীপ মিসাইল হিসেবে এজিএম-৮৪ হারপুন মিসাইল ব্যাবহার করে।

তবে সার্ভিসে আসার পর থেকে জানুয়ারি ২০২০ পর্যন্ত মোট ৬৭০টির কাছাকাছি এফ-১৬ জেট ফাইটার বিভিন্ন কমব্যাট এণ্ড নন-কমব্যাট মিশনে ধ্বংস হয়েছে। তাছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে বিশেষ করে তাইওয়ান বিমান বাহিতে অপারেশনাল থাকা এফ-১৬ যুদ্ধবিমান প্রায় প্রতি মাসেই নন কমব্যাট মিশনে ক্রাস কিংবা ধ্বংস হলে একে প্রশ্নের মুখে ফেলে দিয়েছে। এফ-১৬ এর প্রডাকশন লাইন শুরু থেকে এ পর্যন্ত মোট ১৫টি ব্লকে এবং এ, বি, সি, ডি, ই এফ, আইএন সিরিজে ধাপে ধাপে আপগ্রেডেশন এবং নতুন প্রযুক্তির সমন্বয়ে যুগের সাথে তাল মিলিয়ে আরো অত্যাধুনিক এফ-১৬ভি বা ব্লক-৭০/৭২ পর্যায়ে এসে পৌছেছে।

১৯৭৩ সালে এফ-১৬ এর ম্যাসিভ প্রডাকশন লাইন শুরু থেকে আজ পর্যন্ত ১, ৫, ১০, ১৫, ২০, ২৫, ৩০, ৩২, ৪০, ৪২, ৫০, ৫২, ৬০, ৭০ এবং ৭২ ব্লকে তৈরি হয়েছে। যা আজ পর্যন্ত বিশ্বে অন্য কোন যুদ্ধবিমান এতগুলো ব্লকে এবং ভ্যারিয়েন্টে তৈরি করা সম্ভব হয়নি। বিগত চার দশকে এফ-১৬ আনুমানিক মোট ৮৮টি শত্রু পক্ষের জেট ফাইটার, বোম্বার, হেলিকপ্টার এবং বিভিন্ন ধরণের এরিয়াল সিস্টেম সরাসরি এয়ার টু এয়ার মিসাইল হীটে ধ্বংস করার রেকর্ড রয়েছে। তাছাড়া ২০১৯ সালের ২৭শে ফেব্রুয়ারি ভারত পাকিস্তান আকাশ যুদ্ধে পাকিস্তান বিমান বাহিনীর একটি এফ-১৬ ভারতের মিগ-২১ শুট ডাউন করে।

মার্কিন এফ-১৬ ফাইটিং ফ্যালকন এ পর্যন্ত ১৯৯০-৯১ সালে উপসাগরীয় যুদ্ধ, ১৯৯৪-৯৫ সালে বসনিয়ায় সার্বিয়া সামরিক আগ্রাসন প্রতিরোধে, কসভো স্বাধীনতা যুদ্ধে, গ্রীক-তুর্কী সামরিক সংঘর্ষ ছাড়াও আফগানিস্থান, লিবিয়া, সিরিয়া, লেবানন এবং ইরাকের আকাশে ব্যাপকভাবে ব্যাবহার করা হয়েছে এফ-১৬ ফাইটিং ফ্যালকন যুদ্ধবিমান।#

আপনার মতামত দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.