--- বিজ্ঞাপন ---

জাপানী কোম্পানী হিটাচি অভাবনীয় এক ডাটা স্টোরেজ ডিভাইস নিয়ে গবেষণা চালাচ্ছে

0

সিরাজুর রহমান#

জাপানের প্রযুক্তি পন্য ও ডিভাইস ম্যানুফ্যাকচারিং কোম্পানি ‘হিটাচি’ মুলত নতুন অভাবনীয় এক ডাটা স্টোরেজ ডিভাইস নিয়ে গবেষণা করছে। বর্তমান সময়ে প্রচলিত ডাটা স্টোরেজ সিস্টেমের অসাধারণ গতি, ক্ষমতা এবং অন্যান্য সুবিধা প্রদান করতে সক্ষম। তবে এই ধরনের ডিভাইস কিন্তু দীর্ঘ সময় পর্যন্ত অক্ষত থাকার কোন সুযোগ নেই। আর বর্তমানে প্রযুক্তিগত সক্ষমতা ও উন্নয়নের বিচারে দীর্ঘ মেয়াদী সক্ষমতার কাঁচের ভিতরে ডাটা স্টোরেজ প্রযুক্তি নিয়ে উন্নত দেশগুলো গবেষণা শুরু করেছে আজ থেকে প্রায় এক যুগ আগেই।

দীর্ঘদিন টিকে থাকতে সক্ষম এমন নতুন ডাটা কাঁচের ভেতরে সংরক্ষণের প্রযুক্তি নিয়ে ‘হিটাচি’ গবেষণা করছে সেই ২০০৮ সাল থেকেই। আসলে ‘হিটাচি’ ব্যাপক গবেষণা করে দেখেছে যে, তাদের নতুন টেকনোলজির কাঁচে সংরক্ষিত তথ্য ২ ঘন্টা ধরে ১ হাজার ডিগ্রি সেলসিয়াসে উত্তপ্ত করলেও নষ্ট হয় না। এই পরীক্ষা থেকে প্রমাণিত হয় যে কাঁচের ফলকে রক্ষিত তথ্য ৩০ কোটি বছর পর্যন্ত অক্ষত থাকতে পারে। যদিও এই গবেষনা এখনো পর্যন্ত উন্নয়নের প্রাথমিক স্তরেই রয়েছে। বর্তমানে ‘হিটাচি’র লক্ষ্য হচ্ছে যে, অসীম ভবিষ্যতে কাঁচে সংরক্ষণের পাশাপাশি সংরক্ষিত ডেটাকে খুব দ্রুত, সহজ এবং প্রচলিত থাকা ডিভাইস দিয়েই যাতে তথ্য উপাত্ত উদ্ধার করা যায় এ বিষয়টি নিশ্চিত করা। আর তাই এবার তথ্য সংরক্ষণের জন্য ব্যবহার করছে ফেমটোসেকেন্ড পালস লেজার। আর ‘হিটাচি’ জাপানের কিয়োটো ইউনিভার্সিটির সাথে একসাথে কাজ করে এই ব্রেকথ্রু প্রযুক্তি উদ্ভাবনে অনেকটাই সফল হয়েছে বলেই প্রতিয়মান হয়।

এই ফেমটো লেজার দিয়ে কাঁচের ভিতর ক্ষত সৃষ্টি করা হয়, যেগুলো এক একটা ২ডি কোড হিসেবে কাজ করে। বাস্তব ক্ষেত্রে এই প্রযুক্তিকে অত্যন্ত কার্যকর করার জন্য হিটাচি পুরু কাঁচের ফলকে একাধিক স্তরে এই লেজার এনগ্রেভিং করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এখন পর্যন্ত ‘হিটাচি’ এক কাঁচের ফলকের ভেতরে সর্বোচ্চ ১০০ লেয়ারে তথ্য সংরক্ষণ করতে সক্ষম হয়েছে। এই প্রযুক্তি লক্ষ লক্ষ বছর পরে ভবিষ্যত প্রজন্মের মানব জাতি বা উন্নত কোন সভ্যতা বর্তমানের সংরক্ষিত ডাটা খুব সহজেই রিড করতে পারে তা নিয়েই গবেষণা করে যাচ্ছে জাপান।

গত ২০১৪ সালে মহাকাশে পাঠানো এক স্যাটেলাইটের পে-লোডে প্রথম বারের মতো হিটাচির তৈরি এই ‘ফিউজড সিলিকা কাঁচের ফলক’ নিয়ে মহাকাশে যাত্রা করে। এই ফলকে লক্ষ লক্ষ বছর পরের প্রজন্মের জন্য আমাদের সভ্যতার তথ্য ও শুভেচ্ছা বার্তা সংরক্ষিত আছে। আর স্যাটালাইটে করে মানব সভ্যতার সেই মেসেজ নিয়ে আমাদের মহাকাশে ভেসে বেড়াবে আসীম সময় ধরে। যা হয়ত ভবিষ্যতে কোন এক সময় আমাদের নতুন প্রজন্মের কাছে আমাদের পরিচিতি এবং অতীত সভ্যতা সম্পর্কে জানতে পারবে এই নতুন উদ্ভাবিত ডাটা স্টোরেজ প্রযুক্তি দিয়ে।##

আপনার মতামত দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.