-- বিজ্ঞাপন ---

কোন পথে কোরিয়া,রাজপথে লাখো মানুষ, প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরওয়ানা জারি

কাজী আবুল মনসুর, সাংবাদিক#

দক্ষিণ কোরিয়ার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওলের বিরুদ্ধে রাজপথে নেমেছে লাখ লাখ মানুষ। ইউন জোর করে ক্ষমতায় থাকতে চেয়েও পারেন নি। তার পক্ষে সমর্থন রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের। উত্তর কোরিয়ার কিম তাকে পছন্দ করেন না। কিম এর পছন্দ ডেমোক্রেটিক পার্টির কেউ। এরই মধ্যে আদালতের গ্রেফতারি পরওয়ানা প্রেসিডেন্ট ইউন এর বিরুদ্ধে। ইউন হচ্ছে পিপল পাওয়ার পার্টির নেতা। আন্দোলনে রয়েছে ডেমোক্রেটরা। ফলে অশান্তি শুরু। সামরিক বাহিনী চুপ মেরে আছে। কারন কোরিয়াতে সামরিক বাহিনীর প্রধান খোদ প্রেসিডেন্ট। সবার প্রশ্ন এখন, কোরিয়ার পরিস্থিতি যাচ্ছে কোন পথে?

দক্ষিণ কোরিয়ার সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি অত্যন্ত অস্থির ও জটিল। গত ৩ ডিসেম্বর ২০২৪-এ প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওল আকস্মিকভাবে সামরিক আইন জারি করেন, যা দেশের জনগণকে বিস্মিত করে। তিনি ‘রাষ্ট্রবিরোধী শক্তি’এবং উত্তর কোরিয়ার হুমকির কথা উল্লেখ করে এই সিদ্ধান্ত নেন। সামরিক আইন জারির পরপরই পার্লামেন্টে প্রেসিডেন্টের অভিশংসনের প্রস্তাব আনা হয় এবং ১৪ ডিসেম্বর তিনি অভিশংসিত হন। এরপর প্রধানমন্ত্রী হান ডাক-সু ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেন। কিন্তু কিছুদিনের মধ্যেই তাকেও অভিশংসনের মুখোমুখি হতে হয়,যা দেশের রাজনৈতিক সংকটকে আরও গভীর করে তোলে। বর্তমানে, অর্থমন্ত্রী চোই সাং-মোক ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি দেশকে স্থিতিশীল করতে সম্ভাব্য সবকিছু করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

এরই মধ্যে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওলের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। এর ফলে তৈরি হয়েছে রাজনৈতিক অস্থিরতা। দেশের অভ্যন্তরীণ স্থিতিশীলতা ও আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ওপর পড়েছে নেতিবাচক প্রভাব। জাপানসহ বিভিন্ন দেশ এই পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। উত্তর কোরিয়া এ অস্থিরতায় বসে নেই। দক্ষিণ কোরিয়ার বিরুদ্ধে সব সময় লেগে থাকা উত্তর কোরিয়াও নানাভাবে তৈরি করছে সমস্যা। ফলে নেতুন বছরের শুরুতে গণতান্ত্রিক এ দেশ এখন বিশাল সমস্যার মুখোমুখি। দক্ষিণ কোরিয়ার জনগণ ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এই সংকটের সমাধানের জন্য অপেক্ষা করছে।

দক্ষিণ কোরিয়ার বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, এটি মূলত রাজনৈতিক অস্থিরতা্ এর মূলে রয়েছে ক্ষমতার অপব্যবহার এবং গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানের প্রতি জনগণের আস্থা কমে যাওয়া।  দক্ষিণ কোরিয়ার রাজনৈতিক ব্যবস্থায় প্রেসিডেন্টের হাতে ব্যাপক ক্ষমতা থাকে। প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওলের সামরিক আইন জারির সিদ্ধান্তটি ক্ষমতার অপব্যবহার হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। এটি তার প্রশাসনের প্রতি জনগণের আস্থাকে গুরুতরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। সামরিক আইন জারি করা মানেই জনগণের মৌলিক অধিকার হরণ করা। দক্ষিণ কোরিয়ার মতো একটি উন্নত গণতান্ত্রিক দেশে এই ধরনের পদক্ষেপ জনগণ এবং রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য অস্বস্তিকর। এটি দেশটির গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে দুর্বল করে দিতে পারে। উত্তর কোরিয়ার হুমকিকে হাতিয়ার করে দক্ষিণ কোরিয়ার বিভিন্ন সরকার অতীতে নিজেদের ক্ষমতা সুসংহত করেছে। বর্তমান পরিস্থিতিতেও প্রেসিডেন্ট ইউন সেই কৌশল ব্যবহার করেছেন,যা জনমনে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া তৈরি করেছে। দক্ষিণ কোরিয়ার রাজনীতিতে দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহার বারবার উঠে এসেছে। এ কারণে জনগণের মধ্যে রাজনৈতিক নেতৃত্বের প্রতি আস্থা কমে গেছে। এই সংকট তারই প্রতিফলন। বিরোধী দলগুলো এই পরিস্থিতিকে নিজেদের রাজনৈতিক সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা করছে। এতে রাজনৈতিক মেরুকরণ বেড়েছে এবং সংকট আরও গভীর হয়েছে। বলা হচ্ছে,যদি এই সংকট দ্রুত সমাধান না হয়, তবে এটি দক্ষিণ কোরিয়ার অভ্যন্তরীণ স্থিতিশীলতা এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কের উপর দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব ফেলতে পারে। এর ফলে দেশটির অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিও বাধাগ্রস্ত হতে পারে।দক্ষিণ কোরিয়ার বন্ধু রাষ্ট্রগুলো,বিশেষত যুক্তরাষ্ট্র এবং জাপান এই সংকট নিরসনের জন্য চেষ্টা চালাচ্ছে বলে জানা গেছে।

দক্ষিণ কোরিয়ার রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সাধারণত দুটি প্রধান ধারা বিদ্যমান, রক্ষণশীল এবং উদারপন্থী বা প্রগতিশীল।  এর বাইরে কিছু ছোট দল রয়েছে। তবে রাজনীতির মূল মঞ্চে এই দুটি ধারাই প্রাধান্য পায়। দক্ষিণ কোরিয়ার প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে রয়েছে,পিপল পাওয়ার পার্টি (People Power Party – PPP), রাজনৈতিক ধারায় এরা রক্ষণশীল প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওল এই দলের নেতা। এই দলটি সাধারণত ব্যবসাবান্ধব নীতি,জাতীয় নিরাপত্তা এবং যুক্তরাষ্ট্রের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রেখে চলে। ডেমোক্রেটিক পার্টি (Democratic Party – DP। রাজনৈতিক ধারায় এরা উদারপন্থী বা প্রগতিশীল

বর্তমানে প্রধান বিরোধী দল হিসেবে আছে। এই দলটি সাধারণত কল্যাণমুখী নীতি, উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে শান্তিপূর্ণ সম্পর্ক এবং সামাজিক ন্যায়বিচারের পক্ষে কাজ করে থাকে এই দলের সাবেক প্রেসিডেন্ট ছিলেন মুন জে-ইন। জাস্টিস পার্টি (Justice Party) রয়েছে, যাদের রাজনৈতিক ধারা প্রগতিশীল। এটি একটি ছোট দল। তবে শ্রমিক অধিকার এবং পরিবেশবাদী নীতির পক্ষে কথা বলে। ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি পার্টি এবং অন্যান্য ছোট দল ছোট দলগুলো নির্বাচনে তুলনামূলক কম প্রভাব রাখলেও জোট গঠনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। পিপল পাওয়ার পার্টি এখন ক্ষমতায়। প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওলের নেতৃত্বে। এর আগে ডেমোক্রেটিক পার্টি দীর্ঘ পাঁচ বছর ক্ষমতায় ছিল মুন জে-ইনের নেতৃত্বে। দক্ষিণ কোরিয়ার রাজনীতিতে ক্ষমতার এই রদবদল সাধারণত জনগণের নীতি এবং নেতৃত্বের প্রতি আস্থার ভিত্তিতে ঘটে। অতীতে দুর্নীতি এবং অর্থনৈতিক সংকট ক্ষমতাসীন দলগুলোর জনপ্রিয়তায় বড় ধরনের প্রভাব ফেলেছে। তারপরও দক্ষিণ কোরিয়ার নানা পালাবদলেও যে দেশটির নাম এমনিতেই চলে আসে সেটি হলো উত্তর কোরিয়া। পাশাপাশি দেশ হিসেবে সম্পর্ক সাপে-নেউলের মতোন।

আসলে উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে দক্ষিণ কোরিয়ার রাজনৈতিক দলগুলোর সম্পর্ক এবং প্রভাব একাধিক ভিন্ন মাত্রায় দেখা যায়। দক্ষিণ কোরিয়ার দলগুলোর মধ্যে কিছু দল উত্তর কোরিয়ার প্রতি আরও সমঝোতাপূর্ণ নীতি গ্রহণ করে, আবার কিছু দল কঠোর মনোভাব পোষণ করে। ডেমোক্রেটিক পার্টির শাসনামলে উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে শান্তি আলোচনার গতি বেড়ে যায়। মুন জে-ইন (Moon Jae-in) প্রশাসনের সময়ে আন্তঃকোরীয় সম্মেলন এবং শান্তিচুক্তির আলোচনা হয়েছিল।

এই দলের প্রতি উত্তর কোরিয়া তুলনামূলক ইতিবাচক মনোভাব পোষণ করে। তবে এটি সরাসরি “প্রভাব” নয়, বরং কৌশলগত স্বার্থ। অপরদিকে পিপল পাওয়ার পার্টির প্রকৃতি ও নীতি হচ্ছে কঠোর মনোভাবের। এই দলটি উত্তর কোরিয়ার বিরুদ্ধে কঠোর মনোভাব পোষণ করে। পারমাণবিক অস্ত্র এবং ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নেয়। উত্তর কোরিয়াও সাধারণত এই দলটির কঠোর নীতির সমালোচনা করে। তারা এই দলকে যুক্তরাষ্ট্রের “অন্ধ অনুসারী” হিসেবে আখ্যায়িত করে। এই দলের প্রতি উত্তর কোরিয়ার নেতিবাচক মনোভাব সবসময়ই থাকে। দক্ষিণ কোরিয়ার রাজনীতিতে উত্তর কোরিয়ার প্রভাব সরাসরি নয়,বরং আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক পরিবেশের মাধ্যমে। তবে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের প্রভাব রয়েছে নজরে পড়ার মতো। দক্ষিণ কোরিয়ার দলগুলোর নীতিতে যুক্তরাষ্ট্র বা চীনের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। চীনের মাধ্যমে উত্তর কোরিয়ার কিছু প্রভাবও ছড়িয়ে পড়ে দক্ষিণ কোরিয়ায়।

উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে যোগাযোগ রয়েছে। তবে এটি মূলত সীমিত এবং অস্থায়ী। দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক ঐতিহাসিকভাবে সংঘাতপূর্ণ হলেও কিছু ক্ষেত্রে তারা যোগাযোগের উদ্যোগ নেয়। উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক বাহিনীর মধ্যে সরাসরি যোগাযোগের জন্য একটি মিলিটারি হটলাইন রয়েছে। এই হটলাইনের মাধ্যমে সামরিক উত্তেজনা এড়ানো বা সীমান্তে ঘটনার সমাধানে আলাপ করা হয়। এই হটলাইন অনেক সময় উত্তর কোরিয়ার তরফ থেকে অকার্যকর করা হয়। তবে দক্ষিণ কোরিয়ার পক্ষ থেকে এটি চালু রাখার চেষ্টা করা হয়। এটি মূলত সামরিক সংঘাত এড়ানোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে আরও একটি হটলাইন রয়েছে, যা আন্তঃকোরীয় হটলাইন হিসেবে দেখা হয়। কূটনৈতিক এবং বেসামরিক আলোচনার জন্য এটি ব্যবহৃত হয়। এই হটলাইনের মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে শীর্ষ পর্যায়ের আলোচনা বা কূটনৈতিক বার্তা বিনিময় করা হয়। উত্তেজনার সময়ে উত্তর কোরিয়া প্রায়ই এই হটলাইন বন্ধ করে দেয়।

দক্ষিণ কোরিয়া একটি গণতান্ত্রিক দেশ। এটি একটি প্রজাতন্ত্র হিসেবে পরিচালিত হয়, যেখানে জনগণ সরাসরি নির্বাচনের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি এবং সংসদ সদস্যদের নির্বাচিত করে। দক্ষিণ কোরিয়া একটি গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র ,যেখানে রাষ্ট্রপতি প্রধান নির্বাহী এবং প্রধান সেনাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

এটি একটি সংবিধানিক শাসনব্যবস্থার অধীনে পরিচালিত হয়। বর্তমান সংবিধান ১৯৮৭ সালে প্রণয়ন করা হয়, যা দেশটির গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের ভিত্তি। জনগণ প্রত্যক্ষ ভোটের মাধ্যমে পাঁচ বছরের জন্য রাষ্ট্রপতি নির্বাচন করে। এক ব্যক্তি একবারই রাষ্ট্রপতি হতে পারেন। জাতীয় পরিষদ এটি দেশের আইনসভা। এতে সদস্যরা প্রত্যক্ষ এবং অনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের মাধ্যমে নির্বাচিত হন। দক্ষিণ কোরিয়ায় একটি স্বাধীন বিচার ব্যবস্থা রয়েছে। সংবিধানিক আদালত এবং সুপ্রিম কোর্ট গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করে।

দক্ষিণ কোরিয়ায় রাষ্ট্রপতি সরাসরি জনগণের ভোটে নির্বাচিত হন। এটি জনগণের ইচ্ছার সরাসরি প্রতিফলন ঘটায়। রাষ্ট্রপতির মেয়াদ পাঁচ বছর এবং পুনরায় নির্বাচিত হওয়ার সুযোগ নেই। রাষ্ট্রপতি বিচার বিভাগ নিয়ন্ত্রণ করেন না। বিচার বিভাগ সম্পূর্ণ স্বাধীন এবং সংবিধান অনুযায়ী কাজ করে। রাষ্ট্রপতি আইন প্রণয়নকারী জাতীয় পরিষদের সদস্য নন। আইনসভা এবং নির্বাহী বিভাগ সম্পূর্ণ আলাদা এবং স্বাধীনভাবে কাজ করে। রাষ্ট্রপতি মন্ত্রিপরিষদ গঠন করেন এবং মন্ত্রীরা রাষ্ট্রপতির কাছে জবাবদিহি করেন। তবে,সংসদের অনুমোদন ছাড়া রাষ্ট্রপতি প্রধান নীতি বা আইন পরিবর্তন করতে পারেন না। রাষ্ট্রপতি দেশের পররাষ্ট্রনীতি পরিচালনা করেন এবং সামরিক বাহিনী নিয়ন্ত্রণ করেন। দক্ষিণ কোরিয়ার বর্তমান সংবিধান ১৯৮৭ সালে প্রণয়ন করা হয়, যা রাষ্ট্রপতিশাসিত ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করেছে। রাষ্ট্রপতি প্রশাসনের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতি, সামরিক, এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কের সব বিষয় পরিচালিত হয়। রাষ্ট্রপতির হাতে বেশি ক্ষমতা থাকায় দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব। রাষ্ট্রপতির হাতে অতিরিক্ত ক্ষমতা থাকার ফলে স্বৈরতন্ত্রের ঝুঁকি তৈরি হয়েছে বলে অনেকে মনে করছেন।

ইউন সুক-ইওল তার মেয়াদকালে সামরিক আইন জারি করেছিলেন, যা ব্যাপক বিতর্কের জন্ম দেয়। এটি জনগণের মৌলিক অধিকার সীমিত করার অভিযোগে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়ে। তার শাসনামলে সরকারি তহবিলের অপব্যবহার এবং রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ দমনের অভিযোগ ওঠে। এ কারণে জাতীয় সংসদ তার বিরুদ্ধে অভিশংসন বিল পাস করে। অভিশংসনের পর একটি বিশেষ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়, যা তার বিরুদ্ধে যথেষ্ট প্রমাণ পায়। আদালত গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে কারণ তিনি সাক্ষ্য দিতে এবং তদন্তে সহযোগিতা করতে ব্যর্থ হন। সামরিক আইন ঘোষণার পেছনে তার যুক্তি ছিল “জাতীয় নিরাপত্তার সুরক্ষা।” তবে সমালোচকরা এটিকে গণতন্ত্র দমনের প্রচেষ্টা হিসেবে দেখেন। আদালতের নির্দেশ অনুসারে, ইউন সুক-ইওলকে যেকোনো সময় গ্রেপ্তার করা হতে পারে। তার সমর্থক ও বিরোধীদের মধ্যে সংঘর্ষের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। কারণ তার সমর্থকরা আদালতের সিদ্ধান্তকে “রাজনৈতিক প্রতিশোধ” বলে এরই মধ্যে অভিহিত করেছেন। ফলে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে অস্থিরতা বেড়ে চলেছে এবং জনগণের মধ্যে দেখা দিয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে।

দক্ষিণ কোরিয়ার সিউল কেন্দ্রীয় জেলা আদালতের জারি করা এ গ্রেফতারি পরওয়ানা দেশটিকে কোন দিকে নিয়ে যাবে এটাই এখন দেখার বিষয়।##

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.