--- বিজ্ঞাপন ---

শিশু শিক্ষা বাংলাদেশ ও ফিনল্যান্ড

0

ফিনল্যান্ড আর বাংলাদেশের শিশু শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় হরহামেশা আলোচনা হচ্ছে। একটি উন্নয়নশীল দেশ আর অন্যটি উন্নত দেশ। তবে জনসংখ্যার দিক দিয়ে বিবেচনা করলে বাংলাদেশ সরকার শিশু শিক্ষার ক্ষেত্রে বিশাল বোঝা মাথায় নিয়ে এগুচ্ছে। ফিনল্যান্ডের মানুষ মনে করেন, সাত বছরের আগে শিশুদের মাথায় লেখাপড়া নিয়ে চাপ দেওয়া উচিত নয়। তাদের এই ধারণা অবশ্যই শতভাগ সত্য। ফিনল্যান্ডের শিশুদের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা শুরু হয় সাত বছর বয়স থেকে। এখানে ১৬ বছরের আগে শিশুর কোনো ধরনের পরীক্ষা নেওয়া হয় না। ১৬ বছর বয়সে একটি মাত্র বাধ্যতামূলক পরীক্ষা দিতে হয় শিশুদের। আরো কত রকমের কথা।

৩,৮৮,৪৫৫ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের দেশ ফিনল্যান্ডের মোট জনসংখ্যা ৫৫ লক্ষ ৫৩ হাজার মাত্র। আর এই স্বল্প লোকসংখ্যার দেশে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মোট ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা সর্বোচ্চ হলে ৫ লক্ষ হবে কিনা সন্দেহ আছে।

আর এদিকে আমাদের এই ছোট্ট দেশের মোট লোকসংখ্যা ১৬ কোটি ৫১ লক্ষ ৫৯ হাজার জন প্রায়। আর আমাদের দেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অধ্যায়নরত শিশুর সংখ্যা প্রায় কিনা ২ কোটি। যা কিনা ফিনল্যান্ডের মতো দেশের মোট লোকসংখ্যার প্রায় ৪ গুণ বেশি। তাদের প্রাকৃতিক সম্পদ ও আয় আমাদের তুলনায় অনেকটাই বেশি। তাই উন্নত বিশ্বের ফিনল্যান্ডের দেশের সাথে আমাদের দেশের শিক্ষা ব্যবস্থার অহেতুক তুলনা করাটা এক রকম হাস্যকর বিষয় ছাড়া আর কিছুই নয়। ৫ লক্ষ শিশুর শিক্ষা ব্যবস্থার সাথে ২ কোটি শিশুর শিক্ষা ব্যবস্থাপনা ও নিশ্চিত করার বিষয়টিকে এক করে দেখা উচিত হবে না।

বাংলাদেশ  সরকার সারা দেশে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অধ্যায়নরত প্রায় ২ কোটি শিশুর শিক্ষা শতভাগ নিশ্চিত করেছে। এটাই কিন্তু অনেক বড় পাওনা। সারা দেশে অধ্যায়নরত প্রায় ২ কোটি শিশুর জন্য শিক্ষা উপবৃত্তি নিশ্চিত করেছে আমাদের দেশ। এখন আধুনিক ও বিশ্ব মানের প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করার জন্য নতুন শিক্ষা কারিকুলাম তৈরির পাশাপাশি পর্যায়ক্রমে তা বিদ্যালয়ে বাস্তবায়নে আন্তরিকতার সাথে কাজ করে যাচ্ছে আমাদের দেশের সরকার ও প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।

তবে ফিনল্যান্ডের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রতি ক্লাসের প্রতি ৪৫ মিনিট পড়াশোনার পর স্কুলে ১৫ মিনিটের বিরতি দেওয়া হয়। খেলাধুলোর জন্যই মুলত এই বিরতি দেয়া হয়। তাছাড়া এই দেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মাত্র ৫ থেকে ৬ ঘণ্টা ক্লাস হয়। স্কুল শুরু হয় সকাল ৮টা-৯টা নাগাদ। দুপুর ২ টার মধ্যেই বেজে ওঠে ছুটির ঘণ্টা। তাছাড়া ৭ বছরের আগে শিশুকে কোন বিদ্যালয়ে ভর্তি করানো হয় না। ফিনল্যান্ডের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এই ব্যবস্থা আমার খুবই ভালো লেগেছে এবং তা কিন্তু আমাদের বাংলাদেশের প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থায় পর্যায়ক্রমে প্রয়োগ করা যেতে পারে।#

আপনার মতামত দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.