-- বিজ্ঞাপন ---

বলিউডের নায়ক সাইফ আলি খানকে হত্যার চেষ্টা

হামলাকারী ঘাপটি মেরে বসেছিলেন তাঁর পুত্রের ঘরে

অলক ঘোষ, কলকাতা#

সইফ আলি খানকে ছুরির কোপ দেওয়ার ঘটনায় যে খবর প্রকাশিত হয়েছে, তা বেশ আতঙ্কজনক। তবে, এখনও পর্যন্ত সংবাদে বলা হয়েছে যে, সইফ আলি খান নিজের বাড়িতেই আক্রান্ত হয়েছেন। প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, তাঁকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করা হয়েছে। এই ঘটনার পরে সইফ আলি খানকে দ্রুত হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে এবং চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। অথচ, ঘটনাটি কীভাবে ঘটল, কিভাবে বা কেন তাঁর উপর আক্রমণ করা হলো, সে সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য এখনও স্পষ্ট হয়নি। পুলিশ এ ব্যাপারে তদন্ত শুরু করেছে

রক্তাক্ত অভিনেতাকে মধ্যরাতে তড়িঘড়ি করে লীলাবতী হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। তাঁর বড় ছেলে ইব্রাহিম আলি খান অটোয় করে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন এই দুর্ঘটনার পর। জানা গিয়েছে ওই মধ্যরাতে কোনও গাড়ি পাননি ইব্রাহিম যেটায় করে তিনি তাঁর বাবাকে হাসপাতালে নিয়ে আসতে পারেন। না ছিল ড্রাইভার, না ছিল গাড়ি প্রস্তুত। তাই তিনি বাধ্য হয়ে যাতে আর সময় অপচয় না হয় বা বাবার বেশি ক্ষতি না হয় তাই তিনি সইফকে অটোয় করে হাসপাতালে নিয়ে যান বলে জানা গেছ।

ভারতীয় গণমাধ্যম আনন্দবাজার জানিয়েছে, বুধবার রাত দেড়টা। বান্দ্রা পশ্চিমের ‘সৎগুরু শরণ’ ভবনে তখন রাতের নিস্তব্ধতা। আচমকা সেই অন্ধকার চিরে যায় মহিলা কণ্ঠের চিৎকারে। বাড়ির হলঘরে অচেনা ব্যক্তিকে ঘাপটি মেরে বসে থাকতে দেখে চিৎকার করে ওঠেন করিনা কপূর। তার পরের ঘটনাপ্রবাহে ছিল ধস্তাধস্তি, ছুরি, আঘাত আর রক্ত। নিজের বাড়িতেই দুষ্কৃতীর ছুরিকাঘাতে জখম হয়েছেন করিনার স্বামী তথা বলিউড অভিনেতা সইফ আলি খান। গুরুতর জখম অবস্থায় তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, বুধবার রাতে একটি পার্টিতে গিয়েছিলেন করিনা। সইফ এবং বাড়ির বাকিরা বাড়িতেই ছিলেন। রাত দেড়টা নাগাদ পার্টি থেকে বাড়ি ফেরেন করিনা। হলঘরে ঢুকে তিনিই প্রথম দেখতে পান হামলাকারীকে। অচেনা ব্যক্তিকে দেখে চিৎকার করে উঠেছিলেন তিনি। তাঁর চিৎকার শুনে প্রথমে বেরিয়ে এসেছিলেন এক পরিচারিকা। হলঘরের কাছেই তাঁর ঘর। হামলাকারীকে বাধা দিতে তিনিই প্রথম এগিয়ে যান। সেই সময়ে পুত্র তৈমুরকে সঙ্গে নিয়ে সেখান থেকে দ্রুত ভিতরের ঘরে চলে যান করিনা।

হলঘর থেকে স্ত্রীর চিৎকার শুনে তত ক্ষণে বেরিয়ে এসেছেন সইফ নিজে। পরিচারিকার সঙ্গে অচেনা ব্যক্তির ধস্তাধস্তি হচ্ছে দেখে তিনি বাধা দিতে যান। সেই সময়ে ধারালো ছুরি বার করে এলোপাথাড়ি কোপ মারেন অভিযুক্ত। সইফ রক্তাক্ত হন। তার পরেই হামলাকারী বাড়ি থেকে পালিয়ে যান।

সইফের বাড়ির সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে হামলাকারীকে চিহ্নিত করেছে মুম্বই পুলিশের অপরাধদমন শাখা। কিন্তু এখনও তাঁকে গ্রেফতার করা যায়নি। তাঁর খোঁজ চলছে। সেই সঙ্গে পুলিশ পরিবারের লোকজনকেও জিজ্ঞাসাবাদ করছে। মূল ঘটনার দু’ঘণ্টা আগে পর্যন্ত সিসিটিভিতে কাউকে বাড়িতে ঢুকতে দেখা যায়নি। পুলিশ সূত্রে খবর, আগে থেকেই ওই বাড়িতে ঢুকে বসেছিলেন অভিযুক্ত। কেউ কেউ বলছেন, তিনি সইফ-করিনার কনিষ্ঠ পুত্রের ঘরে লুকিয়ে ছিলেন। মূলত চুরির উদ্দেশ্যেই এই হামলা বলে মনে করা হচ্ছে।

পুলিশের সন্দেহ, পাশের বাড়ি থেকে সইফের বাড়িতে ঢুকে পড়েছিলেন হামলাকারী। ঘাপটি মেরে বসেছিলেন তাঁর পুত্রের ঘরে। হামলাকারী বাড়ির এক পরিচারকের পূর্ব-পরিচিত বলেও জানতে পেরেছে পুলিশ। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

মুম্বইয়ের লীলাবতী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সইফ। তাঁর শরীরে ছ’বার ছুরির আঘাত লেগেছে। কিছু আঘাত গুরুতর। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, সইফের মেরুদণ্ডের খুব কাছে একটি আঘাত রয়েছে। তবে আপাতত অভিনেতার অবস্থা স্থিতিশীল।

লীলাবতী হাসপাতালের অন্যতম শীর্ষ পদাধিকারী ডাক্তার নীরজ উত্তমানি জানান, ভোর সাড়ে ৩টে নাগাদ সইফকে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। অভিনেতার শরীরে ছ’টি ক্ষত রয়েছে। এর মধ্যে দু’টি ক্ষত গভীর বলে জানিয়েছেন নীরজ। সইফ শিরদাঁড়ার কাছেও আঘাত পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাসপাতাল সূত্রে খবর, বৃহস্পতিবারই অভিনেতার অস্ত্রোপচার করা হচ্ছে। তার জন্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের একটি দল গঠন করা হয়েছে। নিউরো সার্জন নিতিন ডাঙ্গে, কসমেটিক সার্জেন লীনা জইন এবং অ্যানাস্থেশিওলজিস্ট নিশা গান্ধী সইফের অস্ত্রোপচার করার দায়িত্বে। হাসপাতালের তরফে জানানো হয়েছে, অস্ত্রোপচারের পরই বলা যাবে ক্ষত কত গভীর।##

 

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.