-- বিজ্ঞাপন ---

২০২৫ সালের ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি র‍্যাঙ্কিং-এ করুন হাল বাংলাদেশের!

পাকিস্তানের ৪৭টি বিশ্ববিদ্যালয় স্থান পেয়েছে

বিশেষ প্রতিনিধি#

‘শিক্ষাই জাতীর মেরুদন্ড’ বাংলাদেশের জন্য এ প্রবাদটি এখন কাগজে কলমে সীমাবদ্ধ। শিক্ষার যে হাল চলছে তাতে জাতির মেরুদন্ড ভবিষ্যতে খুজেঁ পাওয়া যাবে কিনা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। ২০২৫ সালের টাইমস হায়ার এডুকেশন (THE) ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি র‍্যাঙ্কিং-এ কোথাও নাই বললে চলে বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। শিক্ষা ব্যবস্থার অবস্থা প্রতিটি ক্ষেত্রে অবনতির দিকে। আশেপাশের দেশগুলোর অবস্থা দেখে বাংলাদেশের শিক্সা ব্যবস্থার অবস্থা দেখলে লজ্জাই পেতে হবে। এ অবস্থা অব্যাহত থাকলেও দেশে উচ্চ শিক্ষার মান কোথায় গিয়ে দাড়াবে তা নিয়ে সংশয় বাড়ছে। আমরা সবকিছুতে পাকিস্তানকে পেছনে ফেলছি এমনতর অহমিকা প্রায়শঃ প্রকাশ করি। অথচ  পাকিস্তানের মোট ৪৭টি বিশ্ববিদ্যালয় ২০২৫ সালের টাইমস হায়ার এডুকেশন (THE) ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি র‍্যাঙ্কিং-এ স্থান পেয়েছে।

অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি ধারাবাহিকভাবে নবমবারের মতো শীর্ষ স্থান ধরে রেখেছে। শিল্প সংশ্লিষ্টতা ও শিক্ষার ক্ষেত্রে উন্নতির কারণে এই স্থান অর্জন করেছে। এমআইটি দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে, স্ট্যানফোর্ড ষষ্ঠ স্থানে নেমে গেছে।

চীন তাদের বৈশ্বিক গবেষণার প্রভাব বাড়িয়ে শীর্ষ ১০-এর দিকে অগ্রসর হচ্ছে। অন্যদিকে, অস্ট্রেলিয়ার শীর্ষ পাঁচটি বিশ্ববিদ্যালয় র‍্যাঙ্কিংয়ে পিছিয়েছে। ব্রাজিল, সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত প্রথমবারের মতো শীর্ষ ২০০-এ স্থান করে নিয়েছে।

টাইমস হায়ার এডুকেশন (THE) এর ‘ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি সাবজেক্ট র‌্যাঙ্কিং ২০২৫’-এ বাংলাদেশের ছয়টি বিশ্ববিদ্যালয় আটটি ভিন্ন বিষয়ে স্থান পেয়েছে। ভারতের ২২টি বিশ্ববিদ্যালয় শীর্ষ ৮০০-র মধ্যে স্থান পেয়েছে।

র‍্যাঙ্কিংটি WUR 3.0 পদ্ধতি অনুযায়ী করা হয়েছে, যেখানে শিক্ষাদান, গবেষণা পরিবেশ, গবেষণার মান, শিল্প সংশ্লিষ্টতা এবং আন্তর্জাতিক দৃষ্টিভঙ্গির মতো ৫টি প্রধান ক্ষেত্রে ১৮টি সূচক ব্যবহার করা হয়েছে। এবছর ২,০৯২টি বিশ্ববিদ্যালয় র‍্যাঙ্কিংয়ে স্থান পেয়েছে এবং ১৮৫টি নতুন প্রতিষ্ঠান তালিকায় যোগ হয়েছে।

পাকিস্তানের কায়েদ-ই-আজম বিশ্ববিদ্যালয়, ইসলামাবাদ র‍্যাঙ্কিংয়ে ৪০১ থেকে ৫০০ অবস্থানের মধ্যে রয়েছে। এরপর আরও কয়েকটি প্রতিষ্ঠান ৬০১ থেকে ৮০০ অবস্থানের মধ্যে রয়েছে।

এয়ার ইউনিভার্সিটি ইসলামাবাদ
ক্যাপিটাল ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি
কমসাটস ইউনিভার্সিটি ইসলামাবাদ
গভর্নমেন্ট কলেজ ইউনিভার্সিটি ফয়সালাবাদ
ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্সেস অ্যান্ড টেকনোলজি ইসলামাবাদ
সুক্কুর আইবিএ ইউনিভার্সিটি
ইউনিভার্সিটি অব ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি, ট্যাক্সিলা
ইউনিভার্সিটি অব মালাকান্ড, দির লোয়ার।
৮০১ থেকে ১০০০ অবস্থানের মধ্যে রয়েছে:

আবদুল ওয়ালী খান ইউনিভার্সিটি মারদান
আন্তর্জাতিক ইসলামিক ইউনিভার্সিটি ইসলামাবাদ
খাজা ফারিদ ইউনিভার্সিটি অব ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড ইনফরমেশন টেকনোলজি, রাহিম ইয়ার খান
লাহোর ইউনিভার্সিটি অব ম্যানেজমেন্ট সায়েন্সেস
পিএমএএস আরিড এগ্রিকালচার ইউনিভার্সিটি, রাওয়ালপিন্ডি
ইসলামিয়া ইউনিভার্সিটি, বাহাওয়ালপুর
ইউনিভার্সিটি অব সেন্ট্রাল পাঞ্জাব, লাহোর
ইউনিভার্সিটি অব ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি, পেশোয়ার
ইউনিভার্সিটি অব গুজরাট
ইউনিভার্সিটি অব লাহোর
ইউনিভার্সিটি অব ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড টেকনোলজি, লাহোর
ইউনিভার্সিটি অব পাঞ্জাব, লাহোর
ইউনিভার্সিটি অব ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিমাল সায়েন্সেস, লাহোর।
১২টি বিশ্ববিদ্যালয় ১০০১ থেকে ১২০০ অবস্থানের মধ্যে, ৮টি ১২০১ থেকে ১৫০০ অবস্থানে, এবং ৫টি ১৫০১-এর ঊর্ধ্বে স্থান পেয়েছে। আরও ৪৮টি বিশ্ববিদ্যালয় “রিপোর্টার্স” তালিকায় রয়েছে, যারা প্রয়োজনীয় তথ্য প্রদান করলেও র‍্যাঙ্কিংয়ের জন্য যোগ্যতা অর্জন করতে পারেনি।

টাইমস হায়ার এডুকেশন (THE) ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি র‍্যাঙ্কিং ২০২৫-এ বাংলাদেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয় উল্লেখযোগ্য অবস্থান অর্জন করতে পারেনি। সাধারণত, বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এই র‍্যাঙ্কিংয়ে “রিপোর্টার্স” ক্যাটাগরিতে অবস্থান করে বা নিম্ন র‍্যাঙ্কিংয়ে থাকে। যা বিষয়ভিত্তিক বলে পরিচিত।

বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর র‌্যাঙ্কিং:

বিজনেস অ্যান্ড ইকোনমিকস:

নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি: ৫০১-৬০০তম স্থান।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়: ৬০১-৮০০তম স্থান।
কম্পিউটার সায়েন্স:

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়: ৪০১-৫০০তম স্থান।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট): ৬০১-৮০০তম স্থান।
এডুকেশন স্টাডিজ:

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়: ৪০১-৫০০তম স্থান।
ইঞ্জিনিয়ারিং:

বুয়েট: ৪০১-৫০০তম স্থান।
ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি: ৬০১-৮০০তম স্থান।
লাইফ সায়েন্স:

শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়: ৫০১-৬০০তম স্থান।
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়: ৬০১-৮০০তম স্থান।
মেডিকেল অ্যান্ড হেলথ:

ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি: ৩০১-৪০০তম স্থান।
নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটি: ৪০১-৫০০তম স্থান।
ফিজিক্যাল সায়েন্স:

বুয়েট: ৬০১-৮০০তম স্থান।
চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ও একই অবস্থানে রয়েছে।
সোশ্যাল সায়েন্স:

ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি: ৬০১-৮০০তম স্থান।
এই র‌্যাঙ্কিংগুলো বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষার মান, গবেষণা পরিবেশ, গবেষণার উৎকর্ষতা, শিল্পের সাথে সংযোগ এবং আন্তর্জাতিক দৃষ্টিভঙ্গি ইত্যাদি সূচকের উপর ভিত্তি করে নির্ধারণ করা হয়েছে।
টাইমস হায়ার এডুকেশন (THE) ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটি র‌্যাঙ্কিং ২০২৫-এ ভারতের ২২টি বিশ্ববিদ্যালয় শীর্ষ ৮০০-র মধ্যে স্থান পেয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য প্রতিষ্ঠানগুলো হলো:

ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স (IISc), বেঙ্গালুরু: ২০১-৩০০ র‌্যাঙ্কের মধ্যে।

আন্না ইউনিভার্সিটি

মহাত্মা গান্ধী ইউনিভার্সিটি

জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া

আলিগড় মুসলিম ইউনিভার্সিটি

বেনারস হিন্দু ইউনিভার্সিটি

এই সাফল্য ভারতের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মানোন্নয়ন ও বৈশ্বিক স্বীকৃতির প্রতিফলন

বাংলাদেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয় শীর্ষ ৮০০-র মধ্যে স্থান পায়নি। প্রশ্ন হলো দিনের পর দিন কোথায় গিয়ে দাড়াচ্ছে আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থার হাল।##

মন্তব্যসমূহ বন্ধ করা হয়.