##শামসুল আলম, রাশিয়া থেকে…….
সবে রাশিয়ায় পা রেখেছি। বিশ্বটা তখনো অস্বাভাবিক হয়ে উঠে নি। বাইরে ভীষণ ঠান্ডা থাকলেও ঘুরতে বের হতাম। শনি রবিবার দুইদিন ছুটির দিন থাকে এখানে। তাই এসময় হাটতে গেলে বেশ উপভোগ করতাম। চারদিকে বরফে আচ্ছাদিত থাকতো সব কিছু।
যাহোক মূল কথায় ফিরে যাই। সেদিন বরফঢাকা এই ছোট শহরের আনাচেকানাচে ঘুরে বেড়াচ্ছিলাম। হিমশীতল বাতাস লাগছিলো কানে আর শুভ্র বরফে ঢেকে থাকা রাস্তা পার হতে হচ্ছিলো। ভাষাগত সমস্যার কারণে তেমন কারো সাথে কথা বলা হয়ে উঠে নাই সেদিন। যখন বাসায় ফিরে আসবো তখন একজন বৃদ্ধের হাত ধরে আরেক বৃদ্ধা হাটছেন। বিষয়টা আমাকে দারুণভাবে আকৃষ্ট করলো। আকৃষ্ট করার অন্যতম কারণ ছিলো- এখানে এসে শোনেছি ছেলেদের চেয়ে মেয়েদের সংখ্যা বেশি। তাই ম্যাক্সিমামই ব্রোকেন ফ্যামিলি। আমিও তাই দেখেছি, ডিভোর্স রেট অনেক। মেয়েরা স্বাধীন, বয়স যাই হউক না কেনো প্রায় সবাই ইকোনমিক সলভেন্সির জন্য অন্যের উপর নির্ভরশীল না হয়ে কাজ করেন।
এই প্রবীণ জুটিটাকে দেখে কথা বলতে চাইলাম। কিন্তু তারা আমার কথা বোঝলেন না, আর আমিও খারাশো (রুচকিতে – ভালো অর্থে), কাক দিলা টাইপ কথাতেই সীমাবদ্ধ থেকে ঝটপট বোঝালাম, ‘আমি তোমাদের একটা ছবি তোলতে চাই।’ তারা হাসিমুখে আরো কাছাকাছি আসলো। আমিও নিচের ছবিটি তোলে নিলাম। তারা ফোনে ছবিটা দেখে একে অপরের দিকে মৃদু হাসিও দিয়েছিলো। যখন চলে আসি তখন হাত নেড়ে অবিভাদন জানালো।
রাশিয়ায় করোনার আক্রান্তের সংখ্যা এখন তৃতীয় সর্বোচ্চ। এ সপ্তাহের মধ্যেই আমেরিকার পেছনে বসতে যাচ্ছে কোভিড১৯ পজিটিভের দিক থেকে। অনেক জায়গায় ঘুরার ইচ্ছে ছিলো কিন্তু ভাইরাসের আক্রমণে পুরোবিশ্বই আজ গৃহবন্দী। বেচে থাকলে অনেক কিছুই হয়তো দেখা যাবে। আশায় আছি দ্রুত সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে।