--- বিজ্ঞাপন ---

আসামের নির্বাচনে বদরুদ্দিন আজমলের ১৬ আসনে বিজয়

0

আসামে সরকার দলে কোনো মুসলিম এমএলএ বা বিধায়ক না থাকলেও বিরোধীদের আছে ৩১ জন। ১৯৮৩ সালের পর (ওইবার মুসলিম ছিল ৩৩ জন) এবারই রাজ্য বিধানসভায় সর্বাধিক সংখ্যক মুসলিম প্রবেশ করছেন।

মহাজোট থেকে নির্বাচিত ৩১ জন মুসলিমের মধ্যে ১৬ জন হলেন কংগ্রেসের, ১৫ জন আজমলের এআইইউডিএফের। এআইইউডিএফ মাত্র ২০টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে এই সাফল্য পেয়েছে। তাদের সফলতার হার ৮০ ভাগ। আর কংগ্রেসের হয়ে ৯৫ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে সাফল্যের হার ৩০.৫২ ভাগ। ফলে বদরুদ্দিন আজমলের ভিত আরো মজবুত হলো এই নির্বাচনের মাধ্যমে। উল্লেখ্য, তিনি একইসাথে ব্যবসায়ী, রাজনীতিবি, লোকহিতৈষী ও আলেম। আতরের ব্যবসায় তার বেশ সুনাম রয়েছে।

কে এই বদরুদ্দিন আজমল
১৯৫০ সালে জন্মগ্রহণ করা আজমল তার দলটি প্রতিষ্ঠা করেন ২০০৫ সালে। বদরুদ্দিন আজমল জমিয়তে ওলামায়ে হিন্দের আসাম রাজ্যের সভাপতি এবং দারুল উলুম দেওবন্দের শুরা সদস্য। আজমল ভারতের লোকসভারও সদস্য।তিনি ধুবরি আসন থেকে তিনবারের এমপি। তিনি নিয়মিতভাবে বিশ্বের ৫০০ সবচেয়ে প্রভাবশালী মুসলিম ব্যক্তিত্বের তালিকায় স্থান পেয়ে থাকেন। আসামে আজমলের উত্থান আজ থেকে ৩০ বছর আগে । সেখানে জাতি ধর্ম বর্ণ বৈষম্য না করে অসহায় গরিব ছিন্নমূল মানুষের জন্য তিনি গড়ে তোলেন একের এক দাতব্য প্রতিষ্ঠান। গড়েন হাসপাতাল, মসজিদসহ অসংখ্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।
ছেলে মেয়ে উভয়ের জন্য আজমলের কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে অসমে যেমন শিক্ষার হার বাড়ছে একইভাবে কর্মসংস্থান হয়েছে অনেক। একজন রাজনীতিবিদ আজমলের থেকেও তিনি বেশি পরিচিত দাতা ও শিক্ষানুরাগী হিসেবে।
তার এসব কর্মকাণ্ডই তাকে আসামসহ গোটা ভারতের উদাহরণ দেয়ার মতো আইডলে পরিণত করে

সুনামধন্য ব্যবসায়ী ও সমাজসেবক বদরুদ্দিন আজমল ২০০৫ সালে ৫৫ বছর বয়সে রাজনীতিতে আসেন। ভারতীয় নির্বাচন কমিশনে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী তিনি ৮০ কোটি রুপির মালিক। স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা, নারী শিক্ষা, মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের ইংরেজি শিখানোসহ বিভিন্ন রকম সামাজিক কাজে তারা পারিবারিকভাবে অনেক আগে থেকে কাজ করে আসছিলেন। আসামের জনসংখ্যার ৩০% মুসলমান, যাদের ৬৫ শতাংশ বহ্মপুত্রের চরে বসবাস করে এবং যারা অর্থনৈতিকভাবে অন্যদের চেয়ে অনেক পিছিয়ে আছে । এই পিছিয়ে পরা জনগোষ্ঠীর জন্য বদরুদ্দিন আজমল এবং তার পরিবার সমাজসেবায় নিয়োজিত ছিলেন। তার রাজনীতিতে আগমনের এক বছর পরেই আসামের দীর্ঘদিন যাবত চলমান রাজনৈতিক চিত্র পাল্টে যায়। মুসলিম জনগোষ্ঠীর অধিকার তার রাজনীতির প্রধান উপাদান হলেও, তার জোটে অমুসলিমরাও কাজ করে। ২০০৬ সালে তার প্রথম নির্বাচনে ৭৩ প্রার্থীর মধ্য ৩৪ জন অমুসলিম ছিলন। তিনি মুসলিম ছাড়াও দলিত অমুসলিমদের কাছেও অনেক জনপ্রিয়।
দক্ষিন এশিয়ার রাজনৈতিক বিশ্লেষক আলতাব পারভেজের মতে ” নিজস্ব একটা ভোটব্যাংক থাকলেও একা লড়ে বিধানসভায় ১০-১৫ আসন এবং লোকসভায় ২-৩টি আসনের বেশি এই দলের পক্ষে জয়ী হওয়া সম্ভব নয়। তবে এই শক্তি নিয়ে আসামে অনেক সময় তারা সরকার গঠনে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। বিশেষ করে যখন কংগ্রেস, বিজেপি ও অসমীয়া প্রভাবিত দলের কেউ একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায় না”।

আপনার মতামত দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রচার করা হবে না.