--- বিজ্ঞাপন ---

রাশিয়ার একটি সুখোই সুপারজেট ১০০ যাত্রী পরিবহণ বিমান বিধ্বস্ত

0

বিশেষ প্রতিনিধি#

রাশিয়ার একটি সুখোই সুপারজেট ১০০ যাত্রী পরিবহণ বিমান বিধ্বস্ত!
গতকাল ১২ই জুলাই শুক্রবার রাশিয়ার একটি সুখোই সুপারজেট ১০০ যাত্রীবাহী বিমান মস্কোর কাছে আকাশে বিধ্বস্ত হয়েছে। দুর্ভাগ্যবশত পরীক্ষামূলক এই ফ্লাইটে বিমানে থাকা তিন পাইলট ও ক্রু মারা গেছেন। আর এটি রাশিয়ার রাজধানী মস্কো থেকে ৯০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে আপ্রাকসিনো গ্রামের কাছের একটি জঙ্গলে বিধ্বস্ত হয়।
অনেকটা স্বল্প যাত্রী সক্ষমতার এবং মিডিয়াম রেঞ্জের এই যাত্রী পরিবহণ বিমানটি মেজর আপগ্রেডিং শেষে পরীক্ষামূলক উড্ডয়ন করায় এতে কোন সাধারণ যাত্রী ছিল না। এতে করে বড় ধরনের প্রাণহানি থেকে রক্ষা পাওয়া গেছে। তবে বিমানে থাকা তিন পাইলট ও ক্রু সবাই মারা গেছেন। এদিকে রাশিয়ার জাতীয় বিমান পরিবহণ ও ব্যবস্থাপনা বিভাগ এই মর্মান্তিক বিমান দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধান করতে শুরু করেছে।
রাশিয়ার জরুরি মন্ত্রণালয়ের তরফে জানানো হয়েছে, মিডিয়াম রেঞ্জের এই যাত্রী পরিবহণ বিমানটি ছিল আসলে দেশটির রাষ্ট্র-নিয়ন্ত্রিত জ্বালানি কোম্পানি গ্যাজপ্রম এভিয়ার মালিকানাধীন বিমান। এই বিমানটি রাশিয়ার সুখোই কর্পোরেশনের তৈরি হলেও এটিতে ফ্রান্স ও রাশিয়ার যৌথ মালিকানায় তৈরি দুটি শক্তিশালী পাওয়ার জেট এসএএম-১৪৬ জেট ইঞ্জিন ব্যবহার করা হয়েছে।
এদিকে রাশিয়ার গ্যাজপ্রম এভিয়ার জানিয়েছে, মস্কো থেকে ১১০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বের লুখোভিটসিতে সুখোই কর্পোরেশনের নিজস্ব ম্যানুফ্যাকচারিং প্লান্টে মেজর রিপিয়ার এন্ড মেইনটেনেন্স শেষে আকাশে তিনজন পাইলট ও ক্রু নিয়ে পরীক্ষামূলক উড্ডয়ন করে মস্কোর ভনুকোভো বিমানবন্দরের দিকে যাচ্ছিল। তবে এই বিমানটি খুব সম্ভবত কারিগরি ত্রুটিজনিত কারণে উড্ডয়নের মাত্র ৮ মিনিটের মাথায় আকাশেই বিধ্বস্ত হয়।
রাশিয়ার সুখোই কর্পোরেশনের তৈরি ছোট আকারের সুপারজেট ১০০ সিরিজের বিমানটির ম্যাক্সিমাম যাত্রী পরিবহণ সক্ষমতা ৯০ জন এবং এর ম্যাক্সিমাম রেঞ্জ ৪ হাজার ৫৭৮ কিলোমিটার। এটি প্রথম ২০১১ সালের ২১শে এপ্রিল বাণিজ্যিক যাত্রা শুরু করে। তবে চলতি ২০২৪ সালে ১২ই জুলাই পর্যন্ত মোট ৫টি এই সিরিজের বিমান বিধ্বস্ত হয়। আর এই বিমান দুর্ঘটনায় মোট ৯২ জন যাত্রী এবং ক্রু মৃত্যুবরণ করেন।
গত ২০২৩ সালে যাত্রী পরিবহণ বিমান ম্যানুফ্যাকচারিং ইন্ডাস্ট্রিজের গ্লোবাল মার্কেট ভ্যালু ছিল প্রায় ৩১৬.১ বিলিয়ন ডলার। যা চলতি ২০২৪ সাল শেষে হতে পারে আনুমানিক ৩৬০ বিলিয়ন ডলার থেকে ৪০০ বিলিয়ন ডলার। অথচ এই সুবিশাল বাণিজ্যিক যাত্রী পরিবহণ বিমান ম্যানুফ্যাকচারিং শিল্পে রাশিয়ার অবদান কিনা মাত্র ৫% বা তারও নিচে বলা চলে। রাশিয়া হাজার হাজার যুদ্ধবিমান তৈরি করলেও বাস্তবে আসলে কখনোই আমেরিকার বোয়িং কিংবা ইউরোপের এয়ারবাসের মতো গ্লোবাল এভিয়েশন সেক্টরে নিজের যোগ্য স্থান করে নিতে পারেনি।
তবে এদিকে অনেকটা দেরিতে হলেও রেড জায়ান্ট চীন কিন্তু তাদের নিজস্ব প্রযুক্তির সি-৯১৯ সিরিজের মিডিয়াম রেঞ্জের যাত্রী পরিবহণ বিমান ম্যানুফ্যাকচারিং শুরু করে দিয়েছে। আর দেশটির বেশ কিছু অভ্যন্তরীণ রুটে মিডিয়াম রেঞ্জের এই যাত্রী পরিবহণ বিমানের বাণিজ্যিক যাত্রা ইতোমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে। যদিও এখনো পর্যন্ত এই সি-৯১৯ সিরিজের বিমানের প্রযুক্তির প্রায় ৭০% পর্যন্ত আমেরিকা কিংবা ইউরোপের দেশগুলো থেকে আমদানি করে থাকে চীন।

আপনার মতামত দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.