ভারত-চীন সামরিক কর্মকর্তাদের সীমান্ত বৈঠক

তৃতীয়বারের জন্য ভারত-চীন সামরিক কর্তারা সীমান্ত বৈঠক করেছেন। সীমান্ত সংঘর্ষে একের পর এক আলোচনা বেশ অনেকটা নজরকাড়া হলেও তা বিশেষ ফলপ্রসু হয়নি। উল্টো চাপ ক্রমশ বেড়েই চলেছে দু’দেশের মধ্যে।

জানা গেছে, মঙ্গলবারের এই বৈঠক ১২ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে চলে রাত ১১টার পরে তা শেষ হয়েছে। এহেন পরিস্থিতিতে চাপ-উত্তেজনা এতটাই বেশি যে, গত ৭২ ঘণ্টায় বেড়েছে সেনা মোতায়েন।

চীন ক্রমশ নিজের শক্তি প্রদর্শন করতে ভেতরের দিকে ঘাঁটি তৈরি করতে শুরু করেছে। সূত্রের খবর, ইতোমধ্যেই ফিংগার-৪-এর ভেতরে স্থায়ীভাবে নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করেছে চীন। ভারতকে চাপে রাখতে এক এক ধাপ এগিয়ে আসছে চীন।

দু-তিন কিলোমিটার রাস্তা পিছু হটা নিয়ে বিবাদ, ভারত-চীন মিলিটারি স্তরের আলোচনায় যা ইতোমধ্যেই পরিষ্কার হয়েছে। প্যাংগং লেক এবং গালওয়ান উপত্যকা সমস্যা সমাধানে ভারত বা চীন কেউই সেনা সরাতে রাজি নয় বলেই জানা যাচ্ছে।

ভারতের তরফে জানানো হয়েছে, প্যাংগং লেকে তিন কিলোমিটার পিছু হটা কিছুতেই সম্ভব নয়, কারণ তাহলে ফিংগার-৪ থেকে সরে আসতে হবে। এই ফিংগার-৪ সবসময় ভারতের নিয়ন্ত্রণে ছিল। ভারত ফিংগার-৮-এ লাইন অফ অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোল দাবি করে।

ভারতের উপর নজরদারি বাড়াতে বর্তমানে ফিংগার-এ ঘাঁটি তৈরি করেছে পিপলস লিবারেশন আর্মি। সেখানেই বাঙ্কার এবং নজরদারি ব্যাবস্থা করে পোস্ট তৈরি করেছে চীন। ফিংগার-৪ থেকে ফিংগার-৮-এর মাঝে ৮ কিলোমিটার দূরত্বে মূলত এই কাজ টানা চালিয়ে যাচ্ছে চীন।

একইরকমভাবেই, গালওয়ান পেট্রোল পয়েন্ট ১৪-তে চীন দুই থেকে তিন কিলোমিটার পিছু হটতে রাজি নয়। প্রতিরক্ষা সূত্রের খবর, ডেপসাং এবং ডেমচকেও একইরকমভাবে সৈন্য সাজিয়েছে চীন। মঙ্গলবারের একটি বৈঠকে সব বিতর্কিত অঞ্চলগুলি এদিনের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠবে।

চীন শেষ আলোচনায় জানিয়েছিল, গালওয়ানের ‘ক্লেমড লাইন’ থেকে ৮০০ মিটার দূরে ছিল জুন মাসের ২২ তারিখ সীমান্ত সামরিক কর্মকর্তা স্তরে আলোচনায় চীন বারবার জানিয়েছে, গালওয়ান উপত্যকার পিপি-১৪-এ চীন সেনা প্রায় ১০০-১৫০ মিটার সরে গিয়েছে।

লাইন অফ কন্ট্রোলে পিপি-১৪ থেকে শেষ অবধি সবকটি পেট্রোল পয়েন্ট ভারতের, তেমনটাই দাবি জানিয়েছে ভারত তবে তারা ক্যাম্প তৈরি করেনি ভারত কারণ সেভাবেই চুক্তিবদ্ধ দুই দেশ।

তবে যেহেতু চীনের তরফে ওখানেই তাঁবু খাটিয়েছে তাই নিজেদের রক্ষা করতে ভারতীয় সেনার তরফেও একই কাজ করা হয়েছে। জুনের ১৫ তারিখ ভারত-চীন পিপি-১৪-এ রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে লেগেছিল। ভারতীয় সেনার ২০ জন সেনা মারা গিয়েছিল। তবে চীনের তরফে কতজন প্রাণ হারিয়েছে যে বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনও তথ্য পাওয়া যায়নি।

তবে ভারত-চীন সীমান্ত সংঘাতের চাপ এখন আর এক বা দুই জায়গার মধ্যে সীমিত নেই। গোটা পূর্ব লাদাখ জুড়ে চীনের বর্তমান অবস্থান বদলাতে উঠে পরে লেগেছে চীন।

Comments (০)
Add Comment