ডেস্ক রিপোর্ট: চট্টগ্রাম-৮ আসনের উপ-নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী মোছলেম উদ্দিন আহমদকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়েছে। তিনি প্রতিপক্ষ বিএনপি প্রার্থী মো. আবু সুফিয়ান এর চেয়ে প্রায় ৭০ হাজার ভোটে জয় পেয়েছেন। ধানের শীষসহ অংশগ্রহণকারী প্রার্থীদের এজেন্টকে কেন্দ্রে ঢুকতে না দেয়াসহ নানা অভিযোগের মধ্যে দিয়ে শেষ হয় চট্টগ্রাম-৮ আসনের উপ-নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। প্রথমবারের মতো সম্পূর্ণ ইভিএম পদ্ধতিতে অনুষ্ঠিত হওয়া এই কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ চলে বিরতিহীনভাবে বিকেল ৫টা পর্যন্ত।
সোমবার (১৩ জানুয়ারী) নগরীর এম এ আজিজ স্টেডিয়ামের জিমনেসিয়ামে কন্ট্রোল রুম থেকে আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা ও রিটার্নিং অফিসার মোহাম্মদ হাসানুজ্জামান বেসরকারিভাবে বিজয়ী ঘোষণা করেন। এতে আওয়ামী লীগের মোছলেম উদ্দীন আহমেদ নৌকা প্রতীক নিয়ে ৮৭ হাজার ২৪৬ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন।
তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির প্রার্থী মো. আবু সুফিয়ান ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে পেয়েছেন ১৭ হাজার ৯৩৫ ভোট। অন্য প্রার্থীদের মধ্যে বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট (বিএনএফ) চেয়ারম্যান এস এম আবুল কালাম আজাদ টেলিভিশন প্রতীক নিয়ে ১ হাজার ১৮৫ ভোট, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের সৈয়দ মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন চেয়ার প্রতীক নিয়ে ৯৯২ ভোট, ন্যাপের বাপন দাশগুপ্ত কুঁড়েঘর প্রতীক নিয়ে ৬৫৬ ভোট এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ এমদাদুল হক আপেল প্রতীক নিয়ে ৫৬৭ ভোট পেয়েছেন।
এবারের উপ-নির্বাচনে মোট ১৭০টি কেন্দ্রে চার লাখ ৭৪ হাজার ৪৮৫ ভোটার ছিলেন। তবে সোমবার (১৩ জানুয়ারি) সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত সময়ে ভোট প্রদান করেন ১ লাখ ৮ হাজার ৫৮১ ভোটার। যা মোট ভোটের ২২ দশমিক ৯৪ শতাংশ বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
ইভিএম-এ কারচুপির অভিযোগ এনেছেন বিএনপি প্রার্থী আবু সুফিয়ান
ভোটগ্রহণে নানা অনিয়মের অভিযোগ তুলে নির্বাচন কমিশনের কাছে পুনঃনির্বাচনের আবেদন করলেও শেষপর্যন্ত ভোটের মাঠেই থাকলেন বিএনপি প্রার্থী আবু সুফিয়ান। তিনি বলেন, শেষ পর্যন্ত ভোটে থেকে ইভিএমে কীভাবে কারচুপি করা হচ্ছে তা পর্যবেক্ষণ করতে চাই।
সোমবার (১৩ জানুয়ারি) বিকেল সোয়া তিনটায় নগরীর নাসিমন ভবনের দলীয় কার্যালয়ে বিএনপি নেতাদের নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন আবু সুফিয়ান। চট্টগ্রাম-৮ আসনের উপ-নির্বাচনে বিএনপির এই প্রার্থী সংবাদ সম্মেলনে বলেন, শেষ পর্যন্ত ভোটে থেকে ইভিএমে কীভাবে কারচুপি করা হচ্ছে তা পর্যবেক্ষণ করতে চাই।
ধানের শীষ প্রতীক প্রার্থী আবু সুফিয়ান বলেন, ‘এই অথর্ব নির্বাচন কমিশনের অধীনে মানুষের ভোটাধিকার নিশ্চিত হবে না। এই নির্বাচন প্রমাণ করেছে নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া ভোটাধিকার আদায় করা যাবে না।’
এর আগে, দুপুর সোয়া একটায় প্রথমে সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, অনিয়মের জন্য ভোটগ্রহণ স্থগিত করে রিটার্নিং অফিসারের কাছে পুনঃনির্বাচন চেয়েছেন তিনি। বিকেলের সংবাদ সম্মেলনেও সুফিয়ান একই দাবি করে বলেন, ‘নির্বাচন স্থগিত করে পুনরায় নির্বাচন দাবি করছি। তবে এখন নির্বাচন বর্জন করছি না।’
তিনি আরও বলেন, ‘ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে নির্বাচনে। কেন্দ্র থেকে ধানের শীষের এজেন্টদের বের করে দেওয়া হয়েছে। নৌকার সমর্থকদের হামলায় ৫০ জন আহত হয়েছে।’
এ সময় নগর বিএনপির সভাপতি শাহাদাত হোসেন, সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম, বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর বহমান উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, ঐ আসনের সাংসদ জাসদ নেতা মঈন উদ্দিন খান বাদল গত ৭ নভেম্বর ভারতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করলে চট্টগ্রাম-৮ আসনটি শূন্য হয়। এবং এই আসনে উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। নির্বাচনে ৬ জন প্রার্থী থাকলেও মূল প্রতিদ্বন্দ্বীতা হয়েছে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোছলেম উদ্দিন আহমদ এবং বিএনপির প্রার্থী আবু সুফিয়ানের মধ্যে।
## শহীদ, ১৩.০১.২০২০ ইং।