প্রেমিকের সঙ্গে বিয়ে না দেওয়ায় পরিবারের ১৩ সদস্যকে খুন করলো পাকিস্তানের এক নারী
প্রেমিকের সঙ্গে বিয়ে না দেয়ার কারনে পরিবারের ১৩ সদস্যকে মেরে ফেললেন পাকিস্তানের এক নারী। সিন্দ প্রদেশের হায়বাত ব্রোহি নামের একটি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। স্থানীয় খাইরপুর পুলিশ এ ঘটনায় তদন্ত করে বের করে আনেন আসল রহস্য।
পুলিশ জানায়, হায়বাত ব্রোহি গ্রামে একটি পরিবারের ১৩ সদস্যের মৃত্যুর রহস্য উদঘাটনের জন্য তদন্ত চালিয়ে অবশেষে ১৯ আগস্ট একটি নারী এবং তার প্রেমিককে গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতার হওয়া নারীর বিরুদ্ধে বিষ প্রয়োগের অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। পরিবারের নয়জন সদস্য অসুস্থ হয়ে পড়ার পরই মারা যান । তাদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, যেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও চারজন মারা যান।
রবিবার বারাদি জাটোই এবং মহিলা পুলিশ স্টেশনের এসএইচও তালিব জুনেজো এবং রাজিয়া একটি সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেন, ঘটনাটি ঘটেছে ১৯ আগস্ট । থানায় অভিযোগ জানানোর পর প্রাথমিকভাবে তাদের মৃত্যুর কারণ হিসেবে কোনো রহস্যময় রোগ বা খাদ্যে বিষক্রিয়া মনে করা হয়েছিল। তবে পরে খাইরপুর থানার এসএসপি সামিউল্লাহ সুমরোর নির্দেশে পুলিশ বিভিন্ন দিক থেকে তদন্ত শুরু করে। গঠন করা হয় বিশেষজ্ঞ তদন্তকারী দল। ডিএসপি জানায়, পুলিশ দুটি মৃতদেহের ময়না তদন্ত প্রতিবেদন সংগ্রহ করে এবং কী ধরনের বিষক্রিয়ার ফলে এই বড় ট্র্যাজেডি ঘটেছে তা নির্ধারণের জন্য কাজ করে।
তদন্তকারীরা সিদ্ধান্তে পৌঁছান যে, খাদ্যের মধ্যে বিষ মিশিয়ে তা ভুক্তভোগীদের খাওয়ানো হয়েছে। তারপর তারা একটি যৌথ পরিবারের সদস্য শাইস্তা ব্রোহির সাথে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে, যারা একই বাসস্থানে বসবাস করছিলেন। ডিএসপি জানায়, বারবার কঠিন জিজ্ঞাসাবাদের সময় শাইস্তা সত্য গোপন করতে না পেরে অবশেষে স্বীকার করেন যে, তিনি পরিবারকে তার ইচ্ছামত বিয়েতে রাজি করানোর উদ্দেশ্যে খাবারের মধ্যে এক ধরনের তরল মিশিয়েছিলেন। তিনি বলেন, এই তরলটি তাকে তার প্রেমিক আমির বখশ ব্রোহি দিয়েছিলেন।
ডিএসপি বলেন, শাইস্তা আমির বখশকে ভালোবাসতেন কিন্তু তার পরিবার এই প্রস্তাবে রাজি ছিল না। একদিন আমির তাকে একটি তরল পদার্থ দেন এবং বলেন যে খাবারে মেশালে পরিবার রাজি হয়ে যাবে এবং তারা বিয়ে করতে পারবে। শাইস্তাকে সামাজিক মাধ্যমে আপলোড করা একটি ভিডিও ক্লিপেও তাকে এই ধরনের বিবৃতি দিতে দেখা যায়। ডিএসপি বলেন, শাইস্তা এবং আমির বখশকে বারাদি জাটোই থানায় মামলা নং ১৩/২০২৪-এর অধীনে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ কর্মকর্তা দাবি করেন, উভয় সন্দেহভাজনই অপরাধ স্বীকার করেছে।
যারা খাবার খেয়ে মারা গেছেন তাদের মধ্যে গুল বেগ, তার স্ত্রী গুলজাদি; তাদের তিন ছেলে, মনজুর হুসেন, দিবার এবং দিলদার; এবং চার মেয়ে, খাতুন, সামিনা, হাজিয়ানি এবং মরিয়ম; এছাড়াও নিকট আত্মীয় আসগর, মোহাম্মদ বখশ এবং শেহজাদো।##