এন.এইচ নিরব :
তথ্যপ্রযুক্তি ও ইন্টারনেট ব্যবহার করে সংঘটিত অপরাধ বা সাইবার ক্রাইম বেড়ে চলেছে। একই সঙ্গে বাড়ছে সংশ্লিষ্ট অভিযাগ এবং মামলা। পুলিশ ও সিআইডি সূত্রে জানা যায়, টুইটার, ইউটিউব, ফেসবুকের মতো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলো অপব্যবহারের মাধ্যমে চালানো হচ্ছে সাইবার-সন্ত্রাস, প্রতারণা ও জঙ্গিবাদ। বিশেষ করে ফেসবুকে নারীদের নামে জাল আইডি খুলে প্রতারণা চলছে। এতে অনেকেই আত্মহননের পথে পা বাড়াচ্ছে। কারও কারও জীবনে দাম্পত্য কলহের কারণ প্রযুক্তি-সন্ত্রাস। এ ছাড়া মিথ্যা তথ্য দিয়ে ফেসবুক অ্যাকাউন্ট খুলে চলছে প্রতারণা। এমনকি প্রেমের ফাঁদে ফেলে দেখা করার কথা বলে গণধর্ষণের ঘটনাও ঘটছে। হ্যাকিং, ক্রেডিট কার্ড জালিয়াতি, ই-মেইলের মাধ্যমে প্রতারণা, ওয়েবসাইট হ্যাকিংয়ের মতো ঘটনাও ঘটছে অহরহ। এ ছাড়া দেশি ও আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদের অন্যতম হাতিয়ার ইন্টারনেট।
সংশ্লিষ্ট সংবাদ
সূত্রমতে, সাইবার অপরাধের বিষয়ে থানা পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিভিন্ন ইউনিটে প্রতি মাসে হাজারখানেক অভিযোগ জমা পড়ছে। আর অভিযোগ বেশি হওয়ায় তদন্ত করতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো। তা ছাড়া সক্ষমতার অভাবে তদন্তকারীরা প্রযুক্তিনির্ভর ওসব অপরাধের পর্যাপ্ত প্রমাণও অনেক ক্ষেত্রে হাজির করতে পারছে না। ফলে পার পেয়ে যাচ্ছে অপরাধীরা। সাইবার ট্রাইব্যুনালে ৬০ শতাংশের বেশি মামলায় অভিযোগ প্রমাণ করতে না পারায় আসামিরা খালাস পেয়েছে। সাইবার অপরাধের বেশির ভাগ অভিযোগেরই শিকার নারীরা। আর ওসব অপরাধের বিচার হয় ঢাকায় একটি মাত্র ট্রাইব্যুনালে। সাইবার ট্রাইব্যুনাল ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়। সাইবার অপরাধ রোধ করতে নানা উদ্যোগ নিচ্ছে সরকার। এরই অংশ হিসেবে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) জন্য স্থাপন হয়েছে শতকোটি টাকা মূল্যের অত্যাধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর দুটি সাইবার ল্যাব। এ ছাড়া সাইবার পুলিশ ব্যুরো (সিপিবি) নামের একটি ইউনিটও গঠন করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী একাধিক সংস্থা সূত্রে জানা যায়, ২০১৫ সালে সাইবার অপরাধের অভিযোগ জমা পড়েছিল আট হাজারের মতো। ২০১৬ সালে সেই সংখ্যা ১০ হাজারে উন্নীত হয়। আর চলতি বছরের গত তিন মাসে প্রায় তিন হাজার অভিযোগ জমা পড়েছে।