তাইওয়ানের হাইকুন ক্লাস কি এই নরহুয়াল সাবমেরিন?

সিরাজুর রহমান, বিশেষ প্রতিনিধি#

চীনের সাথে ব্যাপক মাত্রায় সামরিক উত্তেজনা বিরাজ করায় তাইওয়ান এবার নিজস্ব প্রযুক্তির ডিফেন্স সিস্টেম তৈরিতে নজর দিয়েছে । এ জন্য দেশটি নিজের আর্থিক সক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার ব্যয় করে যাচ্ছে সামরিক সরঞ্জাম উৎপাদনে। বিশেষ করে আমেরিকার প্রযুক্তিগত সহায়তায় তাইওয়ান নিজস্ব প্রযুক্তির যুদ্ধবিমান, সেলফ প্রোপেলড আর্টিলারি, এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম, ল্যান্ড বেসড ব্যালেস্টিক এন্ড এন্টিশীপ মিসাইল তৈরির পর এবার প্রথম বারের মতো একটি ডেডিকেটেড কনভেনশনাল পাওয়ারড ডিজেল ইলেকট্রিক সাবমেরিন তৈরি সম্পন্ন করল।

মূলত গত ২৮শে সেপ্টেম্বর নিজস্ব প্রযুক্তির তৈরি হাইকুন ক্লাস “Narwhal” ডিজেল ইলেক্ট্রিক অ্যাটাক সাবমেরিন আনুষ্ঠানিকভাবে উন্মোচন করেন দেশটির প্রেসিডেন্ট। তাইওয়ান এই জাতীয় মোট ৮টি সাবমেরিন তৈরির পরিকল্পনা করেছে। যা আগামী ২০২৭ সালের মধ্যেই সার্ভিসে চলে আসবে বলে আশা করে দেশটির নৌবাহিনী (রিপাবলিক অব চায়না নেভি)। তবে তাইওয়ানের প্রথম নির্মিত ‘হাইকুন’ ক্লাস ডিজেল ইলেকট্রিক সাবমেরিন একাধিক সী ট্রায়াল শেষে ২০২৪ সালের শেষের দিকে কিংবা ২০২৫ সালের শুরুতে নৌবাহিনীতে সার্ভিসে আসতে পারে। তাইওয়ানের ‘সিএসবিসি’ কর্পোরেশন এর নির্মাণ কাজ শুরু করে গত ২০২০ সাল থেকে।

২,৫০০ টন ওজনের এই ডিজেল ইলেকট্রিক সাবমেরিনের রেঞ্জ অবিশ্বাস্যভাবে প্রায় ১১ হাজার কিলোমিটার হবে বলে জানানো হয়েছে তাইওয়ানের তরফে। এর দৈর্ঘ্য ওভার অল ৭০ মিটার এবং সাবমার্জড অবস্থায় সর্বোচ্চ গতি হচ্ছে প্রায় ১৭ নটিক্যাল মাইল। এটি সাগরের বুকে ৩৫০ থেকে ৪২০ মিটার গভীরে লুকিয়ে থেকে তার কমব্যাট মিশন পরিচালনা করতে সক্ষম। আর সাগরের বুকে দীর্ঘদিন লুকিয়ে থাকার অন্য এতে শক্তিশালী লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারি টেকনোলজি সিস্টেম ব্যবহার করা হয়েছে।

এর প্রজেক্ট কস্ট ৩ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার ধরা হলেও প্রতিটি হাইকুন ক্লাস সাবমেরিনের পার ইউনিট ইস্টেমেটেড কস্ট নির্ধারণ করা হয়েছে ১৮০ মিলিয়ন ডলার। এই সাবমেরিনের প্রধান অস্ত্র হিসেবে আমেরিকার তৈরি হাই এক্সপ্লুসিভ এমকে-৪৮ এমওডি৬ এটি টর্পেডো এবং ইউজিএম-৮৪এল হারপুন এন্টিশীপ মিসাইল অপারেট করা হবে। এখানে প্রকাশ থাকে যে প্রতিটি অ্যাডভান্স এমকে-৪৮ সিরিজের টর্পেডোর ইউনিট কস্ট প্রায় ৫ দশমিক ৪ মিলিয়ন ডলার এবং ইউজিএম-৮৪এল হারপুন এন্টিশীপ মিসাইলের পার ইউনিট কস্ট প্রায় ২ মিলিয়ন ডলার।

বর্তমানে তাইওয়ানের নৌবাহিনী (রিপাবলিক অব চায়না নেভি) মোট ৪টি পুরোনো ডিজেল ইলেকট্রিক অ্যাটাক সাবমেরিন অপারেট করে। যা পর্যায়ক্রমে অবসরে পাঠিয়ে নিজস্ব প্রযুক্তির তৈরি অ্যাটাক সাবমেরিন দ্বারা রিপ্লেস করতে চায় তাইওয়ান। তাছাড়া গত ৩০শে আগস্ট দেশটির সরকার ইতিহাসে সর্বোচ্চ রেকর্ড পরিমাণে ১৯.১ বিলিয়ন ডলারের সামরিক ও প্রতিরক্ষা বাজেট অনুমোদন করে। যার একটি বড় অংশ ব্যয় করা হবে আমেরিকা থেকে উচ্চ প্রযুক্তির অস্ত্র, মিসাইল ও সামরিক সাজ সরঞ্জাম ক্রয় করতে।##

Narwhal submarinতাইওয়ানের সামরিক শক্তি#নরহুয়াল সাবমেরিনসাবমেরিন
Comments (০)
Add Comment