--- বিজ্ঞাপন ---

রক্তাক্ত হলি আর্টিসান, সাত জনের মৃত্যুদন্ড

১৭ জন বিদেশীসহ ২৮ জনকে নির্মমভাবে হত্যা করে জঙ্গীরা

0

 

বাংলাদেশের মানুষের কাছে যে তারিখটি স্মরনীয় হয়ে থাকবে ১ জুলাই ২০১৬। রাত তখন ৯টা ২০ মিনিট। গুলশানে অবস্থানরত কিছু বিদেশী নিজেদের রাতের ডিনার সারতে এসেছেন রেস্তোরা হলি আর্টিসানে। কেউ কেউ ডিনার করছিলেন, চলছিলো নিজেদের মধ্যে আলাপ আলোচনা। হঠাৎ ‘আল্লাহ আকবর’ ধ্বনিতে প্রকম্পিত হয়ে উঠে রেস্তোরাটি, সাথে সাথে গুলিবর্ষনও শুরু হয়। বিদেশীদের মধ্যে নিরীহ জাপানীরাই ছিলেন বেশি। পৃথিবীর সবচেয়ে ভদ্র মানুষ এরা। গুলিবর্ষরকারীরা রেস্তোরাতে ঢুকে সবাইকে জিম্মী করে ফেলে। ভেতরে তখন দেশি বিদেশী মিলে কয়েক ডজন মানুষ। আতংকিত মানুষগুলোর মধ্যে তখন নিজেদের বাচাঁনোর লড়াই চলছিল। দ্রুত পুলিশ আসলেও জঙ্গীদের ভারী অস্ত্রের কাছে হার মানে তারা। তাদের হাতে আর্জেস গ্রেনেড। বাইরে পড়ে থাকে ৪ পুলিশের লাশ। ভেতরে কি হচ্ছে জানতে তখন সারাদেশের মানুষ জেগে আছে। সকাল হতে হতে খবর বের হয় ১৭ জন বিদেশীসহ ২৮ জনকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে।

রায় হয়েছে আজ 

গুলশানের হলি আর্টিজানে হামলা মামলায় সাত জঙ্গিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আদালত। দৈনিকে ইত্তেফাক সূত্রে জানা গেছে, বুধবার ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মজিবুর রহমান এ রায় ঘোষণা করেন। এছাড়াও প্রত্যেক আসামিকে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানাও করা হয়। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলো : হামলার মূল সমন্বয়ক বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত কানাডার নাগরিক তামিম চৌধুরীর সহযোগী আসলাম হোসেন ওরফে রাশেদ ওরফে আবু জাররা, অস্ত্র ও বিস্ফোরক সরবরাহকারী নব্য জেএমবির নেতা হাদিসুর রহমান সাগর, জঙ্গি রাকিবুল হাসান রিগ্যান, জাহাঙ্গীর আলম ওরফে রাজীব ওরফে রাজীব গান্ধী, হামলার অন্যতম পরিকল্পনাকারী আব্দুস সবুর খান (হাসান) ওরফে সোহেল মাহফুজ, শরিফুল ইসলাম ও মামুনুর রশিদ। আট আসামির মধ্যে নব্য জেএমবির অস্ত্র ও বিস্ফোরক শাখার প্রধান মিজানুর রহমান ওরফে বড়ো মিজানকে খালাস দিয়েছে আদালত। রায় পড়ার সময় সব আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে গত ১৭ নভেম্বর রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে বিচারক রায় ঘোষণার জন্য ২৭ নভেম্বর নির্ধারণ করেন। এ পর্যন্ত মোট ১১৩ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য নিয়েছে ট্রাইব্যুনাল। ২০১৮ সালের ২৬ নভেম্বর আট আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে আদালত। একই বছরের ২৩ জুলাই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কাউন্টার টেররিজম বিভাগের পরিদর্শক হুমায়ূন কবির মুখ্য মহানগর হাকিম (সিএমএম) আদালতের জিআর শাখায় মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করেন। পরে ২৬ জুলাই সিএমএম আদালত মামলাটি ট্রাইব্যুনালে বদলির আদেশ দেয়।

অভিযোগপত্রে নাম থাকা ২১ আসামির মধ্যে ১৩ জন মারা যাওয়ায় তাদের মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। নিহত ১৩ জনের মধ্যে আট জন বিভিন্ন অভিযানে এবং পাঁচ জন ঘটনাস্থলে নিহত হয়

ফিরে দেখা…

কি ছিল তাদের দাবী

তারা যখন দেশি বিদেশী মানুষগুলোকে জিম্মী করে রাখে তখন  আইন শৃঙ্খলা বাহিনী বার বার মাইকে জিম্মিদের ছেড়ে দিয়ে আত্মসমার্পন করতে আহবান জানায়। এ সময়  জঙ্গিরা তিনটি শর্ত দেয

১.ডেমরা থেকে আটক জেএমবি নেতা খালেদ সাইফুল্লাহকে মুক্তি দিতে হবে।
২.তাদেরকে নিরাপদে বের হয়ে যেতে দিতে হবে।
৩. ইসলামকে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য তাদের এই অভিযান- স্বীকৃতি দিতে হবে।

এরই মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলে আসে রক্তাক্ত লাশের ছবি। এরপর কি আর নীরব থাকা যায়। ভেতরে রক্তের হোলিখেলা চালাচ্ছে জঙ্গীরা। বাইরে অসহায় মানুষ। সারা বিশ্বের নজর তখন বাংলাদেশে। বিশেষ করে জাপানের বিভিন্ন পরিবারে চলছিল শোকের মাতম। এ অবস্থায় হস্তক্ষেপ করেন সরকার প্রধান। শুরু হয় অপারেশন থান্ডারবোল্ট।

অপারেশন থান্ডারবোল্ট

অবস্থা যখন আর সামাল দেয়া যাচ্ছে না তখন দায়িত্ব নেয় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। তারা পুরো অপারেশনের নাম দেয় ‘অপারেশন থান্ডারবোল্ট’। ৬ জুলাই শুক্রবার রাত থেকে সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে অবস্থানরত আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও গোয়েন্দা বাহিনীর সদস্যদের কাছ থেকে বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করে। সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে নৌবাহিনী, বিমান বাহিনী, বিজিবি, পুলিশ, র‌্যাবসহ যৌথভাবে অপারেশন থান্ডারবোল্ট পরিচালনা করা হয়। সেনাবাহিনীর প্যারাকমান্ডোর নেতৃত্বে ঘটনা শুরুর পরদিন, শনিবার, সকাল ৭টা ৪০ মিনিটে অপারেশন শুরু করে ১২-১৩ মিনিটে ঘটনাস্থলের নিয়ন্ত্রণ নেয়া হয়। পরবর্তীতে সকাল সাড়ে ৮টার দিকে অভিযানের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়। ঘটনাস্থল থেকে প্রাথমিকভাবে সন্ত্রাসীদের ব্যবহৃত ৪টি পিস্তল, একটি ফোল্ডেডবাট একে-২২, ৪টি অবিস্ফোরিত আইআইডি, একটি ওয়াকিটকি সেট ও ধারালো দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। বিশ জন বিদেশী নাগরিক, ছয় জন বন্দুকধারী এবং দুই জন পুলিশ কর্মকর্তা ঘটনার রাতেই নিহত হন। বিদেশীদের ধারালো অস্ত্র দিয়ে হত্যা করা হয়। যেখানে আরও পঞ্চাশ জন, যাদের বেশিরভাগ পুলিশ সদস্য,আহত হন। নিহতদের মধ্যে দুই জন পুলিশ কর্মকর্তা ছিলেন, যাদের একজন ঢাকা পুলিশের বিভাগের একজন সহকারী কমিশনার এবং অন্যজন বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। নিহতদের মধ্যে জাপানি ও ইতালীয় নাগরিক ছিল। ১৯ বছর বয়সী এক ভারতীয় নাগরিকও নিহত হয়। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রাথমিকভাবে ঘোষণা করে যে নিহতদের সকলে বিদেশী ছিল এবং তারা অপরাধীরা যাদের “ধারালো অস্ত্র দ্বারা নির্মমভাবে হত্যা করেছিল”।  এদের মধ্যে যারা কোরান থেকে একটি আয়াত বলতে পেরেছিল শুধুমাত্র সেসকল অ-মুসলিমরা রক্ষা পেয়েছিল। পরে মৃতদেহগুলির মাঝে বেকারির একজন শেফের লাশ শনাক করা হয়। ৮ জুলাই ২০১৬ তারিখে বেকারির একজন আহত কর্মী  হাসপাতালে মারা যান

নিহতদের মধ্যে সাত জন জাপানি নাগরিক ছিল – পাঁচ জন পুরুষ এবং দুই জন নারী – যাদের জাপানী সংস্থা  জাইকার সাথে যুক্ত ছিল। সেই সময় নারীদের মধ্যে একজন গর্ভবতী ছিলেন। তরিশি জৈন নামের একজন ভারতীয় জাতীয়তার, বার্কলির ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯ বছর বয়সী ছাত্রীকেও হত্যা করা হয়।

যাদের হত্যা করা হয়

ক্রিস্তিয়ান রসসি (ইতালীয়)
মার্কো তোন্ডাত (ইতালীয়)
নাদিয়া বেনেদেত্তি (ইতালীয়)
আদেলে পুলিসি (ইতালীয়)
সিমোনা মন্তি (ইতালীয়)
ক্লাউদিয়া মারিয়া ড’আন্তোনা (ইতালীয়)
ভিনসেনজো ড’আল্লেস্ত্রো (ইতালীয়)
মারিয়া রিভোলি (ইতালীয়)
ক্লাউডিও কাপ্পেল্লি (ইতালীয়)
হিদেকি হাশিমোতো (জাপানি)
নোবুহিরো কুরোসাকি (জাপানি)
কয়ো অগাসাওয়ারা (জাপানি)
মকোতো ওকামুরা (জাপানি)
ইউকো সাকি (জাপানি)
রুই শিমোদাইরা ( জাপানি)
হিরোশি তানাকা (জাপানি)
ফারাজ আইয়াজ হোসেন(বাংলাদেশী)
ইশরাত আখন্দ (বাংলাদেশী)
রবীউল করিম (বাংলাদেশী)
সালাউদ্দিন খান (বাংলাদেশী)
সাইফুল ইসলাম চৌকিদার (বাংলাদেশী)
জাকির হোসেন শাওন (বাংলাদেশী)
আবিনতা কবির (বাংলাদেশী)
তরিশি জৈন (ভারতীয়)

সামরিক অভিযানের সময় নিহত পাঁচজন সন্ত্রাসী হল

নিবরাস ইসলাম
রোহান ইমতিয়াজ
মীর সামেদ মোবাশ্বে
খায়রুল ইসলাম
শফিকুল ইসলাম

আহতদের মধ্যে ২৫ জন পুলিশ সদস্য ছিলেন। এদের মধ্যে ছিলেন অতিরিক্ত মহানগরসহ ঢাকা মহানগর পুলিশের বিভিন্ন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, দুই অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক, গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও একজন পরিদর্শক।

ইতালীয় উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী মারিও জিরো বাংলাদেশে আসেন এবং ঘটনার স্থল পরিদর্শন করেন। এরপর তিনি ইতালীয় ৯ ব্যক্তির লাশ নিয়ে ইতালিতে ফিরে যান। ময়নাতদন্তে পাওয়া যায় যে ৯ ইতালীয় নাগরিককে হত্যার আগে নিষ্ঠুরভাবে নির্যাতন করা হয়। মৃত্যুর আগে কয়েকজনকে ছুরি দিয়ে আঘাত করা হয় ও কয়েকজনের শরীরের অঙ্গ বিচ্ছিন্ন করে ফেলা হয়। পরে তারা ধীরে ধীরে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে মারা যায়। নয় ইতালীয় নাগরিক “মন্থর ও যন্ত্রণাদায়ক মৃত্যু” ভোগ করে বলে কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করে।

এই হামলার সাতজন জাপানী নাগরিকের লাশ দেখতে ও তাদের সনাক্ত করার জন্য জাপানি নাগরিকদের স্বজনরা বাংলাদেশে আসেন, তাদের সঙ্গ দেন জেষ্ঠ্য উপ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সেইজি কিহারা। তাদের সাথে জাপানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ও দেশটির দাতা সংস্থা জাইকার কয়েকজন কর্মকর্তাও আসেন। ঢাকার বনানীর আর্মি স্টেডিয়ামে নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয় যেখানে জাপানের বাংলাদেশে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত মাসাতো ওয়াতানাবে উপস্থিত থাকেন।

আইএস-এর দায় স্বীকার

ইসলামিক স্টেটের অধিভুক্ত, আমেক সংবাদ সংস্থা, এই হামলার দায় স্বীকার করে এবং ২০ জনকে হত্যার দাবি জানায়। ঘটনার পর তারা একটি ভিডিও প্রকাশ করে এবং হুমকি দেয় এটি সবেমাত্র শুরু ভবিষ্যতে আরো হামলা হবে।

বিশ্বব্যাপি নিন্দার ঝড়

এই ঘটনায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন। তিনি একে ধর্ম ও মানবতার অবমাননা বলে মন্তব্য করেন। তার মতে ইসলাম শান্তির ধর্ম এবং ইসলামের নামে মানুষ হত্যা বন্ধ হওয়া উচিত্। তিনি বলেন “দেশবাসীকে সঙ্গে নিয়ে যে কোন মূল্যে আমরা ষড়যন্ত্রকারীদের চক্রান্ত প্রতিহত করব।রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদ এই সন্ত্রাসী হামলার তীব্র নিন্দা জানান। এছাড়া তিনি জিম্মি সংকটের অবসানে যৌথ অভিযানে অংশ নেয়া যৌথ বাহিনীর সদস্যদের ধন্যবাদ জানান। ইতালির প্রধানমন্ত্রী মাত্তেও রেনসি নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে বলেন, “আমাদের মূল্যবোধ ঘৃণা ও সন্ত্রাস থেকে অনেক শক্তিশালী।” এছাড়া তিনি এই ঘটনাকে “বেদনাদায়ক ক্ষতি” বলে মন্তব্য করেন। জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনযো আবে সন্ত্রাসীদের হাতে জিম্মি জাপানিদের জীবিত উদ্ধারে ঢাকাস্থ দূতাবাসে নির্দেশনা দেয়ার কথা এক সংবাদ সম্মেলনে জানান এবং তিনি এটিকে “দুঃখজনক” হিসেবে আখ্যা দেন। এছাড়া অন্যান্য জাপানি সরকারি কর্মকর্তা ও সংস্থা যাদের মধ্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফুমিও কিশিদার, মন্ত্রিসভার মুখ্য সহকারী সচিব কোইচি হাগুইদা, মন্ত্রিসভার সহকারী সচিব ইয়োশিহিদে সুগা, জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা) এই ঘটনায় তাদের উদ্বেগ প্রকাশ করে এবং এই হত্যাকাণ্ডের নিন্দা করে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন “ঢাকায় আক্রমণ আমাদের অনেক কষ্ট দিয়েছে। আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে কথা বলেছি এবং এ আক্রমণের তীব্র নিন্দা জানাই।” মালয়েশিয়ার সে সময়কার প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাক এই ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে সমগ্র বিশ্ব এর মুসলিমদের সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে এক হওয়ার কথা বলেন। পোপ ফ্রান্সিস হত্যাকাণ্ডের নিন্দা করেন এবং এই ধরনের হামলাকে “স্রষ্টা ও মানবতার বিরুদ্ধে আঘাত” বলে মন্তব্য করেন।
ভূটানের প্রধানমন্ত্রী শেরিং তোবগে ঢাকায় সন্ত্রাসী ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে বলেন “তার দেশ সবসময় বাংলাদেশের পাশে আছে। বাংলাদেশের জনগণ এ ঘটনার মধ্য দিয়ে একটি বার্তা পেয়েছে, সেটি হলো সেদেশের সরকার কোন ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড-কে প্রশ্রয় দেবে না।”##২৭.১১.১৯

আপনার মতামত দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.