পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পিটিআই চেয়ারম্যান ইমরান খানকে অযোগ্য ঘোষণা করেছে দেশটির নির্বাচন কমিশন (ইসিপি)। শুক্রবার (২০ অক্টোবর) তোষাখানা মামলায় তাকে দোষী সাব্যস্ত করে সর্বসম্মত রায় দিয়েছে ইসিপির পাঁচ সদস্যের একটি বেঞ্চ। এতে বলা হয়েছে, অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় ইমরান খান আগামী জাতীয় নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না ।
এদিন ইসলামাবাদে ইসিপি সচিবালয়ে রায় ঘোষণা করেন পাকিস্তানের প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) সিকান্দার সুলতান রাজা। রায়ে বলা হয়, ইমরান খান আর জাতীয় পরিষদের সদস্য নন এবং তার প্রতিক্রিয়া সঠিক ছিল না। এ কারণে দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত থাকায় জাতীয় পরিষদে তার আসনটি শূন্য ঘোষণা করা হয়েছে।
তবে নির্বাচন কমিশনের এ সিদ্ধান্ত তাৎক্ষণিক প্রত্যাখ্যান করেছে ইমরান খানের দল পিটিআই। দলটি বলেছে, কমিশনের এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ইসলামাবাদ হাইকোর্টে শিগগিরই আপিল করবে তারা। একই সঙ্গে দলের নেতাকর্মী ও সমর্থকদের রাজপথে নামার আহ্বান জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদন মতে, ইমরান খানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির এ মামলা হয় গত আগস্ট মাসে। মামলাটি দায়ের করেন ক্ষমতাসীন পাকিস্তান মুসলিম লীগ নওয়াজের (পিএমএল-এন) এক নেতা।
অভিযোগ, বিদেশি বিশিষ্ট ব্যক্তিদের দেয়া উপহারের মধ্য থেকে থেকে একটি মূল্যবান স্বর্ণের হার তিনি এক অলঙ্কার ব্যবসায়ীর কাছে বিক্রি করেছেন এবং তা তে প্রাপ্ত অর্থের অতি সামান্য অংশ রাষ্ট্রীয় কোষাগারে (তোষাখানা) জমা দিয়েছেন। আরও অভিযোগ, নির্বাচনে কমিশনের কাছে দেয়া আর্থিক হিসাবে এসব সম্পদ প্রকাশ করেননি তিনি।
এদিকে বিবিসি বলছে,পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান মনে করেন, দেশটিতে ২০২৩ সালের এপ্রিলে সরকার আগাম নির্বাচন দিতে বাধ্য হবে। তিনি আরও বলেছেন , ‘নতুন সামরিক প্রধানের’ সঙ্গে তার কোনও সম্পর্ক নেই।
বিবিসি উর্দুর সংবাদদাতা উসমান জাহিদ, ইমরান খানের একটি বিশেষ সাক্ষাত্কার নেয়ার সময় তার সামনে প্রশ্ন রাখেন যে তিনি দেশটির অর্থনৈতিক ও সার্বিক উন্নয়নের বিষয়ে সরকারের সাথে কথা বলতে প্রস্তুত কিনা? জবাবে ইমরান খান বলেন, এই সরকার কোন নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসেনি। বরং তারা নিলামের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসেছে।
তিনি অভিযোগ করেন, প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ সংসদ সদস্যদের কেনা-বেচার মাধ্যমে ক্ষমতায় এসেছেন। তিনি ২০-২৫ কোটি রূপি দিয়ে এমপিদের ভোট ক্রয় করেছিলেন বলে অভিযোগ করেন ইমরান খান।এক্ষেত্রে তৎকালীন সেনাপ্রধান জেনারেল বাজওয়া শাহবাজ শরীফকে সমর্থন জুগিয়েছেন বলে উল্লেখ করে মি. খান। মি. বাজওয়ার বিরুদ্ধে ১১০০ বিলিয়ন রূপি দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে – একথা উল্লেখ করে মি. খান বলেন, পাকিস্তানের অর্থনীতি ডুবে গেছে। তিনি বলেন, পাকিস্তান একটি চোরাবালিতে আটকা পড়েছে। এখান থেকে বেড়িয়ে আসার একমাত্র উপায় অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন।
অন্যথায় পাকিস্তানের পরিস্থিতি শ্রীলঙ্কার মতো হবে বলে তিনি সতর্ক করে দেন।#