আমার ফুসফুসের ভেতর লড়াই চলছিল

ব্রিটেনে করোনাভাইরাস মৃত্যুর সংখ্যা এখন তিন হাজারের কাছাকাছি। কিন্তু তারপরও ৩৩ হাজারের বেশি সংক্রমিত মানুষের মধ্যে অনেকেই সম্পূর্ণভাবে সেরে উঠেছেন।

যারা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন এবং এখন সেরে উঠেছেন এমন তিন জন তাদের অভিজ্ঞতা জানিয়েছেন।

স্টুয়ার্ট বয়েল , শ্বাসকষ্ট থেকে তিনি টের পেয়েছিলেন যে ভাইরাস তার ফুসফুসকে আক্রমণ করেছে। বয়েলের দৃঢ় বিশ্বাস, কয়েক সপ্তাহ আগে গির্জার এক বৈঠক থেকেই তিনি করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হন।

“বৃহস্পতিবার ঐ বৈঠকে আমরা সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখেছিলাম। কিন্তু রোববারের মধ্যে আমাদের অনেকের মধ্যে ফ্লুয়ের মতো উপসর্গ দেখা দেয়,” সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন

এরপরের ১০ দিনের মধ্যে ৬৪-বছর বয়সী স্টুয়ার্টের অবস্থার অবনতি ঘটতে থাকে।

“প্রথমদিকে সমস্যাটা ছিল বেশি বোঝা যাচ্ছিল না,” তিনি ব্যাখ্যা করছেন, “কিন্তু সিঁড়ি বেয়ে ওপরতলায় ওঠার সময় আমি বুড়ো মানুষের মতো হাঁপাচ্ছিলাম। কিছুদিনের মধ্যেই আমার হাঁটাচলা করার ক্ষমতাও চলে গেল। ভাইরাস আমার ফুসফুসকে আক্রমণ করে বসলো, আর তাকে ঠেকানোর কোন ক্ষমতাই আর আমার রইলো না।”

স্টুয়ার্টের পরিবার তখন অ্যাম্বুলেন্স ডেকে আনে এবং তাকে হাসপাতালে সরিয়ে নেয়া হয়।

“ব্যাপারটা সিনেমার মত করে ঘটলো,” বলছিলেন তিনি, “তারা আমাকে হাসপাতালের ‘রেড জোন’-এ নিয়ে গেল। সেখানে নানা রকম পরীক্ষা চালানো হলো। তারা বুঝতে পারলো আমার করোনাভাইরাস হয়েছে। এরপর তারা আমার ফুসফুসে অক্সিজেন দেয়া শুরু করলো।”

“এর পরের কয়েক ঘণ্টা ধরে আমি বেশ কয়েকবার এমন একটা জায়গার কাছাকাছি চলে গিয়েছিলাম যে জায়গাটা ছিল খুবই অন্ধকার। আমার ভাবলাম, ‘এই বোধহয় শেষ।’ কিন্তু আমি বাঁচতে চাইছিলাম।”

“আমার ফুসফুসের ভেতরে যে লড়াই চলছিল তা আমি খুব টের পাচ্ছিলাম। আমার অবশিষ্ট শক্তি দিয়ে এই লড়াই চালাতে হয়েছিল। অতিরিক্ত অক্সিজেন পাওয়ার পর আমার দেহ বল ফিরে পায় এবং অবশিষ্ট শক্তি দিয়ে ভাইরাসকে দেহ থেকে বের করে দেয়। হাসপাতালের কর্মীরা কাজ করছিলেন চমৎকারভাবে। কিন্তু আপনাকে সাহায্য করার চাইতে বেশি কিছু তারা করতে পারবেন না। এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে নেই কোন ওষুধ। আপনাকে একমাত্র রক্ষা করতে পারবে আপনার সৃষ্টিকর্তা ও রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা।”

কিছুদিন আগে স্টুয়ার্টকে হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরিয়ে আনা হয়। তিনি বাড়িতে এখন স্বেচ্ছায় বিচ্ছিন্ন অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন। তার শ্বাসনালী এবং ফুসফুসের উপশমের জন্য তিনি প্রচুর পানি পান করছেন।

Comments (০)
Add Comment