--- বিজ্ঞাপন ---

মোজাম্বিকে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হিসেবে তারিক আহসানের যোগদান

রাষ্ট্রপতির কাছে পরিচয় পত্র পেশ

0

বিশেষ সংবাদাতা, লিসবন#
পর্তুগালে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত তারিক আহসান গত ৩০ জানুয়ারি ২০২৩ তারিখে মোজাম্বিক-এর রাজধানী মাপুতো-তে আয়োজিত এক আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানে দেশটির রাষ্ট্রপতি ফিলিপে জাসিন্তো ন্যুসি’র নিকট অনাবাসিক হাইকমিশনার হিসাবে তাঁর পরিচয় পত্র পেশ করেন।
স্বাগতিক দেশ কর্তৃক আয়োজিক একটি মোটর শোভাযাত্রা সহযোগে হাইকমিশনার তারিক আহসান তাঁর হোটেল থেকে রাষ্ট্রপতি ভবনে পৌঁছালে রাষ্ট্রপতির গার্ড রেজিমেন্টের একটি চৌকষ দল তাঁকে সামরিক সালাম প্রদান করেন। এ সময় প্রতিরক্ষা বাহিনীর একটি বাদ্যযন্ত্রীদলের পরিবেশনায় বাংলাদেশ ও মোজাম্বিক-এর জাতীয় সংগীত বাজানো হয়।
আনুষ্ঠানিকভাবে পরিচয়পত্র পেশের পর মোজাম্বিকের রাষ্ট্রপতি ফিলিপে জাসিন্তো ন্যুসি এবং হাইকমিশনার তারিক আহসানের মধ্যে একটি সৌজন্য বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। মোজাম্বিকের পররাষ্ট্র ও সহযোগিতা বিষয়ক মন্ত্রী ভেরোনিকা নাতানিয়েল ম্যালকামো লোভো এ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। হাইকমিশনার মোজাম্বিকের রাষ্ট্রপতিকে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শুভেচ্ছা পৌছে দেন।

মোজাম্বিকের রাষ্ট্রপতি-ও হাইকমিশনারকে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী বরাবরে তাঁর শুভেচ্ছা বার্তা পৌঁছে দিতে অনুরোধ করেন। এ সময় তিনি গত নভেম্বর ২০২১-এ দক্ষিণ কোরীয় শহর বুসান-এ যাওয়া আর ফেরার পথে ঢাকায় সংক্ষিপ্ত যাত্রা বিরতির সময়ে তাঁর প্রতি বাংলাদেশ সরকার যে সৌজন্য প্রদর্শন করেছিল তার প্রশংসা করেন। সে সময় বাংলাদেশের স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয় মন্ত্রী মোঃ তাজুল ইসলাম তাঁর সাথে যে সাক্ষাতটি করেন সেটিও তিনি ধন্যবাদের সাথে স্মরণ করেন। একই সাথে ২০২৩-২৪ মেয়াদে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে সদস্য হিসেবে মোজাম্বিকের নির্বাচনে সমর্থন দেয়ার জন্য বাংলাদেশকে আন্তরিকবভাবে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।  ১৯৯০ দশকের গোড়ার দিকে মোজাম্বিকে জাতিসংঘের শান্তি রক্ষা কার্যক্রম চলাকালে বাংলাদেশী শান্তিরক্ষীদের সাথে তাঁর সহযোগিতার কথাও আনন্দের সাথে স্মরণ করেন।
বৈঠককালে রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশ সফরের বিষয়ে আন্তরিক ইচ্ছা প্রকাশ করেন এবং দু’দেশের মধ্যে সহযোগিতা, বিশেষ করে বাণিজ্য ক্ষেত্রে সহযোগিতা আরও মজবুত করার উপর গুরুত্বারোপ করেন। এসময়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আর্থ- সামাজিক উন্নয়নে বাংলাদেশের সাফল্যের প্রশংসা করে, মোজাম্বিকের রাষ্ট্রপতি জলবায়ু পরিবর্তন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, কৃষিসহ নানা ক্ষেত্রে দুদেশের মধ্যে অভিজ্ঞতা বিনিময়ে গভীর আগ্রহ প্রকাশ করেন। কৃষি ক্ষেত্রে সহযোগিতার প্রসংগে হাইকমিশনার বাংলাদেশী উদ্যোক্তা ও কৃষিকর্মীদের দ্বারা মোজাম্বিকের অনাবাদী জমিতে সম্ভাব্য চুক্তিভিত্তিক খামার পরিচালনার ধারণাটি উপস্থাপন করেন। রাষ্ট্রপতি প্রস্তাবটিকে ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করেন এবং বিষয়টিকে এগিয়ে নেয়ার পরামর্শ দেন।
এর আগে, ২৮ জানুয়ারি ২০২৩ তারিখে হাইকমিশনার তারিক আহসান মোজাম্বিকের পররাষ্ট্র ও সহযোগিতা বিষয়ক উপমন্ত্রী ম্যানুয়েল যোসে গনসালভেসের নিকট তাঁর পরিচয় পত্রের অনুলিপি হস্তান্তর করেন এবং একটি বৈঠকে মিলিত হন। এ সময় দু’দেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পর্যায়ে নিয়মিত বৈঠক অনুষ্ঠানের একটি পদ্ধতি প্রতিষ্ঠা এবং ঢাকায় মোজাম্বিকের একজন অবৈতনিক কনসাল নিয়োগের বিষয়ে আলোচনা হয়।

হাইকমিশনার দু’দেশের মধ্যকার অপার বাণিজ্যিক সম্ভাবনার কথা তুলে ধরে বলেন যে, মোজাম্বিক বাংলাদেশ থেকে সুলভ মূল্যে উন্নতমানের পণ্য যেমন তৈরি পোশাক, ঔষধ সামগ্রী, সিরামিক, ইলেক্ট্রনিকস, সফটওয়্যার, বাইসাইকেল/মোটরসাইকেল এবং সমুদ্রগামী জাহাজ আমদানী করতে পারে। জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে ২০২৩-২৪ মেয়াদে মোজাম্বিক সদস্যপদ লাভ করায় তিনি উপমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানান এবং জোরপূর্বক ব্যস্তচ্যুত রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবর্তনের বিষয়টিতে জাতিসংঘ সহ অনান্য আন্তর্জাতিক সংগঠনে মোজাম্বিকের অব্যাহত সমর্থন প্রত্যাশা করেন। এছাড়া, ২০২৪-২৫ মেয়াদে আন্তর্জাতিক সমুদ্র বিষয়ক সংস্থার কাউন্সিলের সদস্যপদের জন্য অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনে বাংলাদেশের প্রার্থিতায় মোজাম্বিকের সমর্থন কামনা করেন।#

আপনার মতামত দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.