-- বিজ্ঞাপন ---

টাকার জন্য অস্ট্রেলিয়ান টিকটক ইনফ্লুয়েন্সার মা শিশুকে বিষপ্রয়োগ করতেন!

পুলিশের হাতে ধরা

মফিজ উদ্দিন,অস্ট্রেলিয়া#

এক টিকটক ইনফ্লুয়েন্সারকে তার শিশুকন্যাকে বিষপ্রয়োগ এবং নির্যাতনের মাধ্যমে অনুদান সংগ্রহ ও অনলাইনে অনুসারী বাড়ানোর অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে। ৩৪ বছর বয়সী এই অস্ট্রেলিয়ান মাকে গ্রেফতারের সময় কান্নায় ভেঙে পড়তে দেখা যায়। পুলিশ তাকে হাতকড়া পরিয়ে একটি গাড়িতে তুলে নিয়ে যায়। কুইন্সল্যান্ডের এই নারীকে “ক্ষতির উদ্দেশ্যে বিষপ্রয়োগ” করার অভিযোগে শিশু শোষণের দায়ে অভিযুক্ত করা হয়েছে।

তিনি GoFundMe-এর মাধ্যমে দাতাদের কাছ থেকে প্রায় £৩০,০০০ প্রতারণার অভিযোগেও অভিযুক্ত। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্ত নারী অনুমোদনবিহীন প্রেসক্রিপশন ও ফার্মেসির ওষুধ দিয়ে শিশুটিকে অসুস্থ করে তুলতেন।

নারীটি সোশ্যাল মিডিয়ায় তার শিশুর “প্রাণঘাতী অসুস্থতার” গল্প তুলে ধরে ভিডিও পোস্ট করতেন। তবে, কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, তিনি শিশুটিকে ওষুধ দিয়ে অসুস্থ করতেন এবং “চরম যন্ত্রণা ও কষ্টে থাকা অবস্থায়” তার ভিডিও ধারণ করতেন। গত বছরের অক্টোবর মাসে, শিশুটি হাসপাতালে ভর্তি থাকাকালীন “গুরুতর মানসিক ও শারীরিক কষ্ট” ভোগ করার পর, চিকিৎসকরা প্রথম এই বিষয়ে অভিযোগ করেন।

পুলিশের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “নারীটি অনুমোদনহীন ওষুধ প্রয়োগের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলেন এবং বিষয়টি লুকানোর চেষ্টা করছিলেন। তবে হাসপাতালের চিকিৎসকরা এই ঘটনা শনাক্ত করে পুলিশকে জানিয়েছেন।” “শিশুটি চরম কষ্টের মধ্যে থাকাকালীন, অভিযোগ রয়েছে যে, নারীটি তার ভিডিও ধারণ করে পোস্ট করতেন।”

পুলিশ আরও জানিয়েছে, নারীটি চিকিৎসকদের পরামর্শ উপেক্ষা করে অনুমোদনবিহীন ওষুধ সংগ্রহে নানা উপায় অবলম্বন করতেন। এতে পরিবারের অন্য একজনের জন্য নির্ধারিত পুরনো ওষুধও অন্তর্ভুক্ত ছিল। নারীটি শিশুটির ছবি ও ভিডিও তুলে দাতা ও অনলাইনে অনুসারীদের আকৃষ্ট করতেন। জানুয়ারি মাসে অনুমোদনহীন ওষুধের জন্য পরীক্ষার ফলাফল পজিটিভ আসে।

বর্তমানে অভিযুক্ত মা পুলিশের হেফাজতে রয়েছেন এবং তাকে শুক্রবার ব্রিসবেন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হবে।

পুলিশের দাবি, শিশুটি যদি তার মায়ের তত্ত্বাবধানে থাকত, তবে “গুরুতরভাবে অসুস্থ” হয়ে পড়ত এবং “মৃত্যুর ঝুঁকি” থাকত।

কুইন্সল্যান্ড পুলিশের ইন্সপেক্টর পল ডালটন বলেছেন, “এ ধরনের অপরাধের জন্য কোনো শব্দই যথেষ্ট নয়। “আমরা শিশুটিকে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করতে এবং অপরাধীকে আইনের আওতায় আনতে আমাদের সবকিছু করব। “একটি শিশুকে ক্ষতি করার কোনো অজুহাত নেই, বিশেষ করে এমন এক বছর বয়সী শিশু, যেটি অন্যদের যত্ন ও সহায়তার ওপর নির্ভরশীল।”

ব্রিসবেনের একটি হাসপাতালে চিকিৎসকরা শিশুটির অবস্থা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করলে পুলিশ তদন্ত শুরু করে। পরীক্ষায় শিশুটির দেহে অনুমোদনহীন ওষুধের উপস্থিতি নিশ্চিত হওয়ার পর অভিযুক্ত নারীকে গ্রেফতার করা হয়। তার বিরুদ্ধে বিষপ্রয়োগ, নির্যাতন, প্রতারণা এবং শিশুর শোষণমূলক সামগ্রী তৈরির অভিযোগ আনা হয়েছে। শিশুটিকে বর্তমানে সুরক্ষিত আশ্রয়ে রাখা হয়েছে। অভিযুক্ত নারী আদালতে হাজিরা দিয়েছেন এবং মামলার কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

GoFundMe প্ল্যাটফর্ম ঘোষণা করেছে যে, প্রতারণার মাধ্যমে সংগৃহীত অর্থ তারা ফেরত দেবে। এই ঘটনা শিশু সুরক্ষা ও অনলাইনে দায়িত্বশীল আচরণ নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু করেছে।##

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.