-- বিজ্ঞাপন ---

রাশিয়াকে রুখতে দেড় বছরে কত খরচ করেছে পশ্চিমা বিশ্ব?

0

সিরাজুর রহমান, বিশেষ প্রতিনিধি#

ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক আগ্রাসন প্রতিহত করতে পশ্চিমা বিশ্ব মাত্র ১৮ মাসের মধ্যে মোট প্রায় ১৭০ বিলিয়ন ডলার ব্যয় করে ফেলেছে। মূলত গত ২০২২ সালের ২৪শে ফেব্রুয়ারী থেকে চলতি ২০২৩ সালের ৩১শে জুলাই পর্যন্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের সকল দেশ একত্রে প্রায় ৯০ বিলিয়ন ডলারের অধিক অর্থ ব্যয় করে ইউক্রেনের পিছনে। যায় মধ্যে মানবিক, আর্থিক, অস্ত্র ও সামরিক সহায়তার অংশ হিসেবে এই বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করা হয়।

তাছাড়া এই ভয়াবহ যুদ্ধে ইউক্রেনকে বাঁচাতে ইউরোপীয় দেশগুলোর সামরিক সহায়তার ২৬.৫ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছে গেছে। তার পাশাপাশি সব মিলিয়ে সামরিক, বেসামরিক, মানবিক সহায়তা বাবদ তারা এ পর্যন্ত পায় ৯০ বিলিয়ন ডলার ব্যয় করে ফেলেছে। এদিকে পশ্চিমা বিশ্বের অনেক দেশের অস্ত্র ভান্ডারে টান পড়তে শুরু করেছে।

তবে যুদ্ধ শুরু থেকে চলতি বছরের জুলাই পর্যন্ত আমেরিকা এককভাবে ইউক্রেনকে প্রায় ৭৬.৮ বিলিয়ন ডলারের মানবিক, আর্থিক, সামরিক সহায়তা, প্রশিক্ষণ, অস্ত্র দিয়েছে। যদিও এখনো পর্যন্ত সরাসরি সেনা পাঠানোর মতো কোন আলামত বিশ্বের সামনে প্রকাশ হয়নি। তবে আমেরিকা এখন নিজেই পাহাড় সমান ঋন ও দেনায় ডুবে থাকলেও রাশিয়াকে সামরিক দিক দিয়ে ক্ষতিগ্রস্থ করতে এ বছরও নতুন করে প্রায় ৪৫ থেকে ৫০ বিলিয়ন ডলারের অধিক অর্থ বরাদ্দ দিতে যাচ্ছে কিংবা হয়ত ইতোমধ্যেই দিয়ে ফেলেছে।

আমেরিকার বাইডেন প্রশাসন ইউক্রেনকে এ পর্যন্ত ২৩.৫ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র, আর্থিক সহায়তা বাবদ ২৬.৪ বিলিয়ন ডলার এবং নিরাপত্তা সহায়তা ও প্রশিক্ষণ বাবদ মোট ১৮.৩ বিলিয়ন ডলার ব্যয় করে। আবার ইউক্রেনের পক্ষ থেকে অস্ত্র কেনার জন্য আমেরিকা ঋন সহায়তা দিয়েছে ৪.৭ বিলিয়ন ডলার। তবে আশ্চর্যজনক হলেও সত্য যে, আমেরিকার পক্ষ থেকে মাত্র ৩.৯ বিলিয়ন ডলার দেয়া হয় মানবিক সহায়তা বাবদ।

তার মানে ইউক্রেন যুদ্ধে লক্ষ লক্ষ সামরিক ও বেসামরিক নাগরিক মারা গেলেও এতে তাদের কিছুই যায় কিংবা আসে না। বরং তার চায় ইউক্রেনকে ব্যবহার করে রাশিয়ার ধ্বংস বা সামরিক ক্ষমতা হ্রাস করা। আর এভাবে যুদ্ধকে দীর্ঘায়িত করতে গিয়ে এখন নিজেরাই চরম বিপাকে পড়েছে। ইউক্রেনকে নির্বিচারে অস্ত্র দিতে গিয়ে এখন ইউরোপ এর অনেক দেশের নিজস্ব নিরাপত্তা ব্যবস্থা অনেকটাই ঝুঁকির মুখে পড়ে গেছে এবং এমনকি তাদের নিজস্ব অস্ত্র ভান্ডারে ঘাটতি দেখা দিতে শুরু করে দিয়েছে। এদিকে ইউক্রেনের প্রশাসনের বিরূপ আচরণের কারণে হয়ত আগামী ২০২৪ সাল থেকে পশ্চিমা বিশ্বের অনেক দেশ ইউক্রেন যুদ্ধ থেকে নিজেদেরকে সরিয়ে নিতে যাচ্ছে।

এক অনিশ্চিত ও দীর্ঘ মেয়াদী যুদ্ধে জড়িয়ে বর্তমানে আমেরিকাসহ গোটা ইউরোপ বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মহামন্দার কবলে পড়ে অনেকটাই বিপর্যস্থ হয়ে পড়েছে। তার সাথে সারা বিশ্বের স্বল্প আয়ের ও উন্নয়নশীল দেশগুলো আজ কিন্তু চরম অর্থনৈতিক ঝুঁকি ও সংকটের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। আর এই ভয়াবহ যুদ্ধ পরিস্থিতি ও সংকট নিরসনে আপাতত কোন আলোর রেখা দেখা যাচ্ছে না।#

আপনার মতামত দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.