-- বিজ্ঞাপন ---

ওপেনএআই গবেষক সুচির বলাজির মৃতদেহ পড়েছিল ক্যালিফোর্নিয়ার বাসভবনে

চ্যাটজিপিটির সমালোচনার কারেনই কি রহস্যজনক মৃত্যু

বিশেষ প্রতিনিধি#

ভারতীয় বংশোদ্ভূত এআই বিশেষজ্ঞ এবং প্রাক্তন ওপেনএআই গবেষক সুচির বলাজি সম্প্রতি ক্যালিফোর্নিয়ায় রহস্যজনকভাবে মৃত অবস্থায় উদ্ধার হয়েছেন। তার মৃত্যুর কারণ এখনও স্পষ্ট নয়। বলাজি ওপেনএআই-এর কার্যক্রম সম্পর্কে তার উন্মুক্ত সমালোচনার কারণে শিরোনামে এসেছিলেন, বিশেষ করে কপিরাইট লঙ্ঘনের অভিযোগ এবং এআই মডেল প্রশিক্ষণে ডেটার ব্যবহারের নৈতিকতা নিয়ে। তিনি চলতি বছরের শুরুর দিকে ওপেনএআই থেকে পদত্যাগ করেন, সংস্থার নৈতিক দিকনির্দেশনা এবং ডেটার সঠিক ব্যবহারের মতো বিষয়গুলো নিয়ে দ্বিমতের কারণে।

বলাজির মৃত্যুর তদন্ত চলছে, এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো সম্ভাব্য সব দিক খতিয়ে দেখছে। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, যে তার উন্মুক্ত মতামত তাকে কোনো ঝুঁকিতে ফেলেছিল কিনা তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এই ঘটনা এমন এক সময়ে ঘটেছে যখন ওপেনএআই এবং অন্যান্য এআই কোম্পানিগুলো কপিরাইট লঙ্ঘন এবং অন্যান্য নৈতিক ইস্যু নিয়ে ক্রমবর্ধমান সমালোচনার মুখোমুখি।

বলাজি ২০২০ সালের নভেম্বর মাসে ওপেনএআই-এ যোগ দেন এবং ২০২৪ সালের আগস্ট পর্যন্ত গবেষক হিসেবে কাজ করেন। এই সময়ে তিনি জিপিটি-৪ মডেলের মতো প্রকল্পে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছিলেন। তবে তিনি সংস্থার নৈতিক চর্চা এবং কপিরাইট করা ডেটার ব্যবহারের বিষয়ে সমালোচনামূলক হয়ে ওঠেন। ওপেনএআই ত্যাগ করার পর তিনি কপিরাইট আইন লঙ্ঘন এবং ডেটার যথাযথ ব্যবহারের জন্য কঠোর নিয়ম-নীতির প্রয়োজনীয়তা নিয়ে সোচ্চার হন।

সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, সুচির বলাজিকে সান ফ্রান্সিসকোতে তার অ্যাপার্টমেন্টে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়, এবং এটি আত্মহত্যা বলে উল্লেখ করা হয়েছে। মৃত্যুর কিছুদিন আগে তিনি ওপেনএআই-এর বিরুদ্ধে কপিরাইট লঙ্ঘনের অভিযোগ উত্থাপন করেছিলেন এবং কপিরাইট সংক্রান্ত একটি মামলায় তার নামও উঠে আসে। এই বিষয়টি এআই উন্নয়নে নৈতিক এবং আইনি চ্যালেঞ্জ নিয়ে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

আনন্দবাজার উল্লেখ করেছে, ভারতীয় বংশোদ্ভূত এআই বিশেষজ্ঞ সুচির বালাজির রহস্যমৃত্যু ক্যালিফর্নিয়ায়। এআই বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে কাজ করতেন তিনি। ওপেনএআই সংস্থার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন দীর্ঘ চার বছর। সম্প্রতি সংস্থার বিরুদ্ধে কথা বলেছিলেন সুচির। তার পরেই ফ্ল্যাট থেকে তাঁর দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে একে আত্মহত্যার ঘটনা বলেই মনে করছে পুলিশ।

২৬ বছর বয়সি সুচির ওপেনএআই সংস্থায় যোগ দেন ২০২০ সালের নভেম্বরে। ২০২৪ সালের অগস্ট পর্যন্ত সেখানে গবেষক হিসাবে কাজ করেন তিনি। বর্তমানে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বিষয়ক সবচেয়ে জনপ্রিয় অ্যাপ্লিকেশন চ্যাটজিপিটি। এই চ্যাটজিপিটির স্রষ্টা ওপেনএআই। ২০১৫ সালে ইলন মাস্ক এবং স্যাম অল্টম্যান একসঙ্গে এই সংস্থাটির সূচনা করেছিলেন। পরে ২০১৮ সালে মাস্ক ওই সংস্থা থেকে বেরিয়ে আসেন।

ওপেনএআইয়ের মালিক অল্টম্যানের সঙ্গে মাস্কের বিরোধ অনেকেরই জানা। সুচিরের মৃত্যুর পর তাৎপর্যপূর্ণ পোস্ট করেছেন মাস্ক। মৃত্যুর খবরটি সমাজমাধ্যমে শেয়ার করে তিনি লিখেছেন কেবল একটি শব্দ— ‘হুমম’।

স্যান ফ্রান্সিস্কোর বুচানন স্ট্রিটের অ্যাপার্টমেন্টে থাকতেন সুচির। গত ২৬ নভেম্বর সেখান থেকে তাঁর দেহ উদ্ধার হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। খবরটি প্রকাশ্যে এসেছে শনিবার।স্যান ফ্রান্সিস্কো মুখপাত্র রবার্ট রুয়েকা জানিয়েছেন, প্রাথমিক ভাবে সুচিরের মৃত্যুকে আত্মহত্যার ঘটনা বলেই মনে করা হচ্ছে। কারণ, প্রাথমিক তদন্তে কোনও ষড়যন্ত্রের প্রমাণ মেলেনি।

ওপেনএআই-এর বিরুদ্ধে মুখ খুলেছিলেন সুচির। তিনি প্রকাশ্যেই দাবি করেছিলেন, তাঁর সংস্থা কপিরাইট আইন ভঙ্গ করছে। চ্যাটজিপিটির মতো প্রযুক্তি ইন্টারনেটের ক্ষতি করছে বলেও দাবি করেছিলেন সুচির। নিউ ইয়র্ক টাইম্‌সে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছিলেন, তাঁকে সংস্থা ছেড়ে দিতে হবে।

চ্যাটজিপিটি নিয়ে দেড় বছরের বেশি সময় কাজ করেছিলেন সুচির। সংস্থার বিরুদ্ধে মুখ খোলার পরেই তাঁর রহস্যমৃত্যু নতুন জল্পনা তৈরি করেছে। বিতর্কে ঘি ঢেলেছে মাস্কের পোস্ট।##

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.