বর্তমানে সারা বিশ্বজুড়ে ক্রীতদাস বা নামমাত্র আর্থিক সুবিধায় বাধ্যতামূলক কায়িক শ্রমে নিয়জিত রয়েছেন প্রায় ৪ কোটি শিশু ও প্রাপ্তবয়স্ক নারী পুরুষ। তবে সংখ্যার বিচারে বিশ্বে সবচেয়ে বেশি ক্রীতদাস রয়েছে ভারতে। অন্যদিকে মোট জনসংখ্যার শতকরা হিসেবে সবচেয়ে বেশি ক্রীতদাস রয়েছেন আফ্রিকার দেশ মৌরিতানিয়ায়।
একাধিক গবেষণার তথ্য অনুযায়ী ২০২১ সালের শেষে ভারতে ১ কোটি ২০ লাখের বেশি মানুষ অনেকটা শৃঙ্খলিত ক্রীতদাসের মতো জীবন যাপন করতে বাধ্য হচ্ছেন বা হন। তবে গ্লোবাল স্লেভারি ইনডেক্স দেয়া তথ্যমতে ২০১৬ সালে ভারতে আধুনিক এবং অমানবিক ক্রিতদাসের শিকার হয়েছিলেন প্রায় ৮ মিলিয়ন বা ৮০ লক্ষ সাধারণ মানুষ। যদিও বাস্তবে প্রদত্ত পরিসংখ্যানটি যুক্তিসঙ্গত কারণে কিছুটা কম বা বেশি হতে পারে।
আবার ভারতের পরই আশ্চর্যজনক ভাবে বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনৈতিক পরাশক্তি চীনের অবস্থান। চীনে বর্তমানে প্রায় ৩৩.০০ লাখেরও বেশি মানুষ আধুনিক ও বর্বর দাসত্বের স্বীকার। তাছারা চীনের পরেই আছে পাকিস্তান আর তারপর উজবেকিস্তান। ক্রীতদাস সূচকের পঞ্চম স্থানে রয়েছে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম সুপার পাওয়ার রাশিয়া। গ্লোবাল স্লেভারি ইনডেক্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী ২০১৮ সালে রাশিয়ায় প্রতি হাজারে প্রায় ৫.৫ জন আধুনিক দাসত্বের শিকার হন।
২০২১ সালের হিসেব অনুযায়ী পাকিস্তানে মোট প্রায় ৩১ লক্ষ ৮৬ হাজার সাধারণ মানুষ আধুনিক এক বর্বর দাসত্বের নির্মম শিকার হন। অত্যন্ত দুঃখজনক হলেও সত্য যে, মৌরিতানিয়ার মোট জনসংখ্যার প্রায় ৫.০০% ক্রীতদাসের জীবন যাপন করে এবং আফ্রিকা মহাদেশের অনেক দেশের মানুষ পরিবেশগত ভাবে জন্মসূত্রেই দুর্ভাগ্যজনকভাবে ক্রীতদাসের জীবন পার করতে বাধ্য হচ্ছেন। জনসংখ্যার হারের বিচারে মৌরিতানিয়ার পর সবচেয়ে বেশি ক্রীতদাস মানুষ আছে উজবেকিস্তানে। দেশটির জনসংখ্যার প্রায় ৪% সাধারণ মানুষ এ ধরনের জীবন কাটাতে বাধ্য হন।
তবে এত কিছুর পরেও একটি শুভ সংবাদ হচ্ছে যে, বাংলাদেশে কিন্তু কৃতদাসত্বের শৃঙ্খলিত ভয়াবহ জীবন ব্যবস্থা এক রকম নেই বললেই চলে। তবে গ্রামীণ পর্যায়ে এখনও পর্যন্ত বাল্যবিবাহের মতো অনৈতিক এবং আইন বিরোধী কাজ পুরোপুরি বন্ধ করা সম্ভব না হলেও তা কিন্তু পর্যায়ক্রমে কমে আসছে। তাছাড়া মানব সম্পদ উন্নয়ন সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান এক মডেল রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্ব দরবারে ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না।#