মিস্ত্রিকে মারধর: বাদশাহ কন্যাকে ১০ মাসের কারাদন্ড দিলো ফ্রান্সের আদালত

এক মিস্ত্রিকে মারধরের অভিযোগে সৌদি আরবের বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ আল সৌদের মেয়ে হাসা বিনতে সালমানকে (৪৩) ১০ মাসের ও তার দেহরক্ষীকে আট মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন ফ্রান্সের আদালত। রায় ঘোষণার সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন না সৌদি রাজকন্যা ও তার দেহরক্ষী রানি সাইদি। ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে ঘটে যাওয়া ওই ঘটনার পরপরই তারা ফ্রান্স ত্যাগ করেন তারা। বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, কারাদণ্ডের পাশাপাশি সৌদি রাজকন্যা ও তার দেহরক্ষীকে যথাক্রমে প্রায় ১০ লাখ টাকা ও প্রায় পাঁচ লাখ টাকা অর্থদণ্ড দেয়া হয়। অভিযোগ উঠে, ২০১৬ সালে প্যারিসের একটি বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্টে আশরাফ ইদ নামে এক মিস্ত্রিকে পায়ে চুমু খেতে বাধ্য করেছিলেন হাসা বিনতে সালমান। বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্টে পাইপ ঠিক করতে এসেছিলেন ওই মিস্ত্রি। মিসরের নাগরিক আশরাফ মামলায় অভিযোগ করেন, ঘটনার দিন তাকে ওই অ্যাপার্টমেন্টের ষষ্ঠ তলায় ডেকে নেয়া হয় এবং রাজকুমারীর পায়ের পাতায় চুম্বন করতে বাধ্য করা হয়। একপর্যায়ে হাসা বিনতে সালমানের নির্দেশে তার দেহরক্ষী ওই কর্মীকে মারধর করেন, তাকে কয়েক ঘণ্টা বেঁধে রাখেন। তবে রাজকন্যা তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন। তার ভাষ্য, ওই কর্মী মোবাইলে তার (রাজকন্যা) ছবি তুলেছেন। ছবি তুলে সেগুলো বিক্রি করার মতলব এঁটেছিলেন। মারধরের শিকার ওই কর্মী বলছেন, তাকে শৌচাগারের বেসিন সংস্কার করার জন্য ডাকা হয়েছিল। ওই কাজের জন্যই তিনি শৌচাগারের ছবি তুলেছিলেন। রাজকন্যার ছবি তোলেননি তিনি। সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে বিবিসি বলছে, নিজের দাতব্য সংস্থা ও নারী অধিকারের পক্ষে কাজ করার জন্য হাসা বিনতে সালমান সৌদিতে বেশ প্রশংসিত। এদিকে কারাদণ্ডের রায় ঘোষণার পর হাসার আইনজীবী ইমানুয়েল মইন বলেন, এই মামলাটি কল্পনাপ্রসূত। তারা এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবেন। তার মক্কেল অত্যন্ত বিনয়ী, ভদ্র এবং সংস্কৃতিমনা। সৌদি আইনে এবং রাজকন্যার নিরাপত্তার খাতিরেই তার ছবি তোলাটা নিষিদ্ধ। এর আগে গত ৯ জুলাই রাজকন্যার অনুপস্থিতিতে বিচারকাজ শুরু করেন ফ্রান্সের আদালত। ২০১৮ সালের মার্চে ফ্রান্সের একটি আদালত হাসা ও তার দেহরক্ষীর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়।

Comments (০)
Add Comment