--- বিজ্ঞাপন ---

অর্থনৈতিক সঙ্কটেও চীন থেকে অস্ত্র কিনছে পাকিস্তান

0

সিরাজুর রহমান, বিশেষ প্রতিনিধি#

নতুন ২টি চীনের তৈরি টাইপ-০৫৪এ/পি সিরিজের অত্যাধুনিক মিসাইল গাইডেড (ফ্রীগেট) ব্যাটল শীপ পেতে যাচ্ছে পাকিস্তান।পাকিস্তানের নৌবাহিনীর জন্য ২টি টাইপ-০৫৪এ/পি সিরিজের অত্যাধুনিক মিসাইল গাইডেড (ফ্রীগেট) ব্যাটল শীপ তৈরি সম্পন্ন করেছে চীন। চীনের সাংহাই বন্দরে ‘টিপু সুলতান’ ও ‘শাহ জাহান’ নামের এই দুটি নতুন নির্মিত ফ্রীগেট কিছু দিনের মধ্যেই পাকিস্তানের কাছে হস্তান্তরের জন্য রেডি করে রাখা হয়েছে। যা চলতি ২০২৩ সালের মাঝামাঝি সময়ের মধ্যেই পাকিস্তানের হাতে তুলে দিতে পারে চীন।

মূলত পাকিস্তান ২০১৭ সালে ২টি ও ২০১৮ সালে আরও ২টিসহ মোট ৪টি এই জাতীয় মিসাইল গাইডেড ফ্রীগেট ক্র‍য়ের জন্য চীনের রাষ্ট্রীয় জাহাজ নির্মানকারী প্রতিষ্ঠান চায়না স্টেট শিপবিল্ডিং কোম্পানির (সিএসএসসি) সাথে চুক্তি করে। যার মধ্যে দুটি গত ২০২০ ও ২০২১ সালেই পাকিস্তানের নৌবাহিনীতে কমিশনিং লাভ করে। আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিটি এই সিরিজের (ফ্রীগেট) যুদ্ধজাহাজের মূল্য আনুমানিক ৩৪৮ মিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি হতে পারে। সে হিসেবে পাকিস্তান তার নৌবাহিনীর আধুনিকায়নের জন্য এই ৪টি এডভান্স মিসাইল গাইডেড ফ্রিগেট যুদ্ধজাহাজ ক্রয়ের পেছনে প্রায় ১.৪ বিলিয়ন ডলার ব্যয় করেছে পাকিস্তান সরকার।

বর্তমানে চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মির নেভাল ফোর্সে ৪,০০০ টন ওজনের এই জাতীয় টাইপ-০৫৪এ সিরিজের মোট ৩০টি ফ্রিগেট অপারেশনাল রয়েছে। এটিকে এখনো পর্যন্ত পিপলস লিবারেশন আর্মি নেভাল ফোর্সের অন্যতম যুদ্ধজাহাজ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এদিকে পাকিস্তান নিজস্ব চাহিদা মাফিক কাস্টমাইজড করা একই সিরিজের মোট ৪টি যুদ্ধজাহাজ অপারেট করতে যাচ্ছে।

৪,০০০ টন ওজনের টাইপ-০৫৪ এ/পি মাল্টিরোল মিসাইল গাইডেড ফ্রিগেটের দৈর্ঘ্য ১৩৪ মিটার এবং বিম ১৬ মিটার। এটিকে সাগরের বুকে পরিচালনার জন্য মোট ১৬৫ জন নাবিক ও অফিসারের প্রয়োজন।এটিতে অত্যাধুনিক রাডার সিস্টেম হিসেবে এস আর-২৪১০সি নতুন প্রজন্মের লং রেঞ্জ/মেট্রিক ওয়েভ রাডার এবং টাইপ-৫১৭/ এসইউআর১৭বি এয়ার সার্ভেলেন্স রাডার ইনস্টল করা হয়েছে।

প্রধান অস্ত্র হিসেবে এই যুদ্ধজাহাজে একটি ৭৬ এমএম এইচ/পিজে-২৬ মেইন গান ইনস্টল করা হয়েছে। তার পাশাপাশি এটিতে ৮টি সিএম-৩০২ এন্টিশীপ মিসাইল এবং এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম হিসেবে ৩২টি এইচকিউ-১৬ সারফেস টু এয়ার মিসাইল বহন করে। তাছাড়া এটিতে ২টি টাইপ-৭৩০ ৩০ এমএম ক্লোজড ইন ওয়েপন্স সিস্টেম (সিআইডাব্লিউএস) এবং ৬টি ৩২৪ এমএম টর্পেডো লঞ্চার রয়েছে।

বিগত এক দশক থেকে ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকটের মুখে থেকেও পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর অস্ত্র ও সামরিক সাজ সরঞ্জাম ক্রয়ের তালিকা দেখলে আশ্চর্য না হয়ে পারা যায় না। বিশেষ করে বর্তমানে দেশটির সেন্ট্রাল ব্যাংকে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ মাত্র ৪.৪৬ বিলিয়ন ডলারের নেমে এসেছে। অথচ এদিকে ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসের হিসেব অনুযায়ী ১২৬.৩ বিলিয়ন ডলারের বৈদেশিক ঋন ও দেনার বোঝা মাথায় নিয়ে দেশটি প্রাণঘাতী অস্ত্র আমদানিতে নির্বিচারে অর্থ ব্যয় করে যাচ্ছে।

আপনার মতামত দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.