-- বিজ্ঞাপন ---

ব্যাংকের টাকা মেরে পালিয়ে যাওয়া মেহুল চোকসীকে ফিরিয়ে আনতে বেলজিয়ামে ভারতের কর্মকর্তারা

দৃষ্টান্ত অনুসরণ করতে পারে বাংলাদেশ

ভারতে মেহুল চোকসী নামের এক ব্যাক্তি ব্যাংকের টাকা মেরে পালিয়ে যায়। ২০১৮ সালের ঘটনা। বাংলাদেশ থেকে যারা টাকা মেরে পালিয়ে গেছিল ঠিক তাদের মতোন মেহুল চোকসীও পরিকল্পিতভাবে পালায়। এর আগে এন্টিগোর নাগরিকত্ব নিয়ে রাখেন চোকসী। ভারত সরকার তার পেছনে লেগেছিল। শেষ পর্যন্ত খবর আসে চোকসী বেলজিয়ামেরও নাগরিক। খবর পেয়ে ভারতের অনুরোধে তাকে গ্রেফতার করা হয়। বেলজিয়ামে এরই মধ্যে পৌছে গেছে ভারতের সরকারী কর্মকর্তারা।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এটি এমন একটি উদাহরণ যা বাংলাদেশ সরকার গ্রহণ করতে পারে। ভারতের মেহুল চোকসির মতো বাংলাদেশ থেকে যারা টাকা পাচারের সাথে জড়িত তাদের গ্রেফতার করে দেশে ফিরিয়ে আনা গেলে টাকাও ফেরত আসবে।

আনন্দবাজার জানায়, মেহুল চোকসীকে ভারতে প্রত্যর্পণের জন্য অনুরোধ ইতিমধ্যেই পৌঁছে গিয়েছে বেলজিয়াম সরকারের কাছে! বিষয়টি নিশ্চিত করল সে দেশের ফেডারেল পাবলিক সার্ভিস অফ জাস্টিস। তারা আরও জানিয়েছে, বেলজিয়াম কর্তৃপক্ষ চোকসীর বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। নেওয়া হবে আইনি পরামর্শও।

সংবাদ সংস্থা এএনআই ফেডারেল পাবলিক সার্ভিস অফ জাস্টিসের এক জন মুখপাত্রকে উদ্ধৃত করে বলেছে, ‘‘পলাতক ভারতীয় ব্যবসায়ী চোকসীকে ১২ এপ্রিল, শনিবার গ্রেফতার করা হয়েছে। তাঁর বিচারপ্রক্রিয়ার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। শুধু তা-ই নয়, তিনি যাতে আইনি পরামর্শ পান, তা-ও নিশ্চিত করা হয়েছে।’’ একই সঙ্গে এ-ও জানানো হয়, ভারত সরকারের তরফে চোকসীর প্রত্যর্পণের জন্য অনুরোধও করা হয়েছে।

সোমবার সকালে চোকসীর আইনজীবী প্রথম এই গ্রেফতারির বিষয়টি জানান। বেলজিয়াম থেকে সুইৎজ়ারল্যান্ড চলে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল পলাতক ভারতীয় হিরে ব্যবসায়ীর। চিকিৎসার জন্যই সেই দেশে যেতে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু তার আগেই বেলজিয়াম পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন চোকসী। এ বার বেলজিয়াম কর্তৃপক্ষও গ্রেফতারি ও ভারতে ফেরত পাঠানোর অনুরোধের বিষয়টি নিশ্চিত করলেন।

অন্য দিকে, চোকসীর গ্রেফতারির পর থেকেই তাঁকে ভারতে ফেরানোর ব্যাপারে উদ্যোগী হয়েছে নরেন্দ্র মোদীর সরকার। সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, চোকসীর মামলার পরবর্তী শুনানিতে থাকতে চান ভারতীয় প্রতিনিধিরাও। সেই কারণে দিল্লি থেকে একটি দল পাঠানো হবে বেলজিয়ামে। কী ভাবে চোকসীকে ভারতে ফেরানো যায়, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই আইনি পরামর্শ নেওয়া শুরু করেছে ভারত সরকার। নয়াদিল্লি আশাবাদী, প্রমাণের ভিত্তিতে বেলজিয়াম আদালত পলাতক ব্যবসায়ীর ভারতে প্রত্যপর্ণের অনুরোধ গ্রহণ করবে।

পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্কের (পিএনবি) আর্থিক তছরুপের অভিযোগে নাম জড়িয়েছিল চোকসীর। তিনি একা নন, এই মামলায় নাম জড়ায় তাঁর ভাগ্নে নীরব মোদী, তাঁর স্ত্রী এবং ভাইয়েরও। ২০১৮ সালে পিএনবি কেলেঙ্কারি প্রথম প্রকাশ্যে আসে। তবে তার আগেই ভারত ছেড়ে পালানোর পরিকল্পনা সেরে ফেলেছিলেন চোকসী। ২০১৭ সালেই অ্যান্টিগার নাগরিকত্ব লাভ করেন তিনি। ২০১৮ সালের জানুয়ারি মাসে ভারত থেকে চলে যান চোকসী। পরে তিনি বেলজিয়ামে আসেন। ২০২৪ সালের নভেম্বরে বেলজিয়ামে থাকার জন্য নাগরিকত্বও পেয়েছিলেন। সেখানেই থাকেন তাঁর স্ত্রী প্রীতি চোকসীও। তিনি বেলজিয়ামের নাগরিক। তাঁর নথি ব্যবহার করেই বেলজিয়ামে থাকার ব্যবস্থা করেন পলাতক ভারতীয় ব্যবসায়ী।

চোকসী ক্যানসারে আক্রান্ত। তাঁর চিকিৎসা চলছে। সেই বিষয়টিকে সামনে রেখেই চোকসীর জামিনের আবেদন করা হতে পারে বলে অনুমান। তেমন ইঙ্গিতও দিয়েছেন চোকসীর আইনজীবী। তিনি জানান, আদালতে চোকসীর মুক্তির আবেদন করা হবে। এই আবেদনের প্রধান কারণ হল, চোকসীর অসুস্থতা। চোকসী বর্তমানে বেলজিয়ামের কারাগারে বন্দি। তাঁর জামিনের আবেদনের শুনানি সপ্তাহখানেক পর হতে পারে বলেই সূত্রের খবর।#

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.