--- বিজ্ঞাপন ---

সীমান্তে গুলি চালাচ্ছে পাকিস্তান, যুদ্ধ কি আসন্ন।। কার কতো শক্তি

0

সীমান্তে গুলি চালাতে শুরু করল পাকিস্তান। ভারতের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক চুক্তি নিয়ে বড়সড় সিদ্ধান্ত নিয়েছে পাকিস্তান। আর তারপরই এই সংঘর্ষ বিরতি চুক্তি লঙ্ঘন করল পাকিস্তান।

রাত ১০ টা ১৫ মিনিটে পাকিস্তান গুলি চালানো শুরু করে বলে জানা গিয়েছে। কড়া জবাব দিচ্ছে ভারতীয় সেনা।

এদিকে, নিজেদের এয়ারস্পেস বন্ধ করে দিয়েছে পাকিস্তান। আগামী ৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বন্ধ থাকবে সেই এয়ারস্পেস। এ খবর দিয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যম কলকাতা২৪।

এদিকে, বুধবার পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান পাকিস্তানে ন্যাশনাল সিকিউরিটি কমিটির সঙ্গে বৈঠকে বসেন। এরপরই ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য সংক্রান্ত দ্বিপাক্ষিক চুক্তি ভঙ্গ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। সেইসঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করা হবে বলেও জানা গিয়েছে।

একইসঙ্গে পাকিস্তান জানিয়ে দিয়েছে যে তারা ভারতে নিযুক্ত তাদের রাষ্ট্রদূতকে ফিরিয়ে নেবে। সংবাদমাধ্যমে এই খবর জানিয়েছেন পাক বিদেশমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশি। তিনি বলেন, ‘দিল্লি থেকে আমাদের রাষ্ট্রদূতকে ফিরিয়ে আনব। আনব পাকিস্তানে নিযুক্ত ভারতীয় রাষ্ট্রদূতকেও পাঠিয়ে দেওয়া হবে।’

বর্তমানে ভারতে কোনও পাক রাষ্ট্রদূত নেই। কিছুদিনের মধ্যে পাক কূটনীতিক মইন-উল-হককে এখানে নিযুক্ত করাত কথা ছিল। তবে এবার আর তিনি দিল্লিতে আসছেন না।

কার কতো শক্তি

দুটো দেশের হাতেই পারমাণবিক অস্ত্র রয়েছে। কিন্তু প্রতিবেশী এই দুই বৈরী দেশের কার কেমন সামরিক শক্তি রয়েছে?

গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ারের ২০১৮ সালের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সামরিক শক্তির দিক থেকে বিশ্বের ১৩৬টি দেশের মধ্যে ভারতের অবস্থান চতুর্থ, অন্যদিকে পাকিস্তানের অবস্থান সতেরোতম।

এই তালিকা তৈরি করা হয়েছে ৫৫টির বেশি উপাদান বিবেচনায় নিয়ে। ভৌগলিক, অর্থনৈতিক, স্থানীয় শিল্প, প্রাকৃতিক সম্পদ, কর্মক্ষমতা এবং প্রথম, দ্বিতীয় বা তৃতীয় বিশ্বের দেশের মর্যাদার বিষয়গুলো এখানে বিবেচনায় নেয়া হয়েছে।

জনসংখ্যার দিক থেকে পাকিস্তানের চেয়ে অনেক এগিয়ে ভারত। পাকিস্তানের জনসংখ্যা যেখানে সাড়ে ২০ কোটি, সেখানে ভারতের জনসংখ্যা ১২৮ কোটির বেশি। পাকিস্তানের সৈন্য সংখ্যা ৯ লাখ ১৯ হাজার হলেও ভারতের সেনাবাহিনীর সদস্য সংখ্যা কয়েকগুণ বেশি – ৪২ লাখ।

ভারত ও পাকিস্তান – এই দুই দেশের প্রতিরক্ষা বাজেটে বড় পার্থক্য রয়েছে। ভারতের প্রতিরক্ষা বাজেট চার হাজার ৭০০ কোটি ডলার, অন্যদিকে পাকিস্তানের প্রতিরক্ষায় বরাদ্দ রয়েছে ৭০০ কোটি ডলার।

ভারতের মোট সামরিক বিমান রয়েছে ২,১৮৫টি, আর পাকিস্তানের রয়েছে ১,২৮১টি বিমান।

এসবের মধ্যে ভারতের যুদ্ধবিমান রয়েছে ৫৯০টি আর পাকিস্তানের ৩২০টি। সেই সঙ্গে ভারতের আক্রমণকারী বা অ্যাটাকিং বিমান রয়েছে ৮০৪টি, অন্যদিকে পাকিস্তানের আছে ৪১০টি। পরিবহনের জন্য ভারতের রয়েছে ৭০৮টি বিমান, পাকিস্তানের রয়েছে ৪৮৬টি।

পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর কাছে সাধারণ হেলিকপ্টার রয়েছে যেখানে ৩২৮টি, ভারতের কাছে রয়েছে ৭২০টি। তবে পাকিস্তানের আক্রমণকারী বা অ্যাটাকিং হেলিকপ্টার রয়েছে ৪৯টি, যেখানে ভারতের আছে মাত্র ১৫টি।

কার্যক্ষম বিমানবন্দর রয়েছে ভারতের ৩৪৬টি, আর পাকিস্তানের ১৫১টি।

পাকিস্তানের মোট ট্যাংকের সংখ্যা ২,১৮২টি হলেও ভারতের রয়েছে এর প্রায় দ্বিগুণ – ৪,৪২৬টি।

এরকম বাহন ভারতের রয়েছে ৩,১৪৭টি, আর পাকিস্তানের ২,৬০৪টি।

গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ারের তালিকায় স্বয়ংক্রিয় অস্ত্রের দিক বিবেচনায় ভারতের চেয়ে এগিয়ে রয়েছে পাকিস্তান।

ভারতের ১৯০টি এ ধরণের অস্ত্র থাকলেও পাকিস্তানের রয়েছে ৩০৭টি। তবে টেনে নিয়ে যাওয়া যায়, এমন আর্টিলারি ভারতের আছে ৪,১৫৮টি। তবে পাকিস্তানের আছে এর এক চতুর্থাংশ – মাত্র ১,২৪০টি।

রকেট প্রজেক্টর ভারতের কাছে আছে ২৬৬টি আর পাকিস্তানের কাছে আছে ১৪৪টি।

ভারতের নৌবাহিনীর কাছে মোট যুদ্ধযান রয়েছে ২৯৫টি আর পাকিস্তানের আছে ১৯৭টি।

এসব যুদ্ধযানের মধ্যে ভারতের একটি বিমানবাহী রণতরী থাকলেও ভারতের সেরকম কিছু নেই।

ভারতের কাছে ১৬টি সাবমেরিন বা ডুবোজাহাজ থাকলেও পাকিস্তানের আছে পাঁচটি।

ফ্রিগেট রয়েছে ভারতের ১৪টি, আর পাকিস্তানের ১০টি।

ভারতের ১১টি ডেস্ট্রয়ার থাকলেও পাকিস্তানের এরকম কোন যুদ্ধজাহাজ নেই। তেমনি ভারতের ২২টি কর্ভেট (ছোট আকারের যুদ্ধজাহাজ) থাকলেও পাকিস্তানের এরকম কোন নৌযান নেই।

ভারতের প্যাট্রোল নৌযান রয়েছে ১৩৯টি, আর পাকিস্তানের আছে ১১টি।

মাইন যুদ্ধজাহাজ রয়েছে ভারতের ৪টি আর পাকিস্তানের ৩টি।

নৌ-বন্দর, কর্মক্ষম ব্যক্তি, বাণিজ্য জাহাজ, সংরক্ষিত শক্তি ইত্যাদির দিক বিবেচনায় পাকিস্তানের চেয়ে বেশ অনেকটা এগিয়ে রয়েছে ভারত।

গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ার ইনডেক্স অনুযায়ী, সামরিক দিক থেকে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী দেশ যুক্তরাষ্ট্র। এরপরেই রয়েছে রাশিয়া, চীন ও ভারত।

শীর্ষ ১০দেশের মধ্যে আরো রয়েছে ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য, দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান, তুরস্ক এবং জার্মানি।

ভারত এবং পাকিস্তান – এই দুটো দেশের হাতেই রয়েছে পারমাণবিক অস্ত্র।

তবে গ্লোবাল ফায়ার পাওয়ার তাদের রিপোর্টে উল্লেখ করেনি যে কোন দেশের হাতে কতটি এ ধরণের অস্ত্র রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি বলছে, পারমাণবিক অস্ত্র ক্ষমতার বিষয়টি তারা তাদের রিপোর্টে বিবেচনায় নেয়নি।

সামরিক বিশ্লেষকরা অবশ্য বলে থাকেন যে পারমাণবিক অস্ত্র যুদ্ধের ক্ষেত্রে অনেকটা ডেটেরেন্ট বা নিবৃত্তকরণের উপাদান হিসেবে কাজ করে, কারণ শেষ বিচারে এ ধরণের অস্ত্র কেউ ব্যবহার করতে চাইবে না। ###সূত্র..বিবিসি/দেশে বিদেশে

আপনার মতামত দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.