আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
কুয়েতের আমির শেখ সাবাহ আল-আহমেদ আল-সাবাহ ৯১ বছর বয়সে মারা গেছেন। এরপরই দেশটির মন্ত্রিসভা তার সৎভাই ৮৩ বছর বয়স্ক শেখ নওয়াফ আল আহমেদকে নতুন আমির বলে ঘোষণা করা হয়েছে।
শেখ সাবাহ আল-আহমেদ আল-সাবাহ জুলাই মাসে অসুস্থ হয়ে পড়ার পর তাকে চিকিৎসার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। বিবিসি জানিয়েছে তার অসুস্থতা কী ছিল তা প্রকাশ করা হয়নি।
তার মৃত্যুতে জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস, জর্ডানের বাদশা আবদুল্লাহ, ও আবুধাবির যুবরাজ শেখ মোহাম্মদ বিন জায়েদ আল নাহিয়ানের মতো নেতারা শোক প্রকাশ করেছেন।
শেখ সাবাহ আল-আহমেদ আল-সাবাহ ২০০৬ সাল থেকে কুয়েতের আমির ছিলেন, এবং তার আগে ৫০ বছর ধরে দেশটির পররাষ্ট্রনীতির তত্বাবধান করেছেন। আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা বিবিসি জানায়, মধ্যপ্রাচ্যের কূটনীতির ক্ষেত্রে তার সক্রিয় ভূমিকার কারণে তাকে ‘ডীন অব আরব ডিপ্লোম্যাসি’ বলা হতো।
মধ্যপ্রাচ্যে পশ্চিমা বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ মিত্র কুয়েত
বিবিসির বিশ্লেষক ফ্র্যাংক গার্ডনার বলছেন, কুয়েত দীর্ঘদিন ধরে পশ্চিমা বিশ্বের একটি মিত্র দেশ। তেলসমৃদ্ধ এই দেশটি নিরাপত্তার জন্য পশ্চিমের ওপর নির্ভরশীল এবং বড় প্রতিবেশী ইরাকের হাত থেকে দেশটিকে রক্ষার জন্য ব্রিটেন ১৯৬১ সালে সৈন্য পাঠিয়েছিল। এর পর ১৯৯১ সালে ইরাক কুয়েত দখল করে নেবার পর মার্কিন-নেতৃত্বাধীন বাহিনী ‘অপারেশন ডেজার্ট স্টর্ম’ নামে সেনা অভিযান চালিয়ে সাদ্দাম হোসেনের বাহিনীকে হটিয়ে দেয়।
যদিও দেশটি দীর্ঘদিন ধরেই আল-সাবাহ পরিবারের বয়স্ক শাসকদের দ্বারা পরিচালিত হয়ে আসছে, কিন্তু আরব বিশ্বের অন্য অনেক দেশের তুলনায় কুয়েতে রাজনীতি অনেক প্রাণবন্ত। এখানে নির্বাচিত এমপিরা অবাধে সাবাহ পরিবারের সমালোচনা করতে পারেন, সরকারের মন্ত্রীদের জবাবদিহি করতে পারেন, এবং এ কারণে কখনো কখনো রাজনীতিতে অচলাবস্থাও সৃষ্টি হয়েছে। তবে সাবাহ পরিবার সরকার ও নির্বাহী বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ পদগুলোর ওপর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ ধরে রেখেছে, এবং রাজনৈতিক বিষয়ে আমিরের মতই শেষ কথা।
তাছাড়া পার্লামেন্ট ভেঙে দেয়া ও নির্বাচন দেবার ক্ষমতাও রয়েছে আমিরের হাতে। কুয়েতের শাসকরা ধর্মীয় রক্ষণশীলতার মোকাবিলা করে নারীদের ভোটাধিকার এবং রাজনৈতিক পদে আসীন হবার পক্ষেও দাঁড়িয়েছেন। কুয়েতকে সম্প্রতি মধ্যপ্রাচ্যের এমন একটি শক্তি হিসেবে দেখা হয় যারা মধ্যস্থতার মাধ্যমে পরিস্থিতি শান্ত করতে ভূমিকা রেখেছে। আর এ ক্ষেত্রে সহায়ক ভূমিকা রেখেছে প্রয়াত আমিরের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দীর্ঘ অভিজ্ঞতা।### ৩০.৯.২০