--- বিজ্ঞাপন ---

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এফ-১৫ যুদ্ধবিমানের কমব্যাট কিলিং রেকর্ড

0

সিরাজুর রহমান, বিশেষ প্রতিনিধি#

বর্তমানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাকডোনাল ডগলাস ও বোয়িং কর্পোরেশনের তৈরি জয়েন স্টাইক এফ-১৫ ঈগল সিরিজের এডভান্স এয়ার সুপিউরিটি জেট ফাইটাকে সারা বিশ্বে মধ্যে সার্ভিসে থাকা সবচেয়ে ভয়ঙ্কর, হাইলি পারফর্মেন্স এবং আনস্টপেবল যুদ্ধবিমান হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তাছাড়া এই সিরিজের সবচেয়ে আধুনিক এফ-১৫ইএক্স সিরিজের এডভান্স মাল্টিরোল যুদ্ধবিমানের ম্যাক্সিমাম পেলোড ক্যাপাসিটি ১২ টন। যদিও পুরনো জয়েন্ট স্টাইক এফ-১৫ এর পরীক্ষিত পে-লোড ক্যাপাসিটি বা অস্ত্র বহণ করার ক্ষমতা ১০,৪০০ কেজি বা ১০.৪ টন।

এফ-১৫ সিরিজের যুদ্ধবিমান প্রথম সার্ভিসে আসে ১৯৭৬ সালে এবং ৪৭ বছরের সার্ভিস লাইফে মোট ১০২টি শত্রু দেশের যুদ্ধবিমান ও হেলিকপ্টার শুট ডাউন করে এক বিরল রেকর্ডের সৃষ্টি করে রেখেছে। অথচ বিশ্বের কোন দেশের যুদ্ধবিমান আজ অব্ধি একটিও এফ-১৫ যুদ্ধবিমান শুট ডাউন করতে পারেনি। যদিও অবশ্য এটি তার সমকক্ষ কোন যুদ্ধবিমানের মোকাবেলা আজ অব্ধি করেছে বলে মনে হয় না। তবে এই সিরিজের যুদ্ধবিমান ব্যবহার করে সবচেয়ে বেশি কিলিং রেকর্ড গড়ে তুলেছে ইসরাইলের বিমান বাহিনী।

তবে এই যুদ্ধবিমানের নিজস্ব কিলিং রেকর্ড সকলের কাছে অনেক বেশি বলে মনে করা হলেও বাস্তবে এর অতি স্পর্শকাতর কিছু দূর্বলতা ও সমস্যা কিন্তু রয়েই গেছে। যা আমেরিকা কখনোই বিশ্বের সামনে প্রকাশ করে না। আর তা হলো এফ-১৫ যুদ্ধবিমানের নিজস্ব ক্রাস রিপোর্ট। তাছাড়া আমেরিকা নিয়ন্ত্রিত মিডিয়ায় এ নিয়ে খুব বেশি তথ্য পাওয়ার সম্ভবনা এক রকম নেই বললেই চলে। যদিও এর জাতীয় যুদ্ধবিমানের সিরিজ ভেরিয়েন্টে গড়ে পার আওয়ার ফ্লাইং এন্ড মেইটেনেন্স কস্ট প্রায় ২৯ হাজার ডলারের অধিক হয়ে যেতে পারে।

ইউকীপিডিয়া ও বিভিন্ন সামরিক থিংক ট্যাংকের দেয়া তথ্য মতে, ১৯৭৬ সাল থেকে ২০১৪ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত মার্কিন বিমান বাহিনীর মোট ১২৩টি বিভিন্ন সিরিজের এডভান্স এফ-১৫সি/ডি ঈগল যুদ্ধবিমান নন-কমব্যাট মিশনে উড্ডয়নরত অবস্থায় নিজে নিজেই ধ্বংস বা ক্রাস হয়েছে। তাছাড়া অন্যান্য দেশের বিমান বাহিনী যেমন ইসরাইল, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, সৌদি আরবের বিমান বাহিনীর আরো মোট ৫২টি এই সিরিজের যুদ্ধবিমান নন-কমব্যাট মিশনে ধ্বংস হয়। সে হিসেবে ১৯৭৬ সাল থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত মোট ১৭৫টি বিভিন্ন সিরিজের হেভি এফ-১৫ যুদ্ধবিমান ক্রাস বা ধ্বংস হয়ে যায়।

আর চলতি ২০২৩ সাল পর্যন্ত সারা বিশ্বে সার্ভিসে থাকা এফ-১৫ যুদ্ধবিমানের ধ্বংসের হিসেবটি বিবেচনায় আনলে ১৯৭৬ সাল থেকে ২০২৩ সালের মে মাস পর্যন্ত মোট প্রায় ১৮৮টি বিভিন্ন সিরিজের এফ-১৫ যুদ্ধবিমান নন-কমব্যাট মিশনে যুদ্ধ না করে নিজে নিজেই ক্রাস ল্যান্ডিং কিংবা আকাশেই ধ্বংস হয়ে গেছে। যদিও এর মোট সংখ্যা কিন্তু যুক্তিসঙ্গত কারণেই কিছুটা কম বা বেশি হতে পারে। তাই কফিন ফ্লাইং খ্যাত মিগ-২১ এর পরেই কফিন ফ্লাইং ভার্সন ২.০ হিসেবে স্থান করে নিয়েছে আমেরিকার চতুর্থ প্রজন্মের (৪++ প্রজন্ম) এফ-১৫ সিরিজের হাইলি এডভান্স যুদ্ধবিমান।

এখানে প্রকাশ থাকে যে, বোয়িং কর্পোরেশনের তৈরি এফ-১৫ যুদ্ধবিমানের কমব্যাট কিলিং রেকর্ড এ পর্যন্ত মোট প্রায় ১০২টি হলেও তা কিন্তু অধিকাংশ একেবারেই নিম্ন মানের দ্বিতীয় বা তৃতীয় প্রজন্মের যুদ্ধবিমানের বিরুদ্ধে এই রেকর্ড গড়ে তুলেছে। আসলে এফ-১৫ যুদ্ধবিমানের সমকক্ষ যুদ্ধবিমান যেমন এসইউ-৩৫, এসইউ-৩০, রাফায়েল ও ইউরোফাইটার তাইফুনের মতো এডভান্স যুদ্ধবিমানের বিরুদ্ধে কখনই কিন্তু আকাশ যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়নি কিংবা ব্যবহারের সুযোগ পায়নি এই জয়েন স্টাইক খ্যাত এফ-১৫ ঈগল ফাইটার জেট। তবে লো ক্রাস রিপোর্ট এন্ড লো মেইনটেনেন্স কস্টের বিচারে বিশ্বের মধ্যে বর্তমানে সবচেয়ে নির্ভর যোগ্য এবং আধুনিক মান সম্পন্ন যুদ্ধবিমান হচ্ছে ফ্রান্সের তৈরি রাফায়েল টুইন ইঞ্জিন ফাইটার জেট।##

আপনার মতামত দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.