--- বিজ্ঞাপন ---

কিম’এর কন্যার নামে নাম রাখা যাবে না, ফতোয়া জারি

0

প্রায় প্রতি বছরই কিছু না কিছুর উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে তাঁর সরকার। কখনও পোশাক, কখনও রীতিনীতি, কখনও বা বিশেষ কোনও খাবারের উপরেও রাশ টানা হয়। উত্তর কোরিয়ার একনায়ক কিম জং উন এ বার সে দেশের নাগরিকদের উপর সন্তানের নাম রাখা ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ জারি করেছেন বলে একটি রিপোর্টে দাবি।উত্তর কোরিয়ার অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা মন্ত্রক সাম্প্রতিক নির্দেশিকায় জানিয়েছে, কিমের কন্যা জু আয়ের নামে কোনও নাগরিক তাঁদের কন্যাসন্তানের নাম রাখতে পারবেন না। এমনকি, ইতিমধ্যেই যাঁরা কিম-কন্যার নামে নিজেদের কন্যাসন্তানের নাম রেখে ফেলেছেন, তাঁদের নির্দিষ্ট সরকারি হলফনামা জমা দিয়ে দ্রুত নাম বদলানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে! প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালে এমনই এক ফরমান জারি করে কিম উত্তর কোরিয়াবাসীকে জানিয়েছিলেন, তাঁর নামে কারও নাম রাখা যাবে না।

ব্যক্তিগত জীবনকে বরাবরই গোপনীয়তায় ঢেকে রাখতে পছন্দ করেন উত্তর কোরিয়ার কমিউনিস্ট একনায়ক কিম। বস্তুত গত নভেম্বরেই প্রথম তাঁর কন্যার ছবি প্রকাশ্যে এনেছিল পিয়ং ইয়ং। একটি ক্ষেপণাস্ত্র ঘাঁটিতে বাবার হাত ধরে হাঁটতে দেখা গিয়েছিল জু-কে। এমনকি, কিমের বিয়ের বেশ কিছু দিন পর সরকারি ভাবে উত্তর কোরিয়া তা ঘোষণা করেছিল। ২০১১ সাল থেকে উত্তর কোরিয়ার একনায়কের পাশে এক মহিলাকে মাঝেমধ্যে দেখা যেতে শুরু করেছিল। তার পরই জানা যায় যে, তিনি রি সল-জু। কিমের স্ত্রী। অর্থাৎ উত্তর কোরিয়ার ফার্স্ট লেডি। কিছু দিন পরে কয়েকটি পশ্চিমি সংবাদমাধ্যম দাবি করেছিল, ২০১০ সালেই কিম দম্পতির একটি সন্তান হয়। যদিও তাকে এখনও প্রকাশ্যে দেখা যায়নি।

এদিকে উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন নিজের কন্যার ছবি সংবলিত নতুন একটি স্মারক ডাকটিকিটি উন্মোচন করেছেন। যা বিশেষজ্ঞরা পারমাণবিক অস্ত্রধারী দেশের উত্তরাধিকারী হিসেবে তার উত্থানের আরেকটি লক্ষণ হিসাবে বর্ণনা করেছেন। এর আগে নভেম্বরে দেশের সবচেয়ে শক্তিশালী ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের সময় কিম তার মেয়ের সঙ্গে ছবি তুলে প্রকাশ করেছিলেন।

কিন্তু উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় মিডিয়া বছরের পর বছর কিমের সন্তানদের কোনো ছবি প্রকাশ করেনি। সম্প্রতি কিমের কন্যার ছবি প্রকাশের বিষয়টি বেশ আলোচনায় উঠে এসেছে। উত্তর কোরিয়ার প্রভাবশালী নেতা কিমের কন্যার বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ কর্মসিূচিতে উপস্থিত থাকতে দেখা গেছে, যার নাম পিয়ংইয়ং কখনোই উল্লেখ করেনি। দক্ষিণ কোরিয়ার গুপ্তচর সংস্থা বিশ্বাস করে যে তিনি কিমের দ্বিতীয় সন্তান, যার নাম জু-আয়ে।

রাষ্ট্র পরিচালিত কোরিয়া স্ট্যাম্প কর্পোরেশন নভেম্বরে ১৮টি ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের স্মরণে একটি নতুন সিরিজের স্ট্যাম্প কর্পোরেশনটি ওয়েবসাইটে ছবির নিচে ক্যাপশনে কিমকন্যার নাম দিয়েছে ‘ভালোবাসার কন্যা’। সিরিজটি আগামী শুক্রবার মুক্তি পাবে। বিশেষজ্ঞদের কেউ কেউ বলছেন, সম্প্রতি উনের কন্যার উপস্থিতি ইঙ্গিত দেয় যে তাকে পরবর্তী নেতা হিসেবে তৈরি করা হচ্ছে এবং ডাকটিকিটগুলো ক্ষমতাসীন কিম পরিবারকে আরও শক্তিশালী করবে।

অ্যান চ্যান-ইল নামে এক গবেষক, যিনি উত্তর কোরিয়ার ইতিহাস নিয়ে গবেষণা করেন, তিনি এএফপিকে বলেছেন, ডাকটিকিটগুলো বাবার উত্তরসূরি হিসেবে কন্যা জু-আয়ে’র জীবনের আনুষ্ঠানিক সূচনা বলে মনে হচ্ছে৷

তবে অন্যরা বলেছেন, এটি অনেক আগেই নিশ্চিতভাবে বলা গেছে যে, কিমের বয়স এখন ৩৯, অর্থাৎ ৩০ দশকের মধ্যে রয়েছে এবং তিনি তার কন্যার নামটি কখনই আনুষ্ঠানিকভাবে উল্লেখ করেননি।

সিউলের উত্তর কোরিয়ান স্টাডিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ইয়াং মু-জিন এএফপিকে বলেছেন, উত্তর কোরিয়ার ইতিহাসে বলছে, যখনই আনুষ্ঠানিকভাবে দেশের কোনো উত্তরাধিকারীর নাম প্রকাশ করা হতো, দেশের জনগণ তখনই সেই ব্যক্তির নাম জানতে পারত। এটা খুব সম্ভবত যে, কিম কন্যা জু-আয়ে’র নাম শুধু প্রচারের জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে, যখন কিমের বড় ছেলে দরজার পেছনে উত্তরাধিকারী হিসেবে তৈরি হচ্ছে।# সূত্রঃ আনন্দবাজার/যুগান্তর

আপনার মতামত দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.