-- বিজ্ঞাপন ---

যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশের হাইকমিশনার হিসেবে আবিদা ইসলামের যোগদান

বিশেষ প্রতিনিধি, লন্ডন#

আবিদা ইসলাম আনুষ্ঠানিকভাবে যুক্তরাজ্য ও উত্তর আয়ারল্যান্ডে বাংলাদেশের হাই কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। এর আগে তিনি মেক্সিকোতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হিসেবে কর্মরত ছিলেন। মেক্সিকোতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হিসেবে যোগ দিয়েছেন আলোচিত সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারী। গত ২১ অক্টোবর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়, মুশফিকুল ফজল আনসারীকে সিনিয়র সচিব পদমর্যাদায় ৩ বছরের জন্য চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দিয়ে বিদেশস্থ বাংলাদেশ মিশনে রাষ্ট্রদূত পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

আবিদা ইসলাম  মেক্সিকো ও দক্ষিণ কোরিয়ায় অত্যন্ত সুনামের সাথে রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালন করেছেন। কূটনীতিক হিসেবে দুই দশকেরও বেশি অভিজ্ঞতা রয়েছে আবিদা ইসলামের। তিনি তাঁর নতুন দায়িত্বে বাংলাদেশ-ব্রিটেন সম্পর্ক উন্নত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবেন বলে আশা করছে প্রশাসন।

আবিদা ইসলাম ১৫তম বিসিএসে পররাষ্ট্র ক্যাডারে যোগ দেন। তিনি বিভিন্ন সময়ে লন্ডন, কলম্বো, ব্রাসেলস ও কোলকাতার বাংলাদেশ মিশনে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়াও তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন উইংয়ে দায়িত্ব পালন করেন।
তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজ-বিজ্ঞান বিষয়ে স্নাতকোত্তর ও অস্ট্রেলিয়ার মোনাস বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফরেন অ্যাফেয়ার্স অ্যান্ড ট্রেড বিষয়ে উচ্চতর ডিগ্রি লাভ করেন।
জানা গেছে, নানা কারনে যুক্তরাজ্য বাংলাদেশের কাছে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। সম্প্রতি লেবার পার্টির টিউলিপ ইস্যু, বাংলাদেশ থেকে আওয়ামী লীগের টাকা পাচারসহ নানা বিষয় আন্তর্জাতিকভাবে শিরোনাম হয়। এতে কোন না কোনভাবে বাংলাদেশের নাম উঠে আসে। এ অবস্থায় অভিজ্ঞ হাইকমিশনার নিয়োগ জরুরী হয়ে পড়ে। ইউনুস সরকার যুক্তরাজ্যের জন্য আবিদা ইসলামকে যোগ্য মনে করে গত অক্টোবরে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করে। গত ২৭ জানুয়ারী তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন বলে জানা গেছে।

এর আগে গত প্রায় ৬ বছর ধরে বাংলাদেশের হাইকমিশনারের দায়িত্ব পালনকারী সাইদা মুনা তাসনীমকে ঢাকায় ফিরিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর প্রশাসনে রদবদলের অংশ হিসেবে ওই কূটনীতিককে ঢাকায় বদলি করা হয়েছে। যোগদানের আগে কূটনৈতিক আবিদা ইসলাম বর্তমানে ইউনাইটেড মেক্সিকান স্টেটে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। আবিদা ইসলাম ২০০১ থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত লন্ডনস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনে ফাস্ট সেক্রেটারী হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।

কর্মজীবনে তিনি মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন বিভাগে কাজ করেছেন। এছাড়াও আন্তর্জাতিক সংস্থা, দূরপ্রাচ্য, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, আমেরিকা-প্রশান্ত মহাসাগরীয় ও সন্ত্রাসবাদ প্রতিরোধ, এবং প্রশাসন সহ ঢাকার পররাষ্ট্র বিষয়ক তার বিদেশী অ্যাসাইনমেন্ট তাঁকে লন্ডনে (২০০১-২০০৪), কলম্বো (২০০৪-২০০৬), এবং ব্রাসেলস (২০০৯-২০১২) কূটনৈতিক মিশনে বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেছেন।
উল্লেখ্য, তিনি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায় ডেপুটি হাইকমিশনে বাংলাদেশের প্রথম মহিলা ডেপুটি হাইকমিশনার (প্রধান মিশন) হিসেবেও কাজ করেছেন (২০১২-২০১৪)। আবিদা ইসলাম বিভিন্ন বিষয়ে অসংখ্য আন্তর্জাতিক সম্মেলন, সেমিনার এবং শীর্ষ সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। মহাপরিচালক হিসেবে, তিনি ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আন্তর্জাতিক সংস্থা (২০১৪-২০১৫) এবং আমেরিকাস উইং (২০১৫-২০১৭) তত্ত্বাবধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে (সমাজবিজ্ঞান) স্নাতকোত্তর ডিগ্রি এবং অস্ট্রেলিয়ার মোনাশ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বৈদেশিক বিষয় ও বাণিজ্য বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছেন।

কর্মজীবনে তিনি কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি বিভিন্ন বিষয়ে একাধিক সম্মাননা অর্জন করেছেন, উল্লেখযোগ্য সম্মানার মধ্যে রয়েছে * ব্রাজিলের ফেডারেটিভ রিপাবলিক সরকারের কাছ থেকে রিও ব্রাঙ্কোর আদেশ (ফেব্রুয়ারি ২০১৮) * এনডিএন নিউজ এবং সিউল সিটি ম্যাগাজিন, রিপাবলিক অফ কোরিয়া (অক্টোবর ২০১৮) থেকে গর্বিত রাষ্ট্রদূত পুরস্কার ২০১৮ * কোরিয়া আমদানিকারক সমিতি (KOIMA) থেকে প্রশংসার ফলক (ডিসেম্বর ২০১৮) * কোরিয়া অ্যাম্বাসেডর কালচার ফ্রেন্ডশিপ অ্যাসোসিয়েশন, এনডিএন নিউজ এবং সিউল সিটি ম্যাগাজিন, রিপাবলিক অফ কোরিয়া (সেপ্টেম্বর ২০২০) থেকে ২০২০ ফ্রেন্ডশিপ অ্যাম্বাসেডর অ্যাওয়ার্ড ৷

বিবাহিত জীবনে তিনি দুই সন্তানের জননী। তাঁর পুত্রের নাম আরশাদ আহমেদ এবং কন্যা আয়শা আহমেদ।##

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.